আলমগীর কিবরিয়া কামরুল, শেরপুর : মনগড়া ভাড়া আদায়ের কারণে শেরপুরের সর্বত্র অটোরিক্সা যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ছে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও চালকদের হাতে যাত্রীদের লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা ঘটলেও যেন দেখার কেউ নেই। ফলে প্রয়োজনের তাগিদে অসহায়ত্বের মধ্য দিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে নিরীহ যাত্রী সাধারণকে।
জানা যায়, যান্ত্রিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ক্ষুদ্র জেলা শেরপুরেও প্রায় ৪ বছর পূর্বে শুরু হয় সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চলাচল। এর দেড়-দুই বছর পর থেকেই শুরু হয় ব্যাটারীচালিত অটোরিক্সার যাতায়াত। বর্তমানে জেলায় সিএনজিচালিত ও ব্যাটারীচালিত অটোরিক্সার সংখ্যা এতই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, এসব যানবাহনের আধিক্যে কেবল শহর নয়, আনাচে-কানাচেও রিক্সা চলাচল অনেকটা বন্ধই হয়ে গেছে। এর ফলে একদিকে যেমন রিক্সাচালকদের প্রায় ৬০/৭০ ভাগ বেকার হয়ে দিনমজুরী বা অন্য পেশায় ধাবিত হয়েছে, অন্যদিকে অটোরিক্সা চালকদের দাপট-দৌরাত্ম তুলনামূলকভাবে অনেকটাই বেড়ে গেছে। জেলায় যাতায়াতকারী বৈধ অটোরিক্সার মোট পরিসংখ্যান পাওয়া না গেলেও সে সংখ্যা অন্তত: ৪ হাজার ছাড়িয়ে যাবে এবং যেগুলোর বেশিরভাগেরই কোন লাইসেন্স বা সঠিক কাগজপত্র নাই। দুই কি.মি পর্যন্ত যাতায়াতের ক্ষেত্রে যেখানে ভাড়া ৫ টাকা হলেই চলত, সেক্ষেত্রে এখন বেশিরভাগ এলাকাতেই অটোরিক্সায় উঠে ৫শ গজ অতিক্রম করতেই যাত্রী সাধারণকে ভাড়া গুণতে হচ্ছে ন্যুনতম ১০ টাকায়। এমনই অবস্থায় জেলা সদরসহ অভ্যন্তরিণ অন্তত: ১শ সড়কে যাতায়াতকারী অটোরিক্সা চালকদের সাথে প্রায় প্রতিদিনই কোন না কোন এলাকায় যাত্রীদের বাগ-বিতন্ডা, ঝগড়াবিবাদের ঘটনা ঘটছে। এমনই ঘটনায় ফুসে উঠেছে শেরপুর-নালিতাবাড়ীসহ ওই অঞ্চলের অভ্যন্তরিণ সড়কে যাতায়াতকারী যাত্রীসাধারণ। তারা চালকদের অনিয়মতান্ত্রিক ভাড়া বৃদ্ধি এবং রূঢ় আচরণের প্রতিবাদে এলাকায় মাইক ফুকিয়ে পাকুরিয়া বাদাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সমাবেশ করেছেন। আর এ নিয়ে চালকরা নমনীয় না হয়ে বরং প্রতিবাদের কাউন্টারমূলক তৎপরতাসহ নানা ইস্যূ তৈরিতে ষড়যন্ত্র করছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে যেকোন সময় ওই এলাকাসহ জেলার কোথাও না কোথাও যাত্রীদের সাথে অটোচালকদের বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকা রয়েছে। এ ব্যাপারে নিরীহ যাত্রী সাধারণ জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।