ads

বুধবার , ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ | ৩০শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ৭৫ বছর বয়সেও বাড়–ন বিক্রি করে ফিরছেন বৃদ্ধ সলেমান মন্ডল

রফিকুল ইসলাম আধার , সম্পাদক
ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৪ ২:৩১ অপরাহ্ণ

Pic-1.মেহের আমজাদ, মেহেরপুর : মায়ের চিকিৎসার ভার ৫ ছেলে না নিলেও অসুস্থ স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ৭৫ বছর বয়সেও খড়ের বাড়ুন পাড়া-মহল্লায় বিক্রি করে বেড়াচ্ছেন বৃদ্ধ সলেমান মন্ডল। এরপরও স্বামীর ভাত বঞ্চিত মেয়ে ও মেয়ের ২ সন্তান চেপে বসেছে বৃদ্ধের ঘাড়ে। রুগ্ন সামাজিক ব্যবস্থায় মানবতাবিরোধী ঘটনাটি ঘটে চলেছে মেহেরপুর জেলা শহরের উপকণ্ঠ দীঘিরপাড়া গ্রামের বেলেগাড়ীপাড়ায়।

Shamol Bangla Ads

মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি ইউনিয়নের দীঘিরপাড়া গ্রামের বেলেগাড়ীপাড়ার মৃত আহমেদ আলী মন্ডলের ছেলে সলেমান মন্ডল। পেশায় তিনি ছিলেন একজন কৃষক। তার নিজের জমি ছিলোনা। তাই অন্যের জমি লীজ নিয়ে চাষ করতেন। সংসার জীবনে তার রয়েছে স্ত্রী এবং ৫ ছেলে ও ৫ মেয়ে। তার স্ত্রী রিজিয়া খাতুন (৬৫) পুঙ্গু। তার উপর চেপে বসেছে স্বামীর ভাত বঞ্চিত এক মেয়ে। মেয়ের সাথে আছে তার ২ ছেলে-মেয়ে। কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করা সলেমানের বর্তমানে কঠোর পরিশ্রম শরীরে সহ্য হয়না। তাই তিনি চাষবাস ছেড়ে দিয়েছেন। যে বুড়ো বয়সে বসে বসে তার ৫ ছেলের ভাত খাওয়ার কথা। আর নাতি-পুতিদের নিয়ে আনন্দ করার কথা। সেই বয়সে সুখ তার কপালে জুটেনি। নিজের জন্য নয় অসুস্থ স্ত্রী রিজিয়া খাতুনের চিকিৎসার জন্য গত ৫ বছর ধরে ভ্যানে করে নিজের হাতে তৈরি খড়ের বাড়–ন নিয়ে শহর ও গ্রামের পাড়া-মহল্লায় বিক্রি করে বেড়াচ্ছেন বৃদ্ধ সলেমান মন্ডল। প্রতিটি বাড়–নে তার লাভ আসে দেড় টাকা থেকে ২ টাকা।
চাপা ক্ষোভ আর এক বুক দুঃখ নিয়ে সলেমান মন্ডল বললেন, কপালে সুখ তার ধরা দেয়নি। বয়সকালে ৫ ছেলে ও ৫ মেয়ে মানুষ করতে অন্যের জমি লীজ নিয়ে চাষাবাদ করেছি। তাদের বড় করেছি। মনে হয়েছিলো ছেলেরা বড় হলে শেষ বয়সে বসে থেকে আমরা বুড়া-বুড়ি দু’বেলা দু’মুঠো ভাত খাবো। সে সুখ কপালে সইলনা তাদের। স্ত্রী রিজিয়া খাতুন অসুস্থ্য। ১০ বছর ধরে পুঙ্গু হয়ে পড়ে আছে। ছেলেরা মাকে চিকিৎসা করেনা। খেতে দেয়না। ছোট বেলায় যাকে জীবন সংগী করে ঘরে নিয়ে এসেছি। তাকে তো আর ফেলে দেয়া যায়না। ছেলেরা মাকে না দেখলে কি হবে? আমি তো আর তাকে ফেলে দিতে পারিনা। এর পরও এক জামাই তার ২ সন্তানসহ আমার মেয়েকে আমার ঘাড়ে ফেলে গেছে। সে আর ফিরে আসেনা। তাদের খোঁজ-খবরও রাখে না। এ বৃদ্ধ বয়সে শীরর চলেনা। তার পরও সকলের মুখে দিকে চেয়ে আমি এ কাজটি বেছে নিয়েছি।
এক প্রশ্নের জবারে তিনি আরো বলেন, গ্রামের মেম্বর বয়স্কভাতার একখানা কার্ড করে দিয়েছে। প্রতি ৩ মাস অন্তর একবার ইউনিয়ন পরিষদ গিয়ে ৯শ’ টাকা করে পাই। তার স্ত্রী পায়না বয়স্কভাতা। অসুস্থ স্ত্রীর ওষুধ কেনাসহ ৫ জনের সংসার চালানো খুবই কষ্টের। তাই গ্রাম থেকে খড় কিনে রোদে শুকিয়ে এবং দড়ি ও কাঠি কিনে নিজের হাতে বাড়–ন বানাই। অনেক কষ্টে কেনা ভ্যান চালিয়ে এক দিন বাদে একদিন শহর ও জেলার বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জের পাড়া মহল্লায় গিয়ে বাড়–ন বিক্রি করি। প্রতিদিন দেড়শ’ থেকে ২শ’ বাড়–ন বিক্রি হয়। তাতে যে লাভ আসে তাতে কোন ভাবে খেয়ে না খেয়ে দিন চালাতে হয়।
সবশেষে তিনি আক্ষেপ করে বললেন- তার স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য যদি কোন সরকারি-বেসরকারি কিংবা দাতা সংস্থা এগিয়ে আসতেন তবে তিনি কৃতজ্ঞতা ভরে তাদেন দান গ্রহণ করতেন।

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

Shamol Bangla Ads
error: কপি হবে না!