মো.সুজন রানা, নন্দীগ্রাম(বগুড়া)প্রতিনিধি : দেশে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশী বয়সের মানুষ কে এই পরিসংখ্যান জানা না থাকলেও ১২৯ বছর বয়সের এক ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। ১২৯ বছর বয়সের এই ব্যাক্তির নাম জয়েন উদ্দিন মন্ডল। বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলার গোসাইবাড়ী’র পল¬¬¬ীতে ১৮৮৮ সালে তিনি জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ঝুমুর মন্ডল। জন্মের আগেই তার বাবা মারা যায় এবং জন্মের পর পরই তার মায়ের মৃত্যু হয়। এতিম হয়ে যায় জয়েন উদ্দিন। এর পর থেকে তিনি মানুষের দয়া আর অনুগ্রহ নিয়ে আস্তে আস্তে বেড়ে উঠেন। তারপর মাত্র ২০ বছর বয়সে একই গ্রামের ছালেমুন বিবি’র সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। সুখেই চলতে থাকে তাদের সংসার। কিন্তু ১৯৬৫ সালের দিকে নদী ভাঙ্গনের কবলে পরে সর্বস্ব হারায় জয়েন উদ্দিন। ভিটে হারা হয়ে পড়ে তিনি। তখন সে তার পরিবার কে নিয়ে চলে আসে বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার দলগাছা গ্রামে। সেখানে প্রয়াত সমাজ সেবক ডাঃ মোফাজ্জল হোসেনের সহযোগীতায় নিজের বাসস্থান গড়ে তোলেন। জয়েন উদ্দিনের সংসারে ৬ ছেলে ও ৩ মেয়ে জন্ম গ্রহণ করে। নাতী-নাতনী সহ তার পরিবার এখন মোট সদস্য প্রায় ৫৫/৬০জন। জীবনে অনেক পরিশ্রম করেছেন জয়েন উদ্দিন। সে আর কোন পরিশ্রম করতে পারে না। এখন তার সময় কাটে ইবাদত এবং বাড়ীর সামনে চায়ের ষ্টলে বসে বসে তার অতীত জীবনের গল্প বলে। তার বড় ছেলে সকু মিয়ার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমার বাবা নিজের কাজ এখনও নিজে করতে ভালবাসে। তাকে আমরা এখনও খুব সমাদর করি। জয়েন উদ্দিনের নিকট তার সুখ-দুঃখের স্মৃতিময় ঘটনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার জীবন অতি কষ্টের, আমার জীবনে সুখ খুব অল্প সময়ের জন্য ধরা দিয়েছে। জয়েন উদ্দিন এখন অতিশয় বৃদ্ধ। ভাগ্য সহায় তাই জয়েন উদ্দিন কে এখনও যেতে হয়নি কোন বৃদ্ধাশ্রমে। পরিবার-পরিজন ও আত্বীয় সজন নিয়ে কাটছে তার শেষ জীবনের দিন গুলো। তবে এখনও যে কোন কাজ তিনি নিজে করতে পছন্দ করেন। অনেক দিন পরে হলেও এই বৃদ্ধ জয়েন উদ্দিনের ভাগ্যে জুটেছে বয়স্ক ভাতা। তার স্ত্রী ছালেমুন বিবি’র বয়স এখন প্রায় ৯৩ সেও অতিশয় বৃদ্ধ। তাদের দু’জনই এখন বয়স্ক ভাতা পান । এই বয়স্ক ভাতা দিয়েই চলছে বুড়ো ও বুড়ির সংসার।