বিশেষ প্রতিনিধি : পূর্নাঙ্গ মিশনের স্বীকৃতি পেয়েছে শ্রীবরদীর দিগলাকোনা মিশন। ২১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে ওই মিশনটিকে পূর্ণ মিশনের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে দিগলাকোনার মিশন কম্পাউন্ডে নেয়া হয় নানা কর্মসূচী। ক্যাথলিকমন্ডলীর ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশের প্রধান বিশপ পৌল পনেন কুবি-সি.এস.সি-ডি.ডি আনুষ্ঠানিক ভাবে ওই মিশনের ঘোষণা করেন। এ মিশনের নাম রাখেন সাধু আন্দ্রে ধর্মপল্লী। এতে ময়মনসিংহ ধর্ম প্রদেশের ভিকার জেনারেল ফাদার রবার্ট মানখিন, প্রভিনসিয়াল, বিভিন্ন মিশনের ধর্মযাজকগণ, কারিতাস ময়মসিংহ অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক থিওফিল নিশারন নকরেক, বিদেশী মিশনারীজ এবং এলাকার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ ৫ শতাধিক জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘদিন যাবত এটি শেরপুরের ঝিনাইগাতীর মরিয়মনগর মিশন থেকে শাখা মিশন হিসেবে পরিচালিত হয়ে আসছিল।
ওই মিশনের স্বীকৃতিদানের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে শেরপুরের শ্রীবরদী এবং জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর শিক্ষা, চিকিৎসা সেবাসহ অনেক আধ্যাত্মিক ও সামাজিক কাজের সেবা পাওয়া যাবে। এরই মধ্যে সার্বজনীনভাবে পাহাড়ী এবং গ্রামীণ এলাকার প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার লক্ষ্যে বহুতল ভবন ডিসপেনসারী নির্মাণ এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের জন্যে স্কুল এন্ড হোস্টেল চালু করা হয়েছে। এই মিশন স্বীকৃতির পর থেকে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে চারিপাশে অবস্থানরত সকলের জন্যে সেবা প্রদান করা সহজ হবে বলে জানালেন ফাদার শেখর রিচার্ড পেরেরা-সি.এস.সি।
উল্লেখ্য, এটি ফিলিপাইনের নাগরিক ফাদার আলেক্স রাবানলের একটি স্বপ্ন ছিল। যিনি ১৯৫৯ সালে বাংলাদেশে এসে এ দেশকে হৃদয় দিয়ে ভালবেসেছেন। মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিবাহিনীকে সরাসরি নানা প্রকার সহায়তা করেন। এই সহায়তার জন্যে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীরা তাঁকে হত্যার উদ্দ্যেশে ধরার জন্য বারবার হানা দিয়েছিল। পরে তিনি বান্দরবনের দুর্গম পাহাড়ে গিয়ে আতœরক্ষা করে বেঁচে আছেন।
অবহেলিত দিগলাকোনা সব দিক থেকে সুবিধা বঞ্চিত। এটি গারো আদিবাসীদের একটি প্রাচীন গ্রাম। যা থেকে তিনি স্বপ্ন দেখেন মিশনের মাধ্যমে একটি সেবা কেন্দ্র গড়ে তোলার। সে স্বপ্নের যাত্রা শুরু করেন ১৯৯৯ সালে। প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন ‘খুব ভাল লাগছে আজ, তবে এখন থেকে দায়িত্বটাও বেড়ে গেল। সবার সহযোগিতা পেলে আরও উন্নত করতে পারব বলে আশা রাখি’ বলে সকলের সহযোগীতাও কামনা করেন তিনি।