করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর লকডাউনের প্রথম দিনে সরকারি বিধিনিষেধ অমান্য করায় শেরপুরের নকলায় ৬২টি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও অটোরিকশা আটক করা হয়। গত ৩ দিনেও এসব ইজিবাইক ও অটোরিকশা থানা থেকে ছাড়িয়ে নিতে না পারায় পরিবার-পরিজন নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছে ইজিবাইক চালকেরা। লকডাউনের কারণে এমনিতেই নিম্ন আয়ের মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। তারপরেও পরিবারের উপার্জনের একমাত্র মাধ্যমটি পুলিশ আটক করায় অনেকে পরিবার পরিজন নিয়ে ধার-দেনা করে চলছে।
আবার অনেকের ঘরের চুলোয় জ্বলছে না আগুন। দিনরাত থানা ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি ও জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও অসহায় ইজিবাইক চালকেরা এর কোন সুরাহা পাচ্ছেন না। ইজিবাইক চালকরা বলছেন, ২৪ ঘন্টার মধ্যে ব্যাটারি চার্জ দিতে না পারলে ব্যাটারির প্লেট দুর্বল হয়ে তা ভেঙে যাবে। এতে তাদের লোকসান গুনতে হবে ৫৪ হাজার থেকে ৬৫ হাজার টাকা করে। অনেকে ঋণ করে এবং কিস্তিতে ইজিবাইক ও অটোরিক্সা কিনেছেন। এতে তারা পড়েছেন উভয় সংকটে।
২৪ জুলাই শনিবার রাত ১০টায় নকলা থানা ফটকে এ প্রতিনিধির সাথে কথা হয় পৌরসভার বাদাগৈড় মহল্লার রিকশাচালক সাইফুল ইসলামের (২১) সাথে। তিনি তার পঙ্গু পিতা মিরাজ আলীকে (৭০) নিয়ে এসেছিলেন তার রিকসাটি ছাড়াতে। সাইফুল বলেন, পঙ্গু বাবার চিকিৎসা এবং ভরণপোষণ সবকিছুই আমাকে যোগাড় করতে হয় রিকশা চালিয়ে। কিন্তু পুলিশ রিকশা আটক করায় বর্তমানে আমি পরিবারপরিজন নিয়ে কষ্টে আছি।
পৌরসভার রিহিলা মহল্লার আমজাদ আলীর পুত্র হাসান (৩০) বলেন, ৬ সদস্যের পরিবারের মুখে দু’মুঠো ভাত তুলে দিতে অটোরিকশা ছাড়া আমার আর কোন অবলম্বন নেই। ধুকুরিয়া (লঙ্গর পাড়া) মহল্লার আজিমদ্দিনের পুত্র বাদল (৩৫) জানান, পুলিশ আমার অটোরিকশাটি আটক করায় পরিবারপরিজন নিয়ে না খেয়ে আছি।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুশফিকুর রহমান বলেন, আটককৃত অটোরিকশা নিয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। লকডাউন শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেগুলো থানায় আটক থাকবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান জানান, আমাদের সেন্ট্রাল সিদ্ধান্ত কোন যানবাহন চলবে না, গণপরিবহন চলবে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা সেগুলো আটক করেছি। লকডাউন শেষ হলে সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা হয়তো সেগুলো ছেড়ে দেব।