এম. এ করিম মিষ্টার, নীলফামারী : উত্তরের ঐতিহ্যবাহী কান্তজীর মন্দির দর্শনে দেশি-বিদেশী ভক্ত যাত্রী ও পর্যটকদের আগমন কমে যাচ্ছে। দিনাজপুর জেলার প্রসিদ্ধ মন্দির মেলার আয়োজন প্রায় শতবছর ধরে চলে আসছে। নীলফামারীর সৈয়দপুর থেকে দিনাজপুরের দশমাইল নামক স্থানের দুরত্ব ২৪ কিলোমিটার। সেখানকার ইয়াছমিন স্পট থেকে ২ কিলোমিটার উত্তরে কান্তনগর নামক মৌজার ঢেপা নদীর পার্শ্বে প্রতিবছরই ওই মেলার আয়োজন করা হয়। শত বছরের পুরানো মেলাতে আয়োজনের ঐতিহ্য নানান কারণে হারিয়ে যাচ্ছে। অবশ্য হিন্দু নর-নারীদের কাছে স্থানটি তীর্থ বলে এর নাম যশ ও প্রশংসা দেশজুড়ে ছড়িয়ে আছে। আশ্চর্য কারুকাজে তৈরি মন্দিরটিকে হিন্দু সম্প্রদায়ভূক্ত অনেকেই দেবতার সৃষ্টি বলে মনে করেন। শুধু মেলা নয়, মন্দির দর্শন ও কামনা-বাসনা পূরণের আশা নিয়ে প্রায় সময় অতিথি যাত্রীদের আগমন জমে উঠত। কিন্ত নানা সমস্যা ও নুযোগ-সুবিধার অভাবে দর্শনার্থীদের ভিড় এখন আর আগের মত নেই। যাত্রী আগমন তেমন না থাকায় এবারের মেলায় বেচাকেনাও তেমন জমে উঠেনি। একমাত্র রাসপূর্ণিমার রাতে ভক্তের সমাগম ঘটলেও এরপর থেকেই মেলা চত্বরে সাধারণ যাত্রীর সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। দেশের বিভিন্ন জেলা ছাড়া ভারত থেকে আসা অতিথি যাত্রীদের আগমন এবার চোখে পড়েনি।
সূত্র জানায়, মন্দির অভ্যন্তরে অতিথি ভবনে জায়গা সংকট, টয়লেট ব্যবস্থাপনা নাজুক, বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাবসহ নতুন করে সরকারি উদ্যোগে কয়েক তলা বিশিষ্ট অতিথি ভবন নির্মাণ না করায় দূর-দূরান্তের পর্যটকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। এদিকে মন্দিরের পূর্ব পার্শ্বে ৫০ শতক জমির উপর পর্যটন রেস্তোঁরা সরকারি অর্থ ব্যয়ে তৈরি হলেও বিদেশী অতিথিদের রাত যাপনে প্রয়োজনীয় কক্ষ বা ব্যবস্থা নেই। এরপরও রয়েছে নিরাপত্তার অভাব। ভ্রমনকারীদের কাছে স্থানটিকে ন্যাচারাল সৌন্দর্যে শোভামন্ডিত করে না তোলায় প্রসিদ্ধ মন্দির দর্শনে অতিথি আগমন হ্রাস পাচ্ছে। যদি মন্দির চত্বরটিকে সম্ভাবনাময় পর্যটনকেন্দ্রের রূপ দিয়ে আধুনিকতার ছোঁয়ায় আকর্ষণীয় করা যায় তাহলে ওই স্থান থেকে সরকারের বিপুল রাজস্ব আয় হতে পারে বলে পর্যটক মহলের ধারণা।