কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি: কেশবপুরের বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়নের দুটি সরকারী খাল ও দুটি বিল অবৈধভাবে দখল করে একটি মহল দীর্ঘ দিন ধরে মাছ চাষ করে আসছে। সেই থেকে বিল দুটির প্রায় ৩ হাজার বিঘা জমির আউশ-আমন আবাদ বন্ধ হয়ে গেছে। অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে খাল ও বিল দখল রক্ষার দাবিতে ৭ গ্রামের শতাধিক লোকের স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে দাখিল করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বাউশলা সহকারী তহশীলদারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়নের রেজাকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে সরকারী কাঁদার খাল, বগা ও মহাদেবপুর গ্রামের মাঝ দিয়ে বগার খাল প্রবাহিত হয়ে কপোতাক্ষ নদে মিশেছে। এই খাল দুটি দিয়ে বগা, মহাদেবপুর, রেজাকাটি, নেহালপুর, গৌরীপুর, আড়ংপাড়া বিলসহ কমপক্ষে ১০ বিলের বর্ষার অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশিত হত। গত ৫ বছর আগে বগা গ্রামের ধর্ণাঢ্য শাহীনুর রহমান এলাকার প্রভাবশালী মহলকে ম্যানেজ করে দু’হাজার কৃষি পরিবারকে জিম্মি করে সরকারি কাঁদার খাল, বগার খাল ও বগার বিল, মহাদেবপুর বিলে কোন বেঁড়িবাধ ছাড়াই দখল করে মাছ চাষ শুরু করেন। এলাকার কৃষকদের অভিযোগ, ঘের ব্যবসায়ী শাহীনুর রহমান শুষ্ক মৌসুমে বিল দুটিতে তলদেশ ভরাট করে মাছ চাষ করে থাকে। এ জন্য বর্ষা মৌসুম শুরু হলেই সামান্য বৃষ্টিতে বিল দুটি ভরট হয়ে লোকালয় প্লাবিত হয়ে আসছে। সেই থেকে দুটি বিলের ৩ হাজার বিঘা জমির আউশ-আমন আবাদ বন্ধ রয়েছে। শাহীনুর রহমান এলাকার নাম মাত্র কয়েকজন কৃষকের স্বাক্ষরে চুক্তিপত্র করে নিয়েছে। এই চুক্তিপত্রের বাইরে অনেক কৃষক রয়েছে, যারা জমি আবাদ করতে পারে না আবার হারিও পায় না। মহাদেবপুর গ্রামের ক্ষুদ্র ঘের ব্যবসায়ী আবুল কাশেম জানান, ওই বিল দুটিতে অনেক ছোট ছোট ঘের রয়েছে। শাহীনুর রহমানের লোকজন ওই সমস্ত ঘেরে নিষিদ্ধ ট্যাবলেট প্রয়োগ করে মাছ বের করে নিয়ে যাচ্ছে। আর এ ট্যাবলেটের বিরূপ প্রভাবে অনেক মাছ মরে যাচ্ছে। যার কারনে ছোট ছোট ঘের মালিকরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। তিনি উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে সরকারি খাল ও বিল উদ্ধার করে কুষকদের ফসল উৎপাদনের জন্য উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন।
ঘের ব্যবসায়ী শাহিনুর রহমান মুঠোফোনে জানান, সরকারি খালের মাছ চাষ হচ্ছে এটা সত্য। তবে ওই খাল দু’টি দিয়ে বর্তমান পানি নিষ্কাশন হয় না। তাছাড়া প্রতি বোরো মৌসুমে বিল দু’টির পানি নষ্কিাশন করে কৃষকের আবাদের উপযোগি করে দেয়া হয়। এজন্য কৃষকরা তার কাছে বিল মাছ চাষের জন্য লিজ দিয়েছে। এ ব্যাপারে বাউশলা তহশীলদার আব্দুল খালেক বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। সরকারী খাল ও বিল দুটি যাতে দখলমুক্ত হয় সে ভবে দু’এক দিনের প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।