বিলাইছড়ি (রাঙ্গামাটি) প্রতিনিধি : রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার গাছকাটাছড়ি কমিউনিটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরকারি সহযোগিতা না থাকায় বিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। ২০০৪ খ্রিস্টাব্দে ১২২ নং কুতুবদিয়া মৌজায় বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হয় এবং ২০১১ খ্রিস্টাব্দে ওই বিদ্যালয়কে রেজিস্ট্রার্ডকরণের জন্য যাবতীয় কাগজপত্র রাঙ্গামাটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ সত্ত্বেও এ যাবত রেজিস্ট্রার্ড ও জাতীয়করণভুক্ত হয়নি বলে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির (এসএমসি) সভাপতি গুলক্ষ তঞ্চঙ্গ্যা কার্বারী জানিয়েছেন। প্রতিবছর ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বই বিলাইছড়ি উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে দেয়া হয়। কিন্তু সরকারি রেজিস্ট্রার্ড না হওয়ায় ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপবৃত্তি সুবিধা পান না। বিদ্যালয়টিতে কর্মরত রয়েছেন ৪ জন শিক্ষক । তন্মধ্যে ২জন শিক্ষকের বেতন এনজিও টংগ্যা থেকে দেয়া হয়। অপর ২ শিক্ষকের বেতন এলাকাবাসী থেকে সংগ্রহ করে এসএমসি কর্তৃক দেয়া হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ৭৪ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। ২০১২ খ্রিস্টাব্দ থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় স্কুলটির ছাত্রছাত্রীরা অংশ গ্রহণ করছেন। সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের পাশের হার শতভাগ বলে শিক্ষক শান্তি কুমার তঞ্চঙ্গ্যা জানিয়েছেন। ৩ কক্ষ বিশিষ্ট আধাপাকা স্কুল ভবনটির ২টি কক্ষে ক্লাস আর অপর কক্ষে অফিস। সাম্প্রতিক সময়ে ভূমিকম্পে স্কুলটির অফিস কক্ষে ফাটলের সৃষ্টি হওয়ায় এখন ওই স্কুল ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় বিপদের সম্ভাবনা সত্ত্বেও ভয়ের মধ্যে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদেরকে ঝুঁকিপূর্ণ স্কুল ভবনটিতে অবস্থান করে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হচ্ছে।
এসএমসি সভাপতি জানান,চলতি বছরের জুন মাসে পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার এমপি স্কুলটি পরিদর্শন করে এই স্কুলকে জাতীয়করণসহ শ্রেণী কক্ষ নির্মাণের প্রতিশ্র“তি দিয়েছিলেন। ওই প্রতিশ্র“তি অবিলম্বে বাস্তবায়নের জন্য এসএমসি সভাপতি প্রতিমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান। সূত্র জানায়, টংগ্যা থেকে ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে আসা যাওয়ার জন্য স্কুলে একটি ইঞ্জিন বোট দেয়া হয়েছে। তাছড়া শিক্ষা উপকরণ ও টিউবওয়েল দেয়ায় এলাকাবাসী ও এসএমসি সদস্যগণ টংগ্যার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। স্কুলটির আওতায় চাকমা, তঞ্চঙ্গ্যা ও মারমা সম্প্রদাযের শতাধিক পরিবার রয়েছে। এসকল পরিবার তথা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগণ জুমচাষ, জমিচাষ ও কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল। ওইসকল দরিদ্র কৃষকের আর্থিক সহায়তার প্রেক্ষিতে স্কুলে শিক্ষা কার্যক্রম পচিালনা করা খুবই দুরূহ বলে স্কুলটিতে কর্মরত শিক্ষক শিক্ষিকাগণ জানিয়েছেন। এলাকাবাসী ও অভিভাবকগণ স্কুলটি রেজিস্ট্রার্ডভুক্তসহ সরকারি সিদ্ধান্তের আলোকে জাতীয়করণের জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানান।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. নূরনবী জানান, স্কুলটি রেজিস্ট্রার্ডকরণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আগে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু রেজিস্ট্রার্ডভুক্ত না হওয়ায় ওই স্কুলে সরকারি সহায়তা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না । তিনি আরও জানান সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দি¦তীয় পর্যায়ে স্কুলটি জাতীয়করণের সম্ভাবনা রয়েছে।
