এস.গুলবাগী, বগুড়া : আধিপত্য বিস্তার বা দলের নিয়ন্ত্রন হাতে নিতে বগুড়া বিএনপিতে দীর্ঘদিন থেকে চলে আসা দলীয় কোন্দল অবশেষে রূপ নিয়েছে আত্মঘাতী সংঘাতে। দলের ভিতরের তৃণমুল নেতাকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে,বর্তমান জেলা বিএনপির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পাওয়ার পরে থেকেই দলের ভিতরে শুরু হয় লবিং-গ্রুপিং, ধিকৃত হতে থাকে দলের ত্যাগী নেতা কর্মীরা।
এমনি অবস্থার প্রেক্ষিতে সক্রিয় ও ত্যাগী নেতাকর্মীরা ভির জমাতে থাকেন বগুড়া বিএনপির জনপ্রিয় ও অন্যতম সংগঠক সাবেক এমপি হেলালুুুুজ্জামান তালুকদার লালুর কাছে। ধীরে ধীরে বগুড়া বিএনপিতে প্রকোপ হয়ে ওঠে সাইফুল গ্রুপ ও লালু গ্রুপের পরস্পর বিরোধী মনোভাব। যে কারনে বগুড়া সদর, গাবতলী ও শাজাহানপুরসহ বগুড়ার সবকটি উপজেলায় কেন্দ্রীয় কমিটির দেয়া সরকার বিরোধী আন্দোলন বেগবান করতে পারেনি কখনও। বিগত বছর থেকে শাজাহানপুর উপজেলায় সাইফুল গ্রম্নফ ও লালু গ্রম্নফের মাঝে মারপিটের ঘটনায় একাধিক মামলা-মোকদ্দমার সৃষ্টি হয়। ফলে শাজাহানপুরে যে কোন ধরনের দলীয় কর্মকান্ড চলতে থাকে রতন গ্রুপ ও জাহেরুল গ্রুপের নিয়ন্ত্রনে। ভিন্ন ভিন্নভাবে বিএনপির মিছিল মিটিং চলে মাঝিড়ার কাঠালতলা ও বাইপাস মোড়ে।
অপর দিকে গাবতলী উপজেলা বিএনপির নির্বাচন হওয়া সত্বেও নির্বাচিত কমিটিকে পাশ করেনি জেলা কমিটি। বিষয়টি নিয়ে গাবতলী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমিনুল ইসলাম তালুকদারের সাথে কথা বললে তিনি জানান, জেলা বিএনপির একজন শীর্ষস্থানীয় নেতার ব্যক্তিস্বার্থকে প্রধান্য দিতে গিয়ে দলের বারটা বাজিয়েছে। দলের ভিতরের গ্রুপিং এর কারনে দলীয় কর্মকান্ড যেমন পিছিয়ে গেছে, তেমনি দলীয় কোন্দল বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার পরিনতিতে জীবন দিতে হয়েছে একজন সক্রীয় কর্মীকে। আর ওই হত্যা ঘটনাকে কেন্দ্র করে থানা বিএনপির সাধারন সম্পাদক সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম আহবায়ক ও গাবতলী পৌর মেয়র মোরশেদ মিলটনসহ ১৯ জনকে আসামী করে স্থানীয় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিজ দলের কর্মী খুন, ওই খুনের ঘটনায় আবার মামলা-হামলা ইত্যাদি কারনে দলীয় কর্মকান্ড থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে অনেকে। ওই হত্যা ঘটনায় পুলিশ যুবদলনেতা সুমন ও রঞ্জুকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরন করেছে।
উল্লেখ্য, ২৭ অক্টোবর ১৮ দলের ডাকা হরতালের দ্বিতীয় দিনে দুপুরে গাবতলীতে বিএনপির দু’গ্রুপের সংঘর্ষের সময় উপজেলার নেপালতলী ইউনিয়নের চকডিওর গ্রামের মৃত ছায়েদালী ফকিরের ছেলে শাহজাহান আলী প্রতিপক্ষের হাতে নৃশংসভাবে খুন হয়।