ads

মঙ্গলবার , ১৩ এপ্রিল ২০২১ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

‘অহন ধান নাই সব চিটা’

রেজাউল করিম বকুল
এপ্রিল ১৩, ২০২১ ২:০৯ অপরাহ্ণ

ধার দেনা কইরা বোরো আবাদ করছি। মেলা খরচ অইছে। কয়দিন আগে গরম বাতাস আইয়া ক্ষেতের বাইর হওয় নষ্ট কইরা গেছে। অহন সব চিটা। কথাগুলো বলছেন, শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার ধাতুয়া গ্রামের কৃষক শাজাহান মিয়া। তিনি আরও বলেন, আমার বয়সে এমন ক্ষতি দেহি নাই। এইবার যেভাবে চিটা অইছে এইভাবে চিটা অয় এডা কারো কাছে শোনিও নাই। আমি এইবার ১৫ কাঠা জমিতে বিআর ২৮ জাতের বোরো ধান রোপণ করেছি। এই ধান দিয়া সারা বছর ভাত খাই। অহন ক্যামনে ধার দেনা দেমু? নিজেরাই ক্যামনে চলমু?
এমন প্রশ্ন ছুড়ে একই গ্রামের কৃষক আকরাম হোসেন সেলিম, আলমগীর হোসেন, জুলফিকার আলী ও সুমন মিয়াসহ অনেকে জানান, গত ৪ এপ্রিল বিকালে উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যায় গরম জড়ো হাওয়া ও শিলা বৃষ্টি। এর পরেই বেশ কিছু বোরো ক্ষেতের ধান নেই। সব চিটা হয়েছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ধাতুয়াসহ উপজেলার বেশিরভাগ গ্রামের কৃষকরাই। সরেজমিন গেলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন সূত্রের সাথে কথা বলে ওঠে আসে এমন তথ্য।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার উপজেলায় প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে বেশি আবাদ হয়েছে বিআর ২৮, বিআর ২৬ ও তেজগোল্ড জাতের ধান। অনেক ধান ক্ষেতেই এখন গাছ থেকে ধানের শীষ বেড় হচ্ছে। কোথাও শীষ থেকে ধানের ছড়া বের হচ্ছে। আবার কারো ক্ষেতের ধান পাকা শুরু হয়েছে। কয়েকদিন পরই ধুম পড়বে ধান কাটার। এরই মধ্যে গত ৪ এপ্রিল বিকালে উপজেলার প্রায় এলাকা দিয়ে বয়ে গেল গরম বাতাসের জড়ো হাওয়া ও শিলা বৃষ্টি। এতে অনেক বোরো ধান ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সূত্র মতে, উপজেলার ধাতুয়া, মাটিয়াকুড়া, গেরামারা, পোড়াগড়, ষাইটকাকড়া, রানীশিমুল, ভটপুর ও গড়জরিপাসহ প্রায় ৩০টি গ্রামের শতশত কৃষকের জমির বোরো ধান ক্ষেত নষ্ট হয়েছে।
রানীশিমুল গ্রামের গোলাপ হোসেন, পুটল গ্রামের আশরাফ আলী, কামারদহ গ্রামের বিল্লাল হোসেনসহ অনেক কৃষক জানান, তারা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে বোরো আবাদ করেছেন। সম্প্রতি বয়ে যাওয়া গরম ঝড়ো হাওয়া আর শিলা বৃষ্টিতে তাদের বোরো ধান ক্ষেতে এখন আর ধান নেই। সব চিটা হয়েছে। এখন এনজিও ঋন পরিশোধ আর সংসার চালানো নিয়ে দু:শ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তারা। সরকারিভাবে প্রণোদনা বা সহায়তার দাবি তুলেছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হুমায়ুন দিলদার বলেন, আমরা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করছি। এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৭০০ কৃষকের কমপক্ষে ৬০ হেক্টর জমির বোরো ধান ক্ষেত একেবারেই নষ্ট হয়েছে। এখন ওইসব ক্ষেতে ধান নেই। সব চিটা। আমরা ক্ষতিগ্রস্তের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো। এ ছাড়া যে সকল ক্ষেত এখনও নষ্ট হয়নি তাদেরকে নাটিগোল্ড বিষ ও প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা যদি আউশ আবাদ করতে চায় তাহলে তাদেরকে প্রণোদনাসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।

error: কপি হবে না!