এস. গুলবাগী, বগুড়া : বগুড়ার শাজাহানপুরে পরকিয়ার জের ধরে মিজানুর রহমান ওরফে রনি (২৫) নামের এক যুবকের প্রাণহানি হয়েছে। ৫ নভেম্বর মঙ্গলবার গভীর রাতে উপজেলার চকলোকমান দক্ষিনপাড়ায় ওই ঘটনা ঘটে। পুলিশ বুধবার সকালে সিলিং ফ্যানের হুকের সাথে গলায় ওড়না পেচানো ঝুলন্ত অবস্থায় রনির লাশ উদ্ধার করেছে। তবে ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা তা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে।
জানা যায়, ধর্মীয় আত্মীয়তার সুযোগে দীর্ঘদিন থেকে চকলোকমান দক্ষিনপাড়ার মেহেদী হাসানের স্ত্রী দুই সন্তানের জননী ফেনসি বেগম (৩০)’র সাথে রহমান নগর এলাকার কাঠ মিস্ত্রি আব্দুস সামাদ ওরফে টুনু পাইকারের পুত্র মিজানুর রহমান ওরফে রনির অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠে। স্বামী ঢাকায় চাকুরীরত থাকার সুযোগে তাদের মধ্যে এই সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে প্রায় ১ বছর পূর্বে উভয় পরিবারের মধ্যে দেন-দরবার হয়েছে। রনির মা রেহেনা বেগম জানান, মঙ্গলবার রাত ৮টায় ফেনসি বেগম তার ছেলেকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর গভীর রাতে ফোনে দূর্ঘটনার কথা জানায়। ফেনসি বেগম জানান, বাড়িতে টু লেট লেখা সাইন বোর্ডে মোবাইল নাম্বারের সূত্র ধরে রনি প্রায়ই ফোনে জ্বালাতন করতো। এক পর্যায়ে রনি ও তার পরিবারের সাথে তার আত্মীয়তার সম্পর্ক গড়ে উঠলে রনির জ্বালাতন বেড়ে যায়। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে মঙ্গলবার রাতে তার বাড়িতে এসে উত্তেজিত হয়ে বলে হয় তুই মরবি না হয় আমি মরবো। এক সময় তাকে চলে যেতে বললে সে সন্তানদের পড়ার ঘরে গিয়ে ভিতর থেকে দরজা লাগিয়ে দেয়। রাত ১০ টায় দরজা লাগানোর পর অনেক অনুরোধ, ভয়-ভীতি দেখানোর পরও দরজা না খুললে রাত ৩টার দিকে দরজার লক ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করলে রনিকে সিলিং ফ্যানের হুকের সাথে গলায় ওড়না পেচিয়ে ঝুলে থাকতে দেখা যায়। সাথে সাথে রনির বাবা মাকে ফোনে খবর দিয়ে ডেকে এনে তাদের সামনে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামানো হয়। পরে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে ওসি তদন্ত আ ন ম হাসান বুধবার সকাল পৌনে ৯টায় ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়ে দেন। ওই ঘটনায় ফেনসি বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আটক রাখা হয়েছে। রনির স্বজনেরা বলছেন, রনিকে হত্যা করা হয়েছে।
শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুল আলম জানান, প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে আসল ঘটনা জানা যাবে।
