শ্যামলবাংলা স্পোর্টস : গ্যালারির স্ট্যান্ডে পাশাপাশি দুটি পতাকা। একটি শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের। অন্যটি বাংলাদেশের। কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে লাল-সবুজ পতাকা মাথায় বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল এক দর্শককেও। নিশ্চয়ই কোনো বাংলাদেশি। আইএফএ শিল্ডের সেমিফাইনালে ইস্ট বেঙ্গলকে ৩-০ গোলে হারিয়ে কী চমৎকারভাবেই কলকাতায় বাংলাদেশের পতাকা ওড়াল শেখ জামাল ধানমন্ডি! সেই পতাকা উড়ল অবশ্য ৩ বিদেশির সৌজন্যে। গোল করেছেন এমেকা ডার্লিংটন, সনি নর্দে ও ওয়েডসন অ্যানসেলমি। ১৫ ফেব্রুয়ারি ফাইনালে ফেডারেশন কাপের চ্যাম্পিয়ন জামালের প্রতিপক্ষ কলকাতা মোহামেডান।
আগের ম্যাচে উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব মোহনবাগানকে হারানোর পর কাল সেমিফাইনালে শেখ জামালের শিকার শিল্ডে ৩০ বারের চ্যাম্পিয়ন ইস্ট বেঙ্গল। যাদের বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের কোন ক্লাবের প্রথম জয়। যে জয়ে মাত্র দ্বিতীয়বারের মতো শিল্ডের ১শ ১৮ বছরের ইতিহাসে ফাইনালে বাংলাদেশের কোন ক্লাব। এর আগে ১৯৯৫ সালে ফাইনালে উঠে এই ইস্ট বেঙ্গলের কাছেই হেরেছিল ঢাকা মোহামেডান।
ম্যাচের শুরু থেকেই ম্যাচে আধিপত্য বিছিয়ে প্রথম গোল ২৩ মিনিটে। হাইতিয়ান ওয়েডসনের ক্রস থেকে এমেকার মাথা ছুঁয়ে বল জালে। ৩৮ মিনিটে দ্বিতীয় গোলটি কলকাতা মাতানো হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড সনি নর্দের। এমেকার পাস পেয়ে বাঁ পায়ের কোনাকুনি শটে অসাধারণ এই গোল। ৬৭ মিনিটে তিনজনকে কাটিয়ে ওয়েডসনের তীব্র গতির শট ইস্ট বেঙ্গলের এক খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে জালে। স্কোরলাইন ৩-০।
৩-০ স্কোরলাইনই শেখ জামালের দাপট বোঝাতে যথেষ্ট হওয়ার কথা। তবে ঘটনা হলো, ব্যবধানটা আরও বড়ও হতে পারত। সনি নর্দে, মামুনুল গোলের সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলে ইস্ট বেঙ্গলকে রীতিমতো লজ্জাতেই ডুবতে হতো।
শেখ জামালের পাসিং ফুটবল এই ম্যাচের আগেই কলকাতার সংবাদমাধ্যমে ‘বাংলাদেশি টিকি-টাকা’ হিসেবে অভিহিত হয়েছে। কালও মাঝমাঠে একের পর এক পাসের পসরা সাজিয়েছেন মামুনুলরা। ইস্ট বেঙ্গলকে অসহায়ই লেগেছে এর সামনে। সেই অসহায়ত্ব থেকেই হয়তো অর্ণব মণ্ডলের অমন জঘন্য ফাউল। খেলার শেষ মিনিটে স্লাইডিং ট্যাকলে লিঙ্কনের পায়ে মেরে লাল কার্ড পেয়েছেন অর্ণব। এর আগে সোহেলের গলা চেপে ধরে হলুদ কার্ড দেখেছেন ইস্ট বেঙ্গলের অধিনায়ক রবার্ট।
১৫ ফেব্রুয়ারি শিল্ডের ফাইনালে শেখ জামাল মুখোমুখি হবে প্রতিপক্ষ কলকাতা মোহামেডানের।