সাইদুজ্জামান সাগর, রাণীনগর (নওগাঁ) : আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন’র ১ম পর্যায়ে নওগাঁর রাণীনগরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা শেষ সময়ে জমে উঠেছে। এলাকাবাসী গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আ’লীগ সমর্থিত প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত হওয়াই নির্বাচনের কোন স্বাদ না পেলেও আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে উপজেলার প্রতিটি মানুষের মাঝে নির্বাচনী আমেজে তা এখন কানায় কানায় পরিপূর্ণ । এলাকার সবর্ত্রই এখন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে সরগরম হাওয়া বইছে। উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার গ্রাম-গঞ্জের পথে-প্রান্তরে, মাটে-ঘাঠে, দোকান-বিপনীতে, চা-স্টল সহ সর্বত্রই চলছে নির্বাচনের আলোচনা-সমালোচনা। নিজের জয়কে ছিনিয়ে নেওয়ার জন্যে প্রার্থীরা প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত প্রতিটি জনপদ ও ভোটারের বাড়ি বাড়ি চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট করার ফুরসত নেই প্রার্থী ও কর্মীদের হাতে। নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে নিজের পরিবারসহ কর্মীদের নিয়ে ছুটছেন সবাই ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে আর শোনাচ্ছেন হাজারও রকমের প্রতিশ্র“তি। উপজেলার সর্বত্রই জনসাধারণদের মাঝে সকাল থেকে সন্ধ্যারাত পর্যন্ত চলছে বিভিন্ন প্রর্থীদের নিয়ে আলোচনা। ৪র্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের বড় আর্কষন প্রধান দুই দলের প্রর্থীদের নিয়ে। এবারে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আ’লীগ সমর্থিত বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আনোয়ার হোসেন হেলাল (দোয়াত-কলম) ও বিএনপি সমর্থিত এসএম আল-ফারুক জেমস্ (আনারস) প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। পুরুষ ভাইস-চেয়ারম্যান পদে আ’লীগ সমর্থিত বর্তমান ভাইস-চেয়ারম্যান মোঃ শহিদুলাহ মিঞা (চশমা), জামায়াত সমর্থিত অধ্যক্ষ মোঃ হারুনুর রশিদ (টিউবয়েল), বিএনপি সমর্থিত মোজাক্কির হোসেন (তালা) ও জাতীয় পার্টি সমর্থিত আব্দুল লতিফ (বৈদ্যুতিক বাল্ব) প্রতীক নিয়ে এবং মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে আ’লীগ সমর্থিত বর্তমান মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান মোছাঃ ফরিদা বেগম (হাঁস), বিএনপি সমর্থিত মোছাঃ সোনিয়া ইসলাম (কলস) ও বিএনপি বিদ্রোহী তহমিনা আক্তার (ফুটবল) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে যে, এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে তৈরি করা হয়েছে প্রার্থীদের পোস্টার দিয়ে ভোটের অফিস আর চলছে নানা রকম চা পানের আয়োজন। বেলা ২টা থেকে ৮রাত পর্যন্ত চলছে মাইক দিয়ে প্রচারণা। এলাকার রাস্তা-ঘাঠ ছেঁয়ে গেছে সাদা-কালো ছবি যুক্ত পোস্টারে। নির্বাচনকে ঘিরে সাউন্ড সিস্টেম ব্যবসায়ীদের ব্যবসাও জমজমাট।
উপজেলার মিরাট ইউপি’র মোঃ ওইচ উদ্দিন (৬৫) নির্বাচন সম্পর্কে বলেন, আমরা গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কোন স্বাদ না পেলেও এই উপজেলা নির্বাচনে সৎ, যোগ্য ও নির্ভীক প্রার্থীকে ভোট দিয়ে সেই অভাবকে পুষিয়ে নিতে চাই।
রাণীনগর বাজারের নতুন ভোটার মোঃ কামাল হোসেন (২৫) বলেন, জনগণ আগের চেয়ে অনেক সচেতন হয়েছে। তাদের কে আর অর্থের লোভ দেখিয়ে ক্রয় করা যাবেনা। আমি আমার জীবনের প্রথম ভোটটি সাহসী, সৎ ও সুশিক্ষিত প্রার্থীকেই ভোট দিয়ে জয়ী করতে চাই।
উপজেলার দৈনিক সংবাদ পত্রিকার রাণীনগর প্রতিনিধি ও রাণীনগর প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো ঃ সাইদুজ্জামান সাগর বলেন যে, দলবল নির্বিশেষে যে সব প্রার্থী সকল অন্যায়-অবিচার ,দূর্নীতি ও অর্থের উর্দ্ধে থেকে এলাকার জনগনের জন্য কাজ করবে এবং সকল অবস্থায় জনগনদের পাশে এসে দাঁড়াবে সেই সব যোগ্য প্রার্থীদেরকেই আমি ভোট দিব। তিনি আরও আশা করেন শুধু আমি নই আমার সঙ্গে এলাকার জনগনও তাদের ভোটাধিকার সেই সব যোগ্য প্রার্থীদের প্রয়োগ করবে।
এবিষয়ে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারি রির্টানিং কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম পাটওয়ারী বলেন আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারী প্রথম পর্যায়ের উপজেলা নির্বাচন উপলক্ষে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করে নির্বাচনী প্রচারণার কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। যদি বিধি লঙ্ঘনের কোন অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে আমরা তাৎক্ষণিক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরও জানান, এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রাণীনগর উপজেলায় ৪৩টি ভোট কেন্দ্রে ৩২৮টি বুথে ১লাখ ৩১হাজার ৪শ ৬১জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।