ফারহানা পারভীন মুন্নী, শেরপুর : শেরপুরে চাঞ্চল্যকর কিশোরী অপহরণ মামলায় এক যুবককে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। ৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার শেরপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোঃ রবিউল হাসান ওই আদেশ দেন। দন্ডিত যুবক মোঃ কামরুজ্জামান (৩০) পলাতক রয়েছে। সে নালিতাবাড়ী উপজেলার কোননগর গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে।
আদালত সূত্র জানায়, নালিতাবাড়ী উপজেলার কোননগর গ্রামের কৃষক আব্দুল মোতালেবের মেয়ে ও পার্শ্ববর্তী ফকিরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী খাদিজা খাতুন (১২) কে ২০০২ সনের ৭ জুলাই সকাল ১০টার দিকে স্কুলে যাওয়ার পথে ইচ্ছার বিরুদ্ধে অপহরণ করে একই এলাকার তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মোঃ কামরুজ্জামান। ওই ঘটনার দু’দিন পর কামরুজ্জামানসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে নালিতাবাড়ী থানায় অপহরণ, ধর্ষণ ও সহায়তার অভিযোগে নালিতাবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন অপহৃতা কিশোরীর পিতা। পরবর্তীতে থানা পুলিশ অপহৃতা কিশোরী খাদিজা খাতুনকে উদ্ধার করে এবং কামরুজ্জামানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। মামলার মূল আসামী কামরুজ্জামান পলাতক থাকায় দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ায় বাদী, ভিকটিম, ডাক্তার, ভিকটিমের জবানবন্দি গ্রহণকারী ম্যাজিষ্ট্রেট ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ ১৪ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে একমাত্র কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় তাকে ওই সাজা দেওয়া হয়। অপরাপর আসামীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। মামলাটি রাষ্ট্রপক্ষে এডভোকেট চন্দন কুমার পাল পিপি এবং আসামীপক্ষে এডভোকেট মোঃ সিরাজুল ইসলাম পরিচালনা করেন।
এদিকে, একই আদালত মিজানুর রহমান (৩০) নামে এক যৌতুক লোভী স্বামীকে এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন। দন্ডিত মিজানুর রহমান পলাতক রয়েছে। সে নালিতাবাড়ী উপজেলার ছাইচাকুড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলামের পুত্র।
আদালত সুত্র জানিয়েছে, ঝিনাইগাতী উপজেলার ধাতিয়াগাও গ্রামের আশরাফ আলীর মেয়ে রাশেদা বেগমকে ২০০৮ সালের ২৬ নবেম্বর ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দাবিতে মাইরপিট করে নিজ বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় স্বামী মিজানুর রহমান। ওই ঘটনায় নালিতাবাড়ী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা হলে পুলিশ তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। মামলার একমাত্র আসামী মিজানুর রহমান পলাতক থাকায় দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ায় বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক মোঃ রবিউল হাসান ওই রায় দেন।
