জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরের নান্দিনা রেলস্টেশনে বন্ধ হয়নি ডিজেল পাচার। ট্রেনের অসৎ ড্রাইভার-কর্মচারিদের হযোগিতায় চলছে ডিজেল পাচার। এতে গচ্ছায় যাচ্ছে রেলের বিপুল অংক। সংঘবদ্ধ পাচারকারী দল ডিজেল পাচার করে হয়েছেন আঙ্গুল ফোলে কলাগাছ।
ময়মনসিংহ-জামালপুর রেল সেকশনের নান্দিনা রেল স্টেশন ট্রেনের ইঞ্জিন থেকে ডিজেল পাচারের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে পরিচিত। নান্দিনার বালিয়াপাড়া গ্রামের পাকিস্তানী বিহারী বংশগত অবাঙ্গালী মরহুম আঃ হালিমের পুত্র নুরুল ইসলাম বাবু, তার ছোট ভাই আঃ রশিদের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী পাচারকারী চক্র। দলটি প্রতিরাতে চলাচলরত ট্রেন বিশেষ করে চট্রগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা সেভেন আপ, রাতের মেইল ট্রেন, কমিউটার, লোকাল ট্রেন এমনকি সকালে লোকাল ট্রেন যখন এ স্টেশনে এসে স্টপেজ দেয় তখন অসৎ চালকদের সহযোগিতায় ইঞ্জিন থেকে ডিজেল নামানোর জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ে। ৫০ লিটার ধারণ মতা সম্পন্ন একেকটি কন্টেইনারে ডিজেল ভরে ট্রেন থেকে দ্রুত নেমে পড়ে।
সূত্র জানায়, কখনো কখনো চটের বস্তায় কন্টেইনার ভরে পাচারকারীরা ১০ কিলোমিটার দূরে নরুন্দি স্টেশনে যায়। সেখান থেকে চুক্তিবদ্ধ ট্রেনের ইঞ্জিনে উঠে চালকদের টাকা পয়সা দিয়ে সমঝোতার তেল পাচারকারীরা কন্টেইনারে ডিজেল ভরে নান্দিনা স্টেশনে পৌঁছে বাদেচান্দি নামক স্থানে নেমে যায়।
সূত্র আরও জানায়, ইঞ্জিন থেকে স্বল্পমূল্যে ক্রয় করে পাচারকারীরা হাট-বাজারে তাদের চুক্তিবদ্ধ ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রি করে থাকে। এখানে প্রতি রাতে ৫০ লিটার ধারণ মতাসম্পন্ন ২৫-৩০টি কন্টেইনারে কমপে এক দেড় হাজার লিটার ডিজেল পাচার করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রতিদিন যার মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। এ হিসেবে মাসে ২০-২৫ লাখ টাকার উপরে ডিজেল পাচার করা হচ্ছে। ডিজেল পাচার করে সংঘবব্ধ ঐ চক্রটি গত ২০বছরে এখন কোটি টাকার মালিক। ছনের ঘর থেকে আজ তারা বিশাল পাকা বাড়ীর নির্মাণ করেছেন। শূন্য থেকে হিরো বনে গেছে।
স্থানীয় লোকজন জানায়, তেল চোরদের গডফাদার বাবু নেকজাহান স্কুল রোডে রেলের জায়গা দখল করে পাকা দালান উঠিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। তাছাড়া, এ রোডে রয়েছে তার চোরাই তেলের পাইকারী দোকান। তার এই দোকান থেকে স্থানীয় তেল ব্যবসায়ীরা পাইকারী দরে ডিজেল ক্রয় করে বিভিন্ন হাট-বাজারে বাজারে খুচরা বিক্রি করে থাকেন। স্থানীয়রা আরও জানান, ট্রেনের ইঞ্জিনের তেল অত্যন্ত গাড়ো এবং উন্নমানের। এই ডিজেল শ্যালো ইঞ্জিনে ব্যবহার করলে ইঞ্জিন ভালো থাকায় এর চাহিদা বেশি। এলাকার বিভিন্ন রোডে চলাচলরত ভটভটি, শ্যালো ভ্যান, নৌকার ইঞ্জিনসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত ইঞ্জিনে ট্রেনের চোরাই ডিজেল দেদারচ্ছে ব্যবহার হচ্ছে।
এলাকার লোকজন জানান, ডিজেল পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ভয়ে এলাকার মানুষ প্রতিবাদ করার সাহস পায়না। ইতিপূর্বে তেল চোরা বাবু,সালামসহ ৪ সঙ্গীকে র্যাব গ্রেফতার করে। প্রায় ৪ মাস জেল খেটে জামিনে বেরিয়ে পুনরায় ডিজেল পাচারের সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। তাদের বিরুদ্ধে জামালপুর থানায় একাধিক মামলা থাকলেও তারা কোন পরোয়া করছেন না। ইতিপূর্বে তারা জেল খেটে এবং জামিনে মুক্ত হয়ে আবার ডিজেল পাচারে সাথে জড়িয়ে পড়েছেন।
