ঝালকাঠি প্রতিনিধি : ঝালকাঠি জেলায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারন উদঘাটন করতে ময়না তদন্তের কাজে ব্যবহৃত লাশকাটা ঘরটি পরিচালিত হচ্ছে অস্বাভাবিক ভাবে। মাত্র একজন ডোম দিয়ে কাজ করানো, লাশ সংরক্ষন ফ্রজের সংকট, হাসপাতাল থেকে অনেক দূরে আবাসিক এলাকায় লাশকাটা ঘর স্থাপন করায় মৃতদেহ নিরাপত্তার অভাব সহ লাশকাটা ঘরটি নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। ইতিপূর্বে এলাকাবাসী ঝালকাঠি-২ আসনের এমপি ও বর্তমান শিল্পমন্ত্রী আলহাজ্ব আমির হোসেন আমুর কাছে আবেদন জানালে তিনি লাশকাটা ঘরটি অপসারন করে হাসপাতালের অভ্যন্তরে স্থাপনের আশ্বাস দিলে কার্যকর কোন পদক্ষেপই গ্রহন করা হয়নি। ফলে অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারন নিশ্চিত হওয়ার আশা নিয়ে ময়না তদন্তের জন্য আসা ঝালকাঠি জেলার হতভাগ্য পরিবারের সদস্যদের চরম দূর্ভোগ ও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বলে জানা গেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১শ শয্যা বিশিষ্ট ঝালকাঠি আধুনিক সদর হাসপাতালটিতে ময়না তদন্তের কাজে নিয়োজিত রয়েছে মাত্র একজন ডোম। তাই বিধি অনুযায়ী সরকার ১ জন ডোম নিয়োগ দিয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালটি ২৫০ শয্যায় উন্নীত করার প্রক্রিয়া চলছে। তখন আর ১ জন ডোম নিয়োগ দেয়া হবে। ডোম দিলীপ জানান, কোন প্রকার ছুটিছাটা ছাড়া বিরতিহীন ভাবে আমাকে এখানে ২৪ ঘন্টা দায়িত্বপালন করতে হয়। অনেক সময় ডাক্তাররা উপস্থিত থাকলেও কিছু মৃতদেহ বিকৃত হয়ে গেলে তাদের পক্ষে ধরার মতো অবস্থা থাকেনা। তখন ডাক্তারদের নির্দেশ অনুযায়ী তারা কাজ করেন। সে আরো জানায়, একজন মানুষের একার পক্ষে একটি মৃতদেহ নাড়াচাড়া করতে অনেক অসুবিধা। তাই অনেক সময় স্থানীয় দুলাল ডোমকে সাহায্যের জন্য ডেকে আনে। তার মূল বেতন হচ্ছে ৭ হাজার ২শ’ ৭০ টাকা। কিন্তু সাহায্যের জন্য আনা সহযোগীর অতিরিক্ত খরচও তাকে বহন করতে হয়। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, অধিকাংশ জেলার লাশকাটা ঘর হাসপাতালের বাউন্ডারীর মধ্যে হলেও ঝালকাঠির অবস্থা ব্যতিক্রম। এখানের লাশকাটা ঘরটি হাসপাতাল থেকে প্রায় ৩ কিঃ মিঃ দূরে। হাসপাতালের মধ্যে লাশকাটা ঘর থাকলে পরিবেশ ভালো থাকে আর লাশ রাখাটাও নিরাপদ হয়। আর মৃতদেহ স্বাভাবিক রাখতে সার্বক্ষনিক একটি ফ্রিজে একান্ত প্রয়োজন হলেও ঝালকাঠি লাশকাটা ঘরের জন্য বিরাদ্ধ ফ্রিজটি দীর্গ দিন ধরে অকেজো পরে রয়েছে। এলাকাবাসী জানায়, দিনের বেলা স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থিরা আর সন্ধ্যার পর সকল স্থরের লোকজনকেই লাশকাটা ঘরের সামনে দিয়ে অজানা আতংক নিয়ে চলাচল করছে। বিকৃত বা গলিত লাশ হলে র্দূগন্ধে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিকৃত মৃতদেহ দেখে অনেক কোমলমতি শিক্ষার্থী ও দূর্বল হৃদয়ের লোকজন অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনাও ঘটেছে। জনবহুল এলাকার মধ্যে লাশকাটা ঘরটি এলাকাবাসীর নানা ভোগান্তি সৃষ্ঠি করলেও স্থানীয় এমপি, স্বাস্থ্য বিভাগ ও পৌর কর্তৃপক্ষ কেউ ভ্ররুপ করছেনা। স্থানীয় কাউন্সিলর আলমগীর হোসেন জানায়, পৌরএলাকার গনবসতিপূর্ন স্থান থেকে লাশকাটা ঘরটি হাসপাতালের মধ্যে হস্থান্তরের জন্য এলাকাবাসীর গনস্বাক্ষর উত্তোলন সহ বহু আবেদন-নিবেদন করলেও স্বাস্থ্য বিভাগ বা দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ কারোই কোন মাথা ব্যথা নেই। এ অবস্থায় এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে আন্দোলন ছাড়া কোন সুফল পাওয়া যাবে বলে মনে হয়না। ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডাক্তার মাসুম আলী বলেন, ১০০ শয্যা বিশিস্ট হাসপাতালের জন্য ১ জনকেই ডোম হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। হাসপাতালটি ২৫০ বেডে উন্নীত করার প্রক্রিয়া রয়েছে। তখন আর ১ জন ডোম নিয়োগ দেয়া হবে। লাশকাটা ঘরটি অধিদপ্তরের নির্দেশ পেলেই সরানো যাবে,আমাদের কিছু করার নেই
