এইচ এম নাসির উদ্দিন আকাশ ঝালকাঠি : ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবা বেগমের রহস্যজনক ভুমিকায় সংখ্যালঘু অমিয় বালার পরিবারের সমাধি ও বসতভিটা স্থানীয় ভূমিদস্যুরা দখল করে নেয়ার ঘটনায় প্রশাসন ও স্থানীয়দের তোপের মূখে পড়েন তিনি।

সোমবার দুপুরে রাজাপুর সদরের টিন্ডটি রোডে এ ঘটনা ঘটলে মঙ্গলবার সকালে ইউএনও মাহবুবাকে তলব করে জেলা প্রশাসক মোঃ শাখাওয়াত হোসেন। সাক্ষাতের পর জেলা প্রশাসক মোঃ শাখাওয়াত হোসেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট খন্দকার আনোয়ার হোসেন, প্রেস ক্লাব সভাপতি চিত্ত রঞ্জন দত্ত ও জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দুলাল সাহাকে নিয়ে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে সরেজমিন পরিদর্শন শেষে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়।
মঙ্গলবার বিকেলে গঠিত তদন্ত টিম রাজাপুরের টিএন্ডটি রোডের ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলেন। স্থানীয়রা জানান, সোমবার ঘটনার সাথে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সেখানে রাজাপুরের ওসি পুলিশ মোতায়েন করেন। সন্ধ্যায় পুলিশ অবৈধ দখলদারের নির্মিত কাটাতারের বেড়া উচ্ছেদ করে শতাধিক বছরের বসবাসকারী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার অমিয় বালাকে জায়গা ফিরিয়ে দিয়ে কাটা তার ও বাশের খুঁটি থানায় জব্দ করে।

ঝালকাঠি জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দুলাল সাহা বলেন, আমরা মঙ্গলবার রাজাপুরের সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। পুলিশ প্রশাসন সঠিক ভূমিকায় থাকলেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অপেক্ষা করলেই এর ফলাফল দেখা যাবে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট খন্দকার আনোয়ার হোসেন জানান, জমি নিয়ে আদালতে চলমান মামলার বিষয়টি ইউএনও’র জানা ছিল না। তদন্ত শেষে কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিদেন দেয়া হবে।
উলেখ্য, সোমবার দুপুরে কবির ও শিপন নামে দুই ব্যক্তি অর্ধশত লোকজন নিয়ে অমিয় বালার শত বছরের পুরাতন পূর্ব পুরুষের সমাধি ও বসতভিটা কাটা তারের বেড়া দিয়ে দখল করে নেয়। অমিয় বালা বের হতে না চাইলে আমাকে মারধর করে ঘর থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে দেয়া হয়। এ সম্পত্তি মেপে বুঝিয়ে দেয়া ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার সাইফুল ইসলাম বলেন, গত ৯ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবা আক্তারের লিখিত নির্দেশে জমি মাপ দেন ও সরকারী আওতায় নেন। তবে তিনি কাউকে দখল বুঝিয়ে দেননি বা কাটাতারের বেড়া দেননি। উক্ত জমির বর্তমান দখলদারকে কোন নোটিস দেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ৪ ডিসেম্বর ২০১৩ইং উক্ত দাগের সকলকে স্ব স্ব কাগজ পত্র নিয়ে ভূমি অফিসে উপস্থিত হতে দেয়া নোটিসের কপি বের করেন। কিন্তু তিনি সোমবার জমি মাপার বিষয়ে কোন নোটিশ দেখাতে পারেননি।
দখলকারী শিপন বলেন, ‘আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে ওই জমি লিজ নিয়েছি। তাই আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে একজন সার্ভেয়ার নিয়ে জমি মেপে চিহ্নিত করে দখল বুঝে নিয়েছি। তবে শিপন তাদের বক্তব্যের স্বপক্ষে তাৎক্ষণিকভাবে সাংবাদিকদের কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হন।
