স্টাফ রিপোর্টার : দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুরের দু’টি ভোটকেন্দ্রে হামলা চালিয়ে মারপিট, ভাংচুর, ব্যালটবাক্স ও ব্যালটপেপারসহ সরঞ্জামাদি ছিনতাই ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পৃথক দু’টি মামলা দাযেল হয়েছে। ওই দু’টি মামলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, সাবেক এমপি মাহমুদুল হক রুবেলসহ শতাধিক দলীয় নেতা-কর্মীকে আসামী করা হয়েছে। এর মধ্যে শেরপুর পৌর শহরের দিঘারপাড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ঘটনায় সাবেক এমপি মাহমুদুল হক রুবেলসহ ৫৭ জন এবং শ্রীবরদীর গড়জরিপা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ঘটনায় সাবেক এমপি মাহমুদুল হক রুবেলসহ ৪৫ জন আসামী হয়েছেন।

এদিকে দিঘারপাড় কেন্দ্রের মামলায় কামারুজ্জামান ওরফে জামান, আশরাফ হোসেন আরজু, শাহীনসহ ৪ জনকে সোমবার রাতে গ্রেফতার করেছে সদর থানা পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদনসহ তাদের আদালতে সোপর্দ করা হলে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ সেলিম মিয়া বৃহস্পতিবার রিমান্ড শুনানীর তারিখ ধার্য্য করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। অন্যদিকে গড়জরিপা কেন্দ্রের মামলায় কুড়িকাহনীয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি গোলাম মোস্তফা নান্ডা (৫০) ও স্থানীয় যুবদল কর্মী আনিসুর রহমান বাবুল (৩০) কে সোমবার রাতে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদনসহ তাদের আদালতে সোপর্দ করা হলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট বুলবুল আহমেদ তাদের একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
উলেখ্য, ভোটগ্রহণের পূর্বরাতে (৪ জানুয়ারী) শ্রীবরদী উপজেলার গড়জরিপা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্স, নির্বাচনের কাজে ব্যবহৃত ২টি ভটভটি গাড়ীতে অগ্নিসংযোগ, নির্বাচনের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপর হামলা, ককটেল, পেট্রোল বোমা বিস্ফোরনের ঘটনায় শেরপুর-২ (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনের সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক রুবেল, উপজেলা যুবদল সভাপতি আব্দুলাহ আল মামুন দুলাল, যুদ্ধাপরাধের মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত মুহাম্মদ কামারুজামানের শ্যালক, গড়জরিপা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান, বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ, স্থানীয় বিএনপি নেতা নজরুল ইসলামসহ ৪৫ নেতাকর্মীকে আসামী করে রবিবার রাতে শ্রীবরদী থানায় একটি মামলা রুজু হয়।
অন্যদিকে, ভোটগ্রহণের দিন দুপুরে দিঘারপাড় সরকারী প্রাথমিক বালক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে হামলা চালিয়ে কর্তব্যরত পুৃলিশসহ অন্যদের মারপিট, ভাংচুর এবং ব্যালট বাক্স ও ব্যালটপেপার ছিনতাইয়ের ঘটনায় সোমবার শেরপুর সদর থানায় একটি মামলা রুজু হয়। ওই মামলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক রুবেল, স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর আমির হোসেন বাদশা ওরফে বাদশা তালুকদার, জেলা ছাত্রদল সভাপতি আবু রায়হান রূপম,,জেলা যুবদল নেতা রমজান ও জেলা শ্রমিকদলের সাবেক সেক্রেটারী সোলাইমান হোসেন সোলেসহ ৫৭ জনকে স্বনামে ও অজ্ঞাত ২শ/২শ ১০ জনকে আসামী করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে পুলিশের পুন:পুন অভিযানে এজাহারভুক্ত আসামীদের বাইরে এ পর্যন্ত ৩ জন আটক হওয়ায় এলাকায় পুলিশী আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় এলাকাটি প্রায় পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।
