ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ের বেসরকারি ক্লিনিক,হাসপাতাল ও রোগনির্ণয়কেন্দ্র গুলো নিবন্ধনভুক্ত হলেও একটিরও পরিবেশ ছাড়পত্র নেই। যত্র তত্র ভাবে এসব প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য ফেলায় এলাকায় স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ঝুঁকি বাড়ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। পানি বাহিত রোগ সহ বিভিন্ন রোগ ছড়াচ্ছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে,পরিবেশ সংরক্ষণ(সংশোধন) আইন,২০১০ অনুযায়ী বেসরকারি ক্লিনিক,হাসপাতাল ও রোগনির্ণয় কেন্দ্রগুলোর নিবন্ধিত হওয়ার আগেই পরিবেশ ছাড়পত্র নেওয়াটা বাধ্যতামূলক।
পরিবেশ অধিদপ্তর রংপুরের উপপরিচালক ওসমান গনি বলেন, পরিবেশ ছাড়পত্র না থাকলে আইন অনুযায়ী কোনো বেসরকারি ক্লিনিক,হাসপাতাল বা প্যাথলজির অনুমোদন পেতে পারে না।কিন্তু ঠাকুরগাঁওয়ের ক্লিনিক ও রোগনির্ণয় কেন্দ্রেগুলোর এ ছাড়পত্র নেই।
তিনি আরও জানান, পরিবেশ সংরক্ষণ (সংশোধন) আইন, ২০১০ ঘোষনার আগে স্থাপিত প্রতিষ্ঠানগুলোকেও অবিলম্বে পরিবেশগত ছাড়পত্র নিতে বলা হয়েছে। তা না হলে আইন অমান্যকারী প্রতিষ্ঠানকে কমপক্ষে দুই থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড অথবা একলাখ টাকা জরিমানা বা অনধিক পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডই হতে পারে।
ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শহরে সরকার অনুমোদিত ২০ টি ক্লিনিক ও হাসপাতাল এবং ১৯টি রোগনির্ণয় কেন্দ্র রয়েছে। ৪টি উপজেলায় রয়েছে সরকার অনুমোদিত ৩ টি ক্লিনিক ও ৭টি রোগনির্ণয় কেন্দ্র।সিভিল সার্জন মো.আফজাল হোসেন তরফদার জানান,তাঁরা শুধু চিকিৎসা সংক্রান্ত উপকরণ আছে কিনা, সেটা দেখেন। নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি জানান,তাঁর (সিভিল সার্জন) নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্তের দল আছে। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তিনি সুপারিশ করেন। সে অনুযায়ী মহাপরিচালক (স্বাস্থ্য) নিবন্ধন দিয়ে থাকেন।

জেলার ক্লিনিক ও রোগনির্ণয়কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে. এসব প্রতিষ্ঠান থেকে রক্ত,পুঁজ,দেহরস দ্বারা সংক্রমিত স্যালাইন সেট,জমাট বাঁধা রক্ত বা দেহরস,ডায়রিয়া সংক্রামিত রোগির কাপড়চোপড়, সংক্রমিত সিরিঞ্জ ইত্যাদি বর্জ্য হয়। এছাড়া আছে অ্যানাটমিক্যাল বর্জ্য যেমন,মানবদেহের কেটে ফেলা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, টিস্যু,গর্ভফুল ইত্যাদি।তেজস্ক্রিয় বর্জ্যরে মধ্যে রয়েছে রেডিওঅ্যাকটিভ আইসোটোপ,তেজস্ক্রিয় বস্তু দ্বারা সংক্রমিত বর্জ্য,অব্যবহৃত এক্স-রে মেশিন হেড ইত্যাদি। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায় এগুলো শোধন ছাড়াই ফেলা হচ্ছে যত্রতত্র।
পরিবেশ ছাড়পত্র না থাকার কথা স্বীকার করে জেলা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির সাবেক আহবায়ক মো.আজগর আলী বলেন, আমরা ক্লিনিক্যালি ঝুকিপূর্ণ বর্জ্যগুলো নিজেরাই পুড়িয়ে ফেলি। অন্য বর্জ্য সুইপার দিয়ে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়।
