বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) সংশোধনের সবগুলো ধারার সঙ্গে বিএনপি একমত। তবে, জোটের প্রার্থীদের দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিষয়টি তারা সমর্থন করেন না। জোটবদ্ধ রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ দলীয় প্রতীকে নয়, যেকোনো প্রতীকে নির্বাচন করার যে স্বাধীনতা আগের বিধানে ছিল, সেটা বহাল রাখার দাবি জানানো হয়েছে। ২৮ অক্টোবর মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সঙ্গে দেখা করে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, যারা জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করবে, তারা হয় নিজেদের প্রতীক বা জোটের অন্য প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার একটা স্বাধীনতা ছিল। সেই আইনটার খসড়া যখন আমরা দেখেছি— নির্বাচন কমিশনও আমাদের পাঠিয়েছিল যে এ বিষয়ে মতামত আছে কি না। এখানে অনেকগুলো সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রায় প্রতিটি সংশোধনীর সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করেছি। যেমন- না ভোট, প্রার্থীদের জামানত বৃদ্ধি, নির্বাচনে যদি কোনো অনিয়ম হয়, সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার বৃদ্ধি, ইচ্ছা করলে যেকোনো নির্বাচন তারা বাতিল করতে পারবে।
তিনি বলেন, আরও বেশ কয়েকটি বিধান সেখানে যুক্ত ছিল। আমরা সবগুলোর সঙ্গে একমত পোষণ করেছি। শুধু এই বিধানটির সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করিনি। যখন আইনটি ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়, তখনও অনানুষ্ঠানিকভাবে সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে আইন উপদেষ্টার সঙ্গে আমি আলোচনা করেছিলাম। তখন তিনি বলেছিলেন, এটি সরকারের নজরে আনবেন। বিষয়টি আলোচনা করে যাতে একটা বিহিত হয়, সেটা বিবেচনা করবেন বা সরকার বিবেচনা করতে পারে। তারপরে এ বিষয়ে তার সঙ্গে আবার কথা বলেছি। আমাদের যে উদ্বেগ আগে যে বিষয়টি ছিল, সেটি যাতে বহাল থাকে সেজন্য আবেদন করেছি। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে কাগজটি তাকে দিয়েছি। কয়েকদিন আগে নির্বাচন কমিশনকেও একই চিঠি দিয়েছি।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা আশা করছি— বহুদলীয় গণতন্ত্রের স্বার্থে এই বিধানটি আগের মতো বহাল থাকবে। কারণ, আমরা মনে করি অনেক দলের আকার ছোট হলেও সেখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নেতৃত্ব আছেন। তারা নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদে আসতে পারলে জাতীয় সংসদ সমৃদ্ধ হবে। বহু দলের, বহু আদর্শের প্রতিনিধিত্ব থাকলে জাতীয় সংসদটা সমৃদ্ধ হয়, আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে তারা ভূমিকা রাখতে পারবেন। আর যেসব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল জোটভুক্ত হয়ে নির্বাচন করতে চায়, তারা হয় নিজেদের প্রতীকে কিংবা জোটবদ্ধ অন্য দলের প্রতীকে নির্বাচন করার যে স্বাধীনতা আগে যে বিধান ছিল, সেটা বহাল রাখা হোক।
আইন উপদেষ্টা কী বলেছেন— জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন বলেন, তিনি সরকারের কাছে বিষয়টি তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন এবং সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তারপর কী করা যায়, সেটা বিবেচনা করে দেখবেন।
তিনি বলেন, আমি নির্বাচন সংক্রান্ত সংস্কার কমিশনের সমালোচনা করতে চাই। কারণ, তারা এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করেনি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনেও বিষয়টি আলোচিত হয়নি। এ বিষয়ে কোনো ঐকমত্যও প্রতিষ্ঠা হয়নি। হঠাৎ করে নির্বাচন সংস্কার কমিশন একটি বিষয় আরোপ করবে, সেটা সঠিক নয়।




