ads

বুধবার , ২৮ জুন ২০২৩ | ১২ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

ঈদুল আয্হা ও কুরবানি প্রসঙ্গ

ড. আবদুল আলীম তালুকদার
জুন ২৮, ২০২৩ ৫:৫৬ অপরাহ্ণ

মুসলিম জাতির সবচেয়ে বড় দুটি ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে দ্বিতীয়টি হচ্ছে ঈদুল আয্হা যা সাধারণতঃ প্রতি চান্দ্রবর্ষের যিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এই উৎসবকে কুরবানির ঈদ, ঈদুজ্জোহা বা ইয়াওমুন্ নহর নামেও অভিহিত করা হয়। ঈদুল আয্হা মূলতঃ আরবি ভাষার দুটো শব্দের মিশ্রণ। ঈদ ‘আউদুন’ মূলধাতু থেকে নির্গত আরবি শব্দ। এর অর্থ বার বার ফিরে আসা, প্রত্যাবর্তন করা। প্রতি বছরই নিয়মিতভাবে দু’বার করে এর আগমন ঘটে; তাই একে ঈদ নামকরণ করা হয়েছে। অতএব ঈদ অর্থ ফিরে আসার আনন্দ। তাই আরব্য সূফিসাধক ও দার্শনিক ইবনুল আরাবি বলেছেন, ঈদ নামকরণ করা হয়েছে এ কারণে যে তা প্রতিবছর নতুন করে সুখ, উৎসাহ, উদ্দীপনা ও আনন্দ নিয়ে আমাদের কাছে ফিরে আসে। আবার কেউ কেউ বলেছেন, এ দিনে আল্লাহ্ তা‘আলা বান্দার প্রতি রহমতের দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন বলে এ দিনকে ঈদের দিন বলা হয়। আবার ‘ঈদ’ শব্দটির অর্থ উৎসব, উদ্যাপন, ভোজের দিন, ছুটির দিন ইত্যাদি অর্থেও ব্যবহৃত হয়। আর ‘আয্হা’ শব্দটির অর্থ বলিদান, ত্যাগ, উৎসর্গ ইত্যাদি। অতএব ঈদুল আয্হা শব্দের অর্থ হলো ত্যাগের উৎসব, বিসর্জনের উৎসব। আরবি ছাড়া অন্য ভাষায় এই উৎসবের নাম প্রায়ই স্থানীয় ভাষায় বলা হয়ে থাকে। যেমন বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চলে কুরবানির ঈদ, বড় ঈদ; মিশর, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে এটি ঈদুল বাক্বারা, আফগানিস্তান ও ইরানে ঈদে কুরবান নামে অভিহিত করা হয়। চীনা ভাষায় ঈদুল আয্হাকে বলা হয় কুরবান জিয়ে আর জিন্জিয়াং প্রদেশের উইঘুর মুসলিমেরা বলেন কুরবান হেইত। তুরস্কে কুরবান বইরামি, ত্রিনিদাদে বাক্বারা ঈদ। ইয়েমেন, সিরিয়া ও মিশরসহ উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোতে বলা হয় ঈদে কাবীর। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ায় বলা হয় হারি রাইয়া কুরবান। আর ফিলিপাইনে ঈদুলাদ্হা বা কুরবান ঈদ এবং ভারত ও পাকিস্তানে বলা হয় বক্রা ঈদ বা বরি ঈদ।

Shamol Bangla Ads

ঈদ উৎসবের প্রচলনের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় হযরত আনাস (রা.) হতে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। উক্ত হাদিসে তিনি বলেন, ‘রাসূল (স.) মক্কা থেকে হিযরত করে মদিনায় যাওয়ার পর দেখলেন যে সেখানকার লোকেরা জাহেলিয়াতের যুগের দু’টি উৎসব ‘নওরোজ’ ও ‘মেহেরজান’ দু’দিন পালন করে। অর্থাৎ মদিনাবাসীরা নববর্ষ উপলক্ষ্যে নওরোজ ও বসন্তকাল উপলক্ষ্যে মেহেরজান উৎসব পালন করে এবং সেখানে নানাবিধ আনন্দ-ফুর্তি, রঙ-তামাশা ও খেলাধুলার আয়োজন করে; যার মধ্যে যথেষ্ঠ পরিমাণে অশ্লীলতা, মদ্যপান ও বেহায়াপনার উপস্থিতি ছিল এবং মদিনার মুসলমানরা (আন্সার) তাতে অংশগ্রহণ করতে শুরু করে। তিনি তাদেরকে (মুসলমানদের) সতর্ক করে বললেন যে আল্লাহ্ পাক তাদেরকে জাহেলি যুগের এসব উৎসবের পরিবর্তে দু’টি উত্তম দিবস(উৎসব) দান করেছেন। আর তাহলো নহরের (যবেহ্) দিন ও ফিতরের (রোযা ভঙ্গের) দিন। অতএব এখন থেকে আগের উৎসব বন্ধ করে এ দু’টি দিনের নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানাদি পালন করতে শুরু করো।’ (সুনানে নাসায়ি: ১৫৫৬, আবু দাউদ:১১৩৪)। পরবর্তীতে যা ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আয্হা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

ঈদুল আয্হার দিন প্রত্যুষে ঈদগাহে যেয়ে দু’রাকায়াত ঈদের নামায আদায় করার পর এই দিনের প্রধান আ’মল হলো কুরবানি। কুরবানি শা’আইরে ইসলাম তথা ইসলামি নিদর্শনাবলীর অন্যতম। ইসলামি শরিয়তে কুরবানির যে পন্থা ও পদ্ধতি নির্দেশিত হয়েছে তার মূলসূত্র ‘মিল্লাতে ইব্রাহিমি’তে বিদ্যমান ছিল। এজন্য কুরবানিকে ‘সুন্নাতে ইব্রাহিমি’ নামে অভিহিত করা হয়। মহান আল্লাহ্ পাক সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন, ‘আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্যে কুরবানীর এক বিশেষ রীতি-পদ্ধতি নির্ধারণ করে দিয়েছি, যেন তারা ওসব পশুর উপর আল্লাহ্র নাম উচ্চারণ করতে পারে যে সব আল্লাহ্ তাদেরকে দান করেছেন’ (সূরা আল হজ: ৩৪)।
আমাদের প্রিয়নবি হযরত মুহাম্মদ (স.) বলেছেন, ‘সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি কুরবানি করলো না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)। রাসূলে পাক (স.) আরো বলেছেন, ‘কুরবানির দিন রক্ত প্রবাহিত করা (যবেহ্ করা) অপেক্ষা আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয় মানুষের কোনো আমল হয় না’ (সুনানে তিরমিজি)। তিনি আরো বলেন, ‘যে ব্যক্তি প্রফুল্লচিত্তে কুরবানি আদায়ের নিয়্যতে কুরবানি করে কিয়ামতের দিন তার এবং জাহান্নামের মাঝে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে’ (আস্ সুনানুল কুব্রা লিল বায়হাকি)।

Shamol Bangla Ads

প্রায় চার হাজার বছর আগে মক্কা উপত্যকা ছিল জনবসতিহীন শুষ্ক ও প্রস্তরময় প্রান্তর। আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর নবি হযরত ইব্রাহিম (আ.)কে তাঁর মিশরীয় স্ত্রী হাজেরা ও তৎকালীন তাদের একমাত্র পুত্র ইসমাঈল (আ.)কে কেনান (ফিলিস্তিন) থেকে আরবের মক্কা নামক স্থানে নিয়ে আসার নির্দেশ প্রদান করেন। ইব্রাহিম (আ.) তাদেরকে মক্কার নির্জন প্রান্তরে রেখে কেনানে ফিরে যাওয়ার সময় তাদের জন্য কিছু খাবার ও পানি রেখে যান। কিন্তু তাদের খাদ্যদ্রব্য শীঘ্রই ফুরিয়ে গেল। কয়েকদিনের মধ্যে তারা ক্ষুধা ও পিপাসার কষ্টে কাতর হয়ে পড়লেন। একদিন পানির সন্ধানে বিবি হাজেরা সাফা ও র্মাওয়া পাহাড়ে উঠে দৌড়াদৌড়ি করছিলেন। এভাবে সাতবার এ পাহাড় ও পাহাড় দৌড়াদৌড়ি করে অবশেষে নিজ ছেলে ইসমাঈলের পাশে অবসন্ন হয়ে বসে পড়েন এবং এ অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহ্র কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন। তারপর বিস্ময়করভাবে তিনি লক্ষ্য করলেন শিশুপুত্র ইসমাঈলের পায়ের আঘাতে বালিতে রেখাঙ্কিত স্থান থেকে একটি ঝর্ণাধারা উৎপন্ন হয়ে প্রচুর পানি প্রবাহিত হচ্ছে। আর এই ঝর্ণাধারাকেই পরবর্তীতে জমজম কূপ নামে আখ্যায়িত করা হয়। তারপর সেই কূপ থেকে বিবি হাজেরা ও শিশুপুত্র ইসমাঈল পানি পান করে জীবন ধারণ করেন এবং সে স্থানে বসবাস শুরু করেন।

তার এক বছর পর আল্লাহ্ তায়ালা হযরত ইব্রাহিম (আ.)কে তার পরিবারের খোঁজ নিতে ফিলিস্তিন থেকে মক্কায় যাওয়ার নির্দেশ দেন। ফিরে এসে ইব্রাহিম (আ.) তার শিশুপুত্রকে সঙ্গে নিয়ে পাথর ও চুন-সুরকি দিয়ে আল্লাহর নির্দেশে সেখানে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন; সেটি হলো পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র মসজিদ কা’বা শরিফ। তার কিছুকাল পর ইসমাঈল (আ.) নবুয়ত লাভ করেন এবং আরব বেদুইনদের কাছে তাওহিদের বাণী প্রচার করতে শুরু করেন। এর কয়েক বছর পর ইসমাঈল (আ.) ও ইব্রাহিম (আ.) তাঁদের জীবনের সবচেয়ে কঠিন একটি পরীক্ষার সম্মুখীন হন। আল্লাহ্ পাক স্বপ্নযোগে হযরত ইব্রাহিম (আ.)কে তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তÍুকে তার নামে কুরবানি করার আদেশ দেন। এ প্রিয়বস্তু হলো তার একমাত্র সন্তান ইসমাঈল। আল্লাহর আদেশে ইব্রাহিম (আ.) তা পালনের প্রস্তÍুতি গ্রহণ করেন। প্রিয়পুত্র ইসমাঈলকে কুরবানি করতে নিয়ে যাওয়ার পথে বিতাড়িত শয়তান তাদেরকে আল্লাহর আদেশ পালন থেকে বিরত রাখতে কুমন্ত্রণা দেয়ার চেষ্টা করলে তারা কংকর নিক্ষেপ করে সেই শয়তানকে বিতাড়ন করেন। শয়তানের প্রতি তাদের এ প্রত্যাখানের কারণে সেই স্মৃতিকে ধারণ করে এখনো হাজি সাহেবেরা হজ্জের সময় মিনার ওই স্থানে শয়তানকে কংকর নিক্ষেপ করেন।

তারপর হযরত ইব্রাহিম (আ.) আল্লাহ্ তায়ালার আদেশ পালনের উদ্দেশ্যে প্রাণপ্রিয় জ্যেষ্ঠ পুত্র হযরত ইসমাঈল (আ.)কে তাঁর (হযরত ইসমাঈলের) পূর্ণ সম্মতিতে কুরবানি করতে উদ্যত হন। মক্কার নিকটস্থ ‘মিনা’ নামক স্থানে ৩৮০০ (সৌর) বছর পূর্বে এ মহান কুরবানির উদ্যোগ নেওয়া হয়। তাঁর ঐকান্তিক নিষ্ঠায় সন্তুষ্ট হয়ে আল্লাহ্ তায়ালা হযরত ইবরাহিম (আ.)কে তাঁর স্থলে একটি পশু কুরবানি করতে আদেশ দেন। আল্লাহ্র আদেশে প্রিয়তম বস্তুকে কুরবানি করার ঐকান্তিক আগ্রহ ব্যক্ত করার মাধ্যমে ইবরাহিম (আ.) আল্লাহ্র প্রতি যে অবিচল আনুগত্য ও গভীর অনুরাগ প্রকাশ করেছেন তার স্মরণে মুসলমানরা প্রতি বছর ১০ জিলহজ ঈদুল আয্হা উদ্যাপন ও কুরবানি করে থাকেন। নযিরবিহীন নিষ্ঠার এ মহান ঘটনাকে স্মৃতিতে রেখে আজও মিনায় এবং মুসলিম জগতের সর্বত্র আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে পশু কুরবানির রীতি প্রচলিত রয়েছে। উৎসর্গকৃত পশু যা এক আল্লাহর উদ্দেশ্যে যবেহ্ করা হয়। আত্মীয়-স্বজন বিশেষত দুঃস্থ দরিদ্রদের মধ্যে যা বিতরণ করে আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক তাঁর সান্নিধ্য লাভ করার চেষ্টা চালানো হয়, সে সার্থক প্রচেষ্টার যে আত্মিক আনন্দ তা-ই ঈদুল আয্হা নামে অভিহিত। এ দিনে মিনায় হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর অনুপম কুরবানির অনুসরণে কেবল হাজিদের জন্য নয়, বরং মুসলিম জগতের সর্বত্র সকল সক্ষম মুসলমানদের জন্য এ কুরবানি করা ওয়াজিব।

ইসলামি শরিয়ত মতে, কুরবানির পশু নির্ধারিত বয়সের হতে হবে ও কতকগুলো দৈহিক ত্রুটি (অন্ধ, খোড়া, শিংভাঙা, কানকাটা ইত্যাদি) থেকে মুক্ত হওয়া বাঞ্চনীয়। ঈদের নামাযের পর থেকে কুরবানির সময় আরম্ভ হয়। পরবর্তী দুইদিন (মতান্তরে তিন দিন) স্থায়ী থাকে এবং শেষ দিনের সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে কুরবানি করার সময় শেষ হয়ে যায়।
গরু, মহিষ, উট অনধিক সাত জনের পক্ষে এবং ছাগল, ভেড়া, দুম্বা শুধু একজনের পক্ষে কুরবানি দেওয়া জায়েজ। বাংলাদেশে প্রধানত গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ কুরবানি দেওয়া হয়। কখনও কখনও আমদানীকৃত স্বল্পসংখ্যক উটও কুরবানি দেওয়া হয়।
যে ব্যক্তি কুরবানি দিবেন সে নিজেই কুরবানির পশু যবেহ্ করা সুন্নত; তাঁর পক্ষে অন্য কেউ যবেহ্ করলেও তা জায়েজ হবে। পবিত্র কুরআনুল কারিমে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে যে, ‘এই কুরবানির রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না, এর গোশ্তও না বরং তাঁর কাছে পৌঁছায় কেবল তোমাদের তাক্বওয়া’ (সূরা হজ: ৩৭)। জাহিলিয়্যাতের যুগে প্রতিমার গায়ে বলির রক্ত মাখানো হতো এবং সেই গোশ্ত প্রতিমার প্রসাদরূপে বিতরণ করা হতো। ক্ষেত্রবিশেষে নরবলি দেওয়ারও প্রথা ছিল। কুরবানি নরবলির বীভৎস প্রথা চিরতরে বিলুপ্ত করে এবং বলিকৃত পশুর রক্ত মাখানো ও প্রতিমার প্রসাদরূপে বিতরণের প্রথারও মূলোচ্ছেদ করে। একই সঙ্গে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয় যে, তাকওয়ার চূড়ান্ত অর্থ হলো, প্রয়োজন হলে একজন মু’মিন তাঁর সবকিছু এমনকি নিজের জীবনটিও আল্লাহর নামে কুরবানি করতে সর্বদায় প্রস্তুত। কারণ ‘আল্লাহ্ তায়ালা মু’মিনের জান-মাল ক্রয় করেছেন জান্নাতের বদলে’ (সূরা আত তাওবাহ্ : ১০০)। এজন্যই কুরআনে পাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ‘অনন্তর তোমার প্রতিপালক প্রভুর জন্য নামায আদায় কর এবং কুরবানি কর’(সূরা আল-কাউসার : ২)।

কুরবানির পশুর গোশ্ত তিন ভাগের একভাগ মালিক, একভাগ আত্মীয়-স্বজন ও বাকি একভাগ দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করা ওয়াজিব। এতে দরিদ্রদের প্রতি ধনীদের দায়িত্ব পালনের একটি সুযোগ ঘটে এবং একই সঙ্গে ধনি-দরিদ্রের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। আর কুরবানির গোশ্ত অমুসলিমদের মাঝে বিতরণ ও তাদেরকে রান্না-বান্না করে খাওয়ালেও এতে দোষের কিছু নেই। কুরবানিকৃত পশুর চামড়া নিজে ব্যবহার করার বা অন্যকে দান করার অনুমতি রয়েছে। কিন্তু চামড়া, গোশ্ত, হাড়, ভূরি, চর্বি অর্থাৎ নিজ কুরবানীর কোনো কিছু বিক্রি করে বিক্রয়লব্ধ অর্থ ভোগ করা জায়েজ নেই। কুরবানির পশুর চামড়া বা তার বিক্রয়লব্ধ অর্থ দরিদ্রদের কিংবা মাদ্রাসা-মক্তবে বা এতিমখানায় দান করা দুরস্ত আছে।
পরিশেষে বলা যায়, কুরবানি তথা ঈদুল আয্হা মুসলমানদের নিছক ধর্মীয় উৎসব নয় বরং পরিশুদ্ধ জীবন গঠনের নিয়মতান্ত্রিক অনুশীলনও বটে। মহান আল্লাহ্ পাক আমাদের সবাইকে ঈদুল আয্হা ও কুরবানীর প্রকৃত মাহাত্ম অনুধাবন করার তৌফিক দান করুন।

লেখক: কবি, প্রাবন্ধিক, শিক্ষাবিদ ও ইসলামী চিন্তাবিদ।

Need Ads

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

Shamol Bangla Ads
error: কপি হবে না!