দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি : কুমিল্লার দেবিদ্বারে ভুল চিকিৎসায় সুজাত আলী সরকারী কলেজ’র সাবেক জিএস, যুবদল নেতা মোঃ ইউনুছ সরকারের মৃত্যুতে ফুঁসে উঠেছে স্থানীয় জনগণ। সোমবার দিবাগত রাত ১২টায় উপজেলা সদরের ‘দেবিদ্বার মেডিকেল সেন্টারে’ তার মৃত্যুর পর বিক্ষুব্ধ জনতা ওই হাসপাতালে ব্যপক ভাংচুর চালায়। দায়ীদের অবিলম্বে গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে বুধবার সকালে কয়েক শত জনতা ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ মিছিলসহকারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাও ও ‘দেবিদ্বার মেডিকেল সেন্টারে’র স্বত্বাধিকার হাফেজ মেজবাহ উদ্দীন খোকনসহ যাদের অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় ইউনুছের মৃত্যু হয়েছে ডাঃ আনোয়ারুল হক ও ডাঃ শরীফ হাসানকে ২৪ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবীতে স্মারকলিপি প্রদান করে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হোসেন এসময় দোষি ব্যক্তিদের ২৪ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক শান্তিদানের আশ্বাস দিয়েছেন।
বিক্ষোভকারীরা কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে এবং দেবিদ্ধার নিউমার্কেট মুক্তিযোদ্ধা চত্তরের সামনে বেশ কিছু টায়ারে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। বিশিষ্ট ব্যবসায়ি মোঃ খলিলুর রহমান’র সভাপতিত্বে অবরোধে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট শিল্পপতি এএফএম তারেক মূন্সী, মোঃ নজরুল ইসলাম সরকার, নিহতের ভাই কবির আহমেদ সরকার, মোঃ জহিরুল ইসলাম, মোঃ অলিউল্লাহ সরকার, মোঃ রফিক সরকার, মাছুম রানা, ময়নাল হোসেন লিপু প্রমূখ। একই সময়ে বিক্ষোভকারীদের একাংশ ‘মুক্তিযুদ্ধ চত্তরে’ মানববন্ধন করেছে।
প্রায় ২ঘন্টা ধরে অবরোধ চলাকালে অবরোধ স্থলের দু’পার্শ্বে ঢাকা-চট্রগ্রাম, ব্রাক্ষèণবাড়িয়া-সিলেট, কুমিল্লা জেলাসদরসহ বিভিন্ন জেলায় যাতায়তকারী যানবাহন ও মাল পরিবহনকারী কয়েকশত যানবাহন আটকা পড়ে। এতে দূরপাল্লার যাত্রীরা ভোগান্তির স্বীকার হয়। সংবাদ পেয়ে দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও দেবিদ্বার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে এসে দায়ীদের দ্রæত গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেন।
উল্লেখ্য, গত সোমবার দিবাগত রাতে মোঃ ইউনুছ সরকার’র তার পিত্তথলিতে পাথর অপসারন করতে সন্ধ্যা ৭টায় দেবিদ্বার ‘মেডিকেল সেন্টারএ ভর্তী হন। রাত পৌনে ১০টায় মেডিকেল সেন্টারের দ্বিতীয় তলার অপারেশন থিয়েটারের কক্ষে ইউনুছ সরকারকে নিয়ে ওটি বয় মোঃ রাসেল আহমেদ পলাশসহ অভিযুক্ত চিকিৎসকগন অপারেশনের কার্যক্রম শুরু করেন। ডাঃ শরীফ হাসান (এনেসথেসিয়া) চেতনা নাশক ঔষধের মাধ্যমে তাকে অজ্ঞান করেন। ডাঃ আনোয়ারুল হক ও ডাঃ ওয়াহিদুজ্জামান’র নেতৃত্বে পেট ও নাভীর নিচে ৪টি স্থানে ফুটা করে। রাত ১২টায় মোঃ ইউনুছ সরকারের অবস্থা আশংকাজনক ভেবে ডাঃ আনোয়ারুল হক ও ডাঃ শরীফ হাসান হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্সটি নিয়ে দ্রæত পালিয়ে যায়। পরে রোগীর পক্ষের লোকজন ঘটনা আঁচ করতে পেরে উন্নত চিকিৎসা দিতে কুমিল্লা নেয়ার জন্য এ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করে। এসময নিহতের স্বজনেরা হাসপাতালে ব্যাপক ভাংচুর করে, ডাঃ ওয়াহিদুজ্জামান ও ওটি বয় মোঃ রাসেল আহমেদ পলাশ’র উপর চড়াও হয়। সংবাদ পেয়ে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। চিকিত্সক ডাঃ ওয়াহিদুজ্জামান তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
