ads

মঙ্গলবার , ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ | ৩রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

মানবিক মুল্যবোধ ও সামাজিক দায়বদ্ধতা ছাড়া উত্তরণের পথ নেই -এস.এম, আজিজুল হক

রফিকুল ইসলাম আধার , সম্পাদক
ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৪ ১২:১৪ অপরাহ্ণ

Azizঝঞ্জা বিক্ষুব্ধ পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামের দেশটিতেও রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার পাশাপাশি ধর্মীয় অঙ্গনে সৃষ্টি হচ্ছে নানা পার্থক্য ও বিভেদ। রাজনৈতিক দলের সাথে রাজনৈতিক দলের, ধর্মের সাথে ধর্মের, মানুষের সাথে মানুষের, সমাজের সাথে সমাজের, ভাইয়ের সাথে ভাইয়ের, পিতার সাথে সন্তানের, স্বামীর সাথে স্ত্রীর, শিক্ষকের সাথে ছাত্রের, উর্ধতন কর্মকর্তার সাথে অধস্তন কর্মচারীসহ প্রায় সব ক্ষেত্রে সম্পর্কের দুরত্ব বেড়ে গিয়ে সৃষ্টি হচ্ছে এক অস্বস্থিকর পরিস্থিতির। এই সেদিনও এমনটি ছিলনা। নুনের দামে পানির দামে খুন হচ্ছে মানুষ-শিশুও রেহাই পাচ্ছেনা এই পাষন্ডতা থেকে, পাশবিকতা থেকে। সমাজ সমাজ করে, দেশ দেশ করে চিল­াতে চিল­াতে, জনকল্যানের ঢল নামাতে অলখ থেকে কখন যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে মানবিক মুল্যবোধ-তা আমরা কেউই টের পাইনি। আমরা দেশের কল্যানের জন্য, ধর্মের কল্যানের জন্য নিজেদেরকে এতটাই উৎসর্গ করে ফেলেছি যে আমাদের হাতে মানবিক মুল্যবোধ নিয়ে চিন্তা করার সময় নেই। মানবিক মুল্যবোধহীন দেশ প্রেম, মানবিক মুল্যবোধহীন ধর্মীয় প্রেম আমাদের কোথায় নিয়ে দাঁড় করিয়েছে তা সা¤প্রতিক অবস্থাই বলে দেয়। রাষ্ট্র বিজ্ঞান, সমাজ বিজ্ঞান সর্বোপরি ধর্ম শাস্ত্র আমাদেরকে সব সময় মানবিক মুল্যবোধের গন্ডীতে থেকে সব কিছু পরিচালনার নির্দেশ দেয়। অথচ আমরা সেই মানবিক মুল্যবোধকে জলাঞ্জলী দিয়ে দেশপ্রেম ও ধর্ম প্রেমে মাতোয়ারা হয়ে গেছি। চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য রাজনৈতিক বিভেদ বা ধর্মীয় বিভেদকে দায়ী করে আমার আত্মতৃপ্তি পাওয়ার চেষ্টা করছি। প্রকৃত অর্থে এ অবস্থা থেকে স্থায়ী ভাবে পরিত্রাণ পাওয়ার একটাই উপায়, তা হলো মানবিক মুল্যবোধের কাছে নিজেকে সমর্পণ করা। যে জাতী ভাষার জন্য জীবন দিতে পারে, যে জাতী স্বাধীনতার জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করতে জানে-সেই জাতীকে রাজনৈতিক ভাবে, সামাজিক ভাবে, ধর্মীয় ভাবে দ্বিধাবিভক্ত করছে কারা? অলখ থেকে কারা কলকাঠি নাড়িয়ে সোনার দেশকে নরকপুরী বানাচ্ছে? একাত্তরের প্রেতাত্মার জীবন্ত রুপ দিতে কারা সেবাদাশের ভুমিকায় রোল প্লে করছে? এসব খতিয়ে দেখার এখনই সময়। দেরী করার মত সময় আমাদের হাতে খুব একটা বেশী আছে বলে মনে হয়না। রাজনীতির নামে বাড়াবাড়ি, ধর্মের নামে বাড়াবাড়ি আর কত? জাতীর প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্বৃত্তায়ন করার কুশিলবদের এখনই খুজে বেড় করে রাষ্ট্রীয় ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে-এদেশ কার? আন্তর্জাতিক মোড়লীপনা ও দুতিয়ালীর কাছে হার মেনে জাতীয় সত্বা কলঙ্কিত করা যাবেনা। শুধু মাত্র একাত্তরের হায়েনাদের দোশর নয় বরং সে সময়ের নাটের গুরুদের নটমন্দির গুড়িয়ে দিতে না পারলে বার বার দেশকে অস্থিশীল করে তুলবে ওরা। রাজনীতিতে রাজাকারদের অনুপ্রবেশের চাইতে বেশী ক্ষতি করছে অবসরপ্রাপ্ত কিছু আমলার অনুপ্রবেশ। রাজাকার আল বদর কোন না কোন রাজনৈতিক দলের সৃষ্টি একটি অপশক্তি। সে কারনে তারা অপশক্তির শক্তি প্রয়োগ করছে তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য। যে আমলার সাথে দেখা করতে এসে তার নিজের পিতাকে ঘন্টার পর ঘন্টা সচিবালয়ের গেটে ধর্ণা দিয়ে বসে থাকতে হয়েছে, সেই আমলা গ্রামবাংলার সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের সুখ দুঃখ কি করে বুঝবে? অথচ এরাই আজ বড় দু’টি দলের কলকাঠি নাড়াচ্ছে। এ সব আমলারা কোন আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য জীবনের শেষ বেলায় এসে রাজনীতি করার খায়েস হয়েছে? রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের পিছনে এ সব আমলাদের অপচেষ্টাকে খাটো করে দেখার অবকাশ নাই। সারা জীবন প্রজাতন্ত্রের চাকরগীরি করে শেষ বেলায় প্রভু হওয়ার এত খায়েস মোটেই ভাল উদ্দেশ্যে হতে পারেনা।

Shamol Bangla Ads

চলমান বা সা¤প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতার জন্য প্রকৃত অর্থে দায়ী দুই নেত্রীর অতি মাত্রায় গণতন্ত্রপ্রিয়তা। উভয় নেত্রী গণতন্ত্রকে এতই ভালবেসে ফেলেছেন যে, এজন্য মানুষ মরে মরুক, সম্পদ ধংস হয় হোক, যত খুশি পেট্রোল বোমা বা ককটেল ফাটে ফাটুক-তাতে ওনাদের কিছু আসে যায়না। মানুষ মরছে, সম্পদ ধংস হচ্ছে, স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি বিলুপ্ত হচ্ছে। ইয়াহিয়ার পোড়া মাটি নীতি গ্রহন করে রাজনীতির মাঠে নেমে আগুনের ফুলকি ছড়ানো যায় সত্যি, কিন্তু তাতে জনকল্যানের প্রশ্নটি অনুপস্থিতই থেকে যায়। গণতন্ত্র রক্ষার নামে আমাদের দেশের বৃহত দু’টি দলের প্রানান্তক প্রচেষ্টা দেখে বুক ভরে যায়। আর এই প্রচেষ্টার পদ্ধতিগত দিক দেখলে ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নিতে ইচ্ছা করে। শিক্ষার কম হার ও দারিদ্রতার মধ্য দিয়ে চলমান গণতন্ত্রের ধারায় ক্ষমতাই মুখ্য হয় রাজনীতিবিদদের কাছে। আর এই গণতান্ত্রিক ধারায় দেশপ্রেমহীন, মুল্যবোধহীন নেতৃত্ব ক্ষমতায় আসা মোটেই বিষ্ময়কর নয়। মানবিক মুল্যবোধহীন ও সামাজিক দায়বদ্ধতা ছাড়া নেতৃত্ব সব সময় মানসিক দ্বৈনতায় ভুগে থাকে। আমাদের বর্তমান অবস্থা অনেকটা এরকম-মানুষ মরে মরুক-সংবিধান রক্ষা করতে হবে, দেশ পোড়ে পুড়–ক-গণতন্ত্র রক্ষা করতে হবে, মানুষ দিয়ে কি হবে-যদি গণতন্ত্র রক্ষা না হয়, দেশ দিয়ে কি হবে- যদি সংবিধান রক্ষা না হয়। এমনটিই যেন সা¤প্রতিক রাজনীতির আদর্শ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখা ও নিয়ম রক্ষার নির্বাচনকে ইস্যু করে দেশ আজ আন্তর্জাতিক ভাবে হাসির পাত্রে পরিনত হয়েছে। একাত্তরের দারপ্রান্তে দেশ। আজকের প্রজন্ম একাত্তরের ভয়াল রুপ দেখেনি। আমাদের বড় দু’টি রাজনৈতিক দলের আশির্বাদে দু’হাজার তেরো/চৌদ্দ সালের শিশুরাও একাত্তরের ভয়াল রুপ দেখার দুর্লভ সৌভাগ্যের ভাগিদার হলো।
আমাদের দেশের বড় বড় রাজনৈতিক দল তাদের রাজনৈতিক কর্মকান্ড এতটাই বানিজ্যিকীকরণ করে ফেলেছেন-যে কারনে মানবিক মুল্যবোধ সম্পন্ন সামাজিক সেবাদাস হিসেবে পরিচিত নেতারা দল থেকে দিনের পর দিন ছিটকে পড়ছে। এ সব রাজনৈতিক দলের ভিতরে গণতন্ত্রেও ‘গ’ টুকুও অবশিষ্ট নেই-অথচ এরাই দেশের গণতন্ত্র রক্ষার নামে কি না করছে। রাষ্ট বিজ্ঞানে সজ্ঞায়ীত গণতন্ত্রের কুফলের ফল সব টুকু আমরা দেখি-কিন্তু গণতন্ত্রের সুফলের ফল আমাদের কাছে আজো অধরাই রয়ে গেছে। মানবিক মুল্যবোধহীন রাজনৈতিক কর্মকান্ড হীনমন্যতার জন্ম দেয় এবং এই হীনমন্যতার কারনে মানুষের সাথে মানুষের দুরত্ব ক্রমশ্য বেড়েই চলেছে। আমাদের রাজনৈতিক নেতারা কাজের পৃষ্ঠে কথা বলেননা-তারা শুধু কথার পৃষ্ঠে কথা বলার প্রতিযোগিতায় নিজেদেরকে উৎসর্গ করেছেন। এ যেন স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতার ময়দান। এসব হীনমন্যতা থেকে বেড়িয়ে আসতে না পারলে আগামী প্রজন্ম আমাদেরকে ক্ষমা নাও করতে পারে।

লেখক : সাংবাদিক, কলামিষ্ট।

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

Shamol Bangla Ads
error: কপি হবে না!