শ্যামলবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তানকে ‘নাক গলাতে’ নিষেধ করা হয়েছে। ১৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির হাইকমিশনারকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে তাকে দেওয়া একটি কূটনৈতিক পত্রে ওই নিষেধ করা হয়। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করা নিয়ে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে নিন্দা প্রস্তাব গৃহীত হওয়ায় ওই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ (কেন্দ্রীয় পার্লামেন্ট) ও ১১ ডিসেম্বর পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদে বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনা হয়। এছাড়া পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলী খান ১৪ ডিসেম্বর তাঁর ফাঁসির বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করেন।ওইসব ঘটনার জের ধরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকায় পাকিস্তানের হাইকমিশনার মিয়া আফরাসিয়াব মেহেদি হাশমি কুরেশিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। মিনিট বিশেক অপেক্ষার পর তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কবিষয়ক সচিব মুস্তাফা কামালের সঙ্গে দেখা করেন। প্রায় ৩০ মিনিটের আলোচনায় কাদের মোল্লার ফাঁসির পর পাকিস্তানের কার্যকলাপ নিয়ে বাংলাদেশের ক্ষোভ ও অসন্তোষের বিষয়গুলো কুরেশির কাছে তুলে ধরেন মুস্তাফা কামাল। এরপর তিনি পাকিস্তানের হাইকমিশনারের হাতে ৪ পৃষ্ঠার একটি চিঠি তুলে দেন।
অপরদিকে ঢাকায় পাকিস্তানের হাইকমিশনারকে যখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়, সে সময় ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে প্রায় ৫০ জন লোক। পাকিস্তান সিভিল সোসাইটির ব্যানারে বিক্ষোভ হলেও এতে অংশগ্রহণকারীরা ছিলেন স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর সদস্য। বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বাংলাদেশের নেতাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। তাঁরা বলেন, কাদের মোল্লার ফাঁসির মাধ্যমে ‘বিচারকে খুন’ করা হয়েছে। পরে তাঁরা একটি স্মারকলিপি দেন। এর আগে শুক্রবার জুমার নামাজের পর করাচি ও লাহোরে নিজেদের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জামায়াতে ইসলামী।
পাকিস্তানের হাইকমিশনারকে তলবের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী সন্ধ্যায় তাঁর দপ্তরে সাংবাদিকদের বলেন, কাদের মোল্লার ফাঁসি নিয়ে পাকিস্তানের নিন্দা প্রস্তাব অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে হাইকমিশনারকে ডেকে অত্যন্ত কড়া ও জোরালো ভাষায় প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কাদের মোল্লার ফাঁসি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ ব্যাপারে নাক গলাবেন না। নাক গলানোর কোনো সুযোগ নেই। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে এ নিয়ে প্রস্তাব গ্রহণ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল।