শ্যামলবাংলা ডেস্ক : নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে সংকট নিরসনে চিঠি আর ফোনালাপের মধ্য দিয়ে দিয়ে সংলাপের পথে নাটকীয় মোড় নিয়েছে। রাজনীতির চাকায় ফিরে এসেছে ভিন্ন গতি। ফের জেগে উঠেছে আশার আলো। আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক আগের দিনগুলোয় রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগ কে চালাবেন, কিভাবেই বা চলবে তা নিয়ে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের পাল্টাপাল্টি প্রস্তাব নিয়ে যখন সারা দেশে চলছে আলোচনার ঝড়, ঠিক তখনই শুরু হয়েছে বরফ গলা।
সংকট নিরসনে দ্রুত আলোচনা প্রয়োজন- এ কথা জানিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে ২২ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১১টায়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্বাক্ষরিত ওই চিঠি রাজধানীর মিন্টো রোডে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বাড়িতে পৌঁছে দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলু, বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবদিন ফারুক ও সাংসদ শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী। একই দিন দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল সরকারকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান। ওইসময় সংলাপের ওই উদ্যোগে াটকীয় মাত্রা পায় সৈয়দ আশরাফের একটি ফোন কলে।
সংবাদ সম্মেলনের এক পর্যায়ে এসে পাশে দাঁড়ানো ব্যক্তিগত সহকারী ফখরুলের দিকে এগিয়ে দেন ফোন। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের ক্যামেরা ও উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য থামিয়ে ফোন কানে দিয়ে আন্তরিক ভঙ্গিতে বিএনপির মুখপাত্র বলে ওঠেন, ‘স্লামালিকুম ভাই।’ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারে চোখ রাখা দেশের মানুষের সামনেই মিনিটখানেক চলে এই নাটকীয় কথোপকথন। এ পাশ থেকে ফখরুলকে বলতে শোনা যায়- ‘জ্বি ভালো আছি। আপনি ভালো আছেন? জ্বি, জ্বি। আচ্ছা আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আমরা আশা করি, আপনারা এটাকে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনাটা শুরু করবেন। আমরা এগিয়ে এসেছি। আপনারাও এগিয়ে আসবেন। থ্যাংক ইউ।’
বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে উপস্থিত সাংবাদিকসহ অনেকেই ততোক্ষণে বুঝে গেছেন, ফোনের ওপাশে এতোক্ষণ কথা বলছিলেন, আওয়ামী লীগের মুখপাত্র সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
ফোন রেখে মির্জা ফখরুল হাসিমুখে হাত নেড়ে ইশারা দেন- ‘হয়ে গেছে’। তার সংবাদ সম্মেলনের সুরও বদলে যায়। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার সঙ্গে সৈয়দ আশরাফ সাহেবের এখনই কথা হয়েছে। টেলিফোনের কথাবার্তার সব কিছুই আপনারা শুনেছেন। তিনি চিঠিটি কিছুক্ষণ আগে গ্রহণ করেছেন। উনি চিঠির জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সৈয়দ আশরাফ আমাকে জানিয়েছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দিনাজপুরে ট্র্যাভেল করছেন। ওই চিঠিটি তিনি সঙ্গে করে নিয়ে যাবেন। প্রধানমন্ত্রীকে এ বিষয়ে অবহিত করবেন।’ ফখরুল আশা প্রকাশ করেন, সরকারের পক্ষ থেকে তার চিঠির ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাবে। রাজনৈতিক সংকট নিরসনে ও নির্বাচনকালীন সরকার গঠনে সরকার ‘ইতিবাচক’ ভূমিকা রাখবে।