রাজু দে, বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম : ‘শৈশব, কৈশোর পেরিয়ে জীবনের শেষ প্রান্তে এসে বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করছি। মৃৃত্যুর পূর্ব পর্যন্তও সেতুটি দেখে যেতে হয় কি-না তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে’- আক্ষেপ ও না পাওয়ার আশংকায় সংশয়ের ওই উক্তি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার উত্তরভূষি গ্রামের বৃদ্ধ গোপাল চক্রবর্তীর।
জানা যায়, বোয়ালখালীর দক্ষিণ কড়লডেঙ্গা-পটিয়া ধলঘাট সীমান্তবর্তী হারগাজি খালের উপর নির্মিত ওই বাঁশের সাঁকো দিয়ে দুটি উপজেলার ৭ গ্রামের ২০ হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে আসছে। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এ বুড়া কালী বাড়ি সেতুটি প্রায় ৭০ বছর পূর্বে ভেঙ্গে যায়। এরপর কেউই সেতুটি নিমার্ণের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। এলাকাবাসী জানায়, দুটি উপজেলার সাংসদসহ জনপ্রতিনিধিরা এ যাবত নির্বাচনের আগে সেতুটি নির্মাণের প্র“তিশ্র“তি দিয়েছিলেন। কিন্তু কেউ কথা রাখেননি। জন্মাবধি দূভোর্গ পোহাতে হচ্ছে ওই এলাকার মানুষগুলোর। ফলে অনগ্রসর রয়ে গেছে এ জনপদ। সেতুটি ভেঙ্গে গেলেও এখনো ইট, সুড়কির নিদর্শন বহন করে চলেছে । যাতায়াত অব্যাহত রাখতে স্থানীয়রা চাঁদা তুলে প্রতিবছর বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে আসছে। সেতুর পাশেই রয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সুপ্রাচীন ধলঘাট বুড়া কালী মন্দির। সেতুটির উত্তর পাড়ে রয়েছে বোয়ালখালীর করলডেঙ্গা ও দক্ষিণ পাড়ে পটিয়া উপজেলার ধলঘাট ইউনিয়ন।
চট্টগ্রাম-৭ আসনের সাংসদ মঈনউদ্দীন খান বাদল গত কয়েক মাস আগে এলাকাটি পরিদর্শন করে সেতু নির্মানের আশ্বাস দেন। তবে এখনো সেতু নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়নি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এলাকার সড়কগুলো যান চলাচলের অনুপযোগী। সাইকেলই একমাত্র ভরসা। এ যাবত অনেকেই সাঁকো থেকে পড়ে আহত হয়েছেন। মুমুর্ষু রোগী আর শিক্ষার্থীরা পার হয় ঝুকি নিয়ে। সামাজিক আচার অনুষ্ঠান সেতুর জন্য আড়ম্বরপূর্ণ করা যায় না। সেতুটি নির্মিত হলে চেহারা পাল্টে যাবে ওই জনপদের।
এ ব্যাপারে করলডেঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হামিদুল হক মান্নান বলেন, পটিয়া বোয়ালখালীর সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর করার জন্য সেতুটি নির্মাণ করা জরুরী। তবে নির্বাচিত হওয়ার পর একাধিকবার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও বোয়ালখালী প্রকল্প কর্মকর্তা বরাবরে আবেদন করেও সাড়া পাইনি। তবে বোয়ালখালী উপজেলা প্রকৌশলী সুজিত কান্তি মজুমদার ও পটিয়া উপজেলা প্রকৌশলী আনিসুর রহমান সোহেল জানান, সেতুটি নির্মাণে কোন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়নি।
বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক খন্দকার নুরুল হক বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়নি, তবে পটিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকেয়া পারভীন জানান, তিনি একাধিকবার ওই এলাকা পরিদর্শন করে বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করেছেন ।
