শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের কালঘোষা নদীর হালচাটি এলাকায় একটি ব্রিজের অভাবে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন হাজারও মানুষ। দেশ স্বাধীনের পর থেকেই এ এলাকায় একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি উঠলেও দীর্ঘ ৫০ বছরেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে ওই পথে চলাচলকারী ৪ গ্রামের হাজারও মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভারত সীমান্তঘেঁষা কালঘোষা নদীর হালচাটি এলাকার ওই পথে প্রতিদিন হালচাটি, গান্দিগাঁও, নওকুচি, গজনী গ্রামের হাজারও মানুষ যাতায়াত করে থাকে। এখানে একটি ব্রিজ না থাকায় এলাকাবাসীর পাশাপাশি বিজিবি টহল ও বন বিভাগের কর্মকাণ্ডও মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। নদীর উত্তর পাশে ভারত সীমান্ত ঘেঁষে আদিবাসী কোচ পল্লী। ওই পল্লীতে প্রায় অর্ধশতাধিক কোচ সম্প্রদায়ের লোকের বসবাস। এখানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। হালচাটি গ্রামের আগ্নেশ্বর কোচ, সুরেন্দ্র চন্দ্র কোচ, বাহাদুর কোচসহ গ্রামবাসীরা জানান, ওই নদীর হালচাটিতে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি গ্রামবাসীদের দীর্ঘদিনের। বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে আশ্বাস পাওয়া গেলেও আজও তা বাস্তবায়িত হয়নি। আক্ষেপের সুরে তারা বলেন, নির্বাচনের সময় এলে জনপ্রতিনিধিরা ওই নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে আমাদের কাছে ভোট নেয়। কিন্ত নির্বাচনের পারে কেউ আর আমাদের খোঁজ-খবর নেন না। ওই নদীর উপর একটি ব্রিজ না থাকায় এ গ্রামের মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। শুষ্ক মৌসুমে যেমন তেমন, বর্ষা মৌসুমে পথচারীদের দুর্ভোগের সীমা থাকে না। প্রায় ৬ বছর পূর্বে সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ সরকার গ্রামবাসীদের দুর্ভোগ লাগবে এলজিএসপির অর্থে একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, অপরিকল্পিতভাবে সেতুটি নির্মাণ করায় পাহাড়ি ঢলের পানির তোড়ে সেতুটি বিধ্বস্ত হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা ফের বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এরপর আর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।

গজনী ফরেস্ট বিট কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এখানে একটি ব্রিজের অভাবে তাদের দাপ্তরিক কর্মকাণ্ড মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়। ব্রিজ না থাকায় নিলামে বিক্রি করা বনের কাঠ পারাপারে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। কোমলমতি শিশু কিশোররা নদী পাড়ি দিয়ে স্কুল কলেজে যেতে পারে না। বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের নকসী সীমান্ত ফাঁড়ির কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার উমর ফারুক বলেন, এ নদীর উপর একটি ব্রিজের অভাবে জরুরি কোনো কাজে বিজিবি’র টহল দল সীমান্তে পৌঁছাতে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। কাংশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, কালঘোষা নদীর হালচাটিতে একটি ব্রিজ নির্মাণের বিষয়ে উপজেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায় বহুবার আবেদন-নিবেদন করা হয়েছে। অনেক সময় আশ্বাসও পাওয়া গেছে। কিন্ত আজও তা বাস্তবায়িত হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। সরেজমিনে গিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
