ads

সোমবার , ১১ মে ২০২০ | ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

করোনা আক্রান্ত মাকে দেখতে দরজায় উঁকি ১৮ মাসের সন্তানের

শ্যামলবাংলা ডেস্ক
মে ১১, ২০২০ ৫:২৬ অপরাহ্ণ

শ্যামলবাংলা ডেস্ক : ‌১৮ মাসের বাচ্চাকে কাছে পেয়েও কোলে নিতে পারি না, আদর করা হয় না। বাচ্চাটা সারাক্ষণ শুধু মা, মা বলে। প্রথম প্রথম ভিডিওকল রিসিভ করত, কথা বলত এখন ভিডিওকলও সে ধরে না। দরজার নিচ থেকে মাকে এক পলক দেখার জন্য উঁকি দেয়। মায়ের কাছে আসতে কান্না করে। গৃহপরিচারিকার কাছে বাবুরা আছে। ওই ওদের দেখা শোনা করছে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বললেন ডা. মাফরুহা মাহবুব। চীনের উহানে উৎপত্তির পর করোনা ভাইরাস এখন সারাবিশ্বে তাণ্ডব চালাচ্ছে। করোনার থাবা থেকে রক্ষা পায়নি বাংলাদেশও। প্রাণঘাতি এ ভাইরাসে শুধু সাধারণ মানুষ নয় প্রাণ হারিয়েছেন এ যুদ্ধে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়া চিকিৎসক, সাংবাদিক, পুলিশসহ অনেকেই।করোনার ক্রান্তিলগ্নে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন চিকিৎসকরা। এমনই দু’জন সম্মুখযোদ্ধা ডা. রেজাউর রহমান ও ডা. মাফরুহা মাহবুব দম্পতি। ডা. রেজাউর রহমান পটুয়াখালী বক্ষব্যাধি ক্লিনিকের চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ডা. মাফরুহা মাহবুব ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অ্যানেস্থাসিয়া বিভাগের মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত।

Shamol Bangla Ads

এই চিকিৎসক দম্পতির সাড়ে ৬ বছর বয়সী রাদিয়া রেজা ও ১৮ মাস বয়সী রাফসান রেজা নামের দুটি সন্তান রয়েছে। ১৮ মাসের দুধের বাচ্চা বাসায় রেখে যিনি আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিয়েছেন, তিনি আজ করোনায় আক্রান্ত। গত ১৮ এপ্রিল মাফরুহা মাহবুবের করোনা পজিটিভ আসে। সেই সাথে তাকে ঢাকায় তার নিজ বাসায় আইসোলেশনে রাখা হয়।

ডা. মাফরুহা মাহবুব বলেন, করোনা পজিটিভ আসার পর থেকে বাসায় আলাদা রুম, আলাদা খাবার, আলাদা সবকিছু ব্যবহার করছি। সবচেয়ে বড় ত্যাগ ১৮ মাসের বাচ্চাকে কাছে পেয়েও কোলে নিতে পারি না, আদর করা হয় না। বাচ্চাটা সারাক্ষণ শুধু মা, মা বলে। প্রথম প্রথম ভিডিওকল রিসিভ করত, কথা বলত এখন ভিডিওকলও সে ধরে না। দরজার নিচ থেকে মাকে এক পলক দেখার জন্য উঁকি দেয়। মায়ের কাছে আসতে কান্না করে। গৃহপরিচারিকার কাছে বাবুরা আছে। ওই ওদের দেখা শোনা করছে। তিনি আরও বলেন, আমরা সবসময় মানুষের সেবা দিতে প্রস্তুত। আমার স্বামী এখানে থাকে না। তাই ছোট বাচ্চাদের রেখে কীভাবে দায়িত্ব পালন করব সেটা নিয়ে সমস্যা ছিল। কিন্তু আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজন ও আমার বাবা-মা আমাকে পূর্ণ সাহস দিয়েছেন প্রতিনিয়ত। গৃহপরিচারিকা বাচ্চাদের খেয়াল নিচ্ছে। স্বামী প্রতিনিয়ত খোঁজ নিচ্ছে। ঊর্ধ্বতনরা খোঁজ নিচ্ছে। প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করছে। এখন আর ভয় করে না।

Shamol Bangla Ads

ডা. রেজাউর রহমান বলেন, ‘আমার স্ত্রী চিকিৎসক। সে ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার। গত ১৮ এপ্রিল তার করোনা পজিটিভ আসে। বর্তমানে ঢাকার বাসায় আইসোলেশনে আছে। আমাদের দু’টি সন্তান আছে।’ তিনি বলেন, আমার এই সময় স্ত্রী-সন্তানদের পাশে দাঁড়ানোর কথা ছিল। কিন্তু চিকিৎসক হিসেবে দেশের এই ক্রান্তিকালে আমি ঘরে বসে থাকতে পারি না। আর আমার এখান থেকে (ঢাকার বাসায়) গিয়ে লাভ কী? কর্মস্থল ত্যাগ করা নিষেধ। তাই কর্মস্থলে আছি, রোগী দেখছি। এই মহামারি লড়াই করার জন্য এটাই আমার প্রেরণা দিচ্ছে।

রেজাউর রহমানের মা মোমেনা রহমান বলেন, ছেলে ও পুত্রবধূ দুজনই চিকিৎসক। আজ পুত্রবধূ করোনায় আক্রান্ত। আমাদের ছোট নাতিরা বাবা-মাকে কাছে পাচ্ছে না। আমরা তাদের কাছে পাচ্ছি না। দেশের এই ক্রান্তিকালে ছেলে ও পুত্রবধূ দায়িত্ব পালন করবে এটা স্বাভাবিক। তাদের জন্য আমাদের গর্ব হয়।

error: কপি হবে না!