ads

বৃহস্পতিবার , ৪ অক্টোবর ২০১৮ | ৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

শেরপুরে ধর্ষণের পর মাথা ন্যাড়া করা সেই স্কুলছাত্রীর মামলায় ধর্ষকের যাবজ্জীবন

শ্যামলবাংলা ডেস্ক
অক্টোবর ৪, ২০১৮ ৪:২৪ অপরাহ্ণ

মহিলা পরিষদের সহায়তায় ৭ বছর পর বিচার পেল পরিবার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শেরপুরে অপহরণ ও ধর্ষণের পর মাথা ন্যাড়া করা হতদরিদ্র হিন্দু পরিবারের সেই স্কুলছাত্রীর চাঞ্চল্যকর মামলায় ধর্ষক শাহজামাল ওরফে শাহ আলমের (২৭) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- ও ভিকটিমকে ১ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের রায় দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। ৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ আখতারুজ্জামান একমাত্র আসামীর উপস্থিতিতে ওই রায় ঘোষণা করেন। দ-িত শাহ আলম সদর উপজেলার চৈতাজানী জামতলী এলাকার মতিউর রহমানের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় সে একেবারেই ভাবলেশহীন ছিল। ওইসময় মামলা ও ভিকটিমকে সহায়তাকারী মহিলা পরিষদের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি এডভোকেট গোলাম কিবরিয়া বুলু চাঞ্চল্যকর ওই মামলার রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ২০১১ সালের ২০ জুন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শ্রীবরদী উপজেলার ঘোনাপাড়া গ্রামের হতদরিদ্র হিন্দু পরিবারের মেয়ে ও পার্শ্ববর্তী কুমড়ী কাটাজান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী (১৫) স্কুলে যাওয়ার পথে সদর উপজেলার চৈতাজানি জামতলী এলাকার মতিউর রহমানের লম্পট পুত্র মাদ্রাসা ছাত্র শাহজামাল ওরফে শাহ আলম (২০) কৌশলে তাকে প্রথমে একটি মুদির দোকানে ও পরে পাশের বসতঘরে নিয়ে ভয় দেখিয়ে বিস্কুট ও পানি খাওয়ায়। এরপর সেই স্কুলছাত্রী অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে একাধিক দফায় ধর্ষণ করে লম্পট শাহ আলম। অন্যদিকে ওই স্কুলছাত্রী বাড়িতে না ফেরায় খোজাখুজি করেও না পেয়ে ভেঙে পড়ে তার পরিবারের লোকজন। ওই অবস্থায় ঘটনার ৪ দিনের মাথায় অর্থাৎ ২৩ জুন দুপুরে সেই স্কুলছাত্রীকে অসুস্থ্য অবস্থায় তার বাড়ির কাছে নামিয়ে দিয়ে সটকে পড়ে একটি অপরিচিত অটোরিক্সা। বাড়ির লোকজন বেরিয়ে স্কুলের জামা কাপড় ব্যতীত তাকে দেখতে পায় পরনে জিন্সের ফুলপ্যান্ট, গায়ে হাফহাতা চেক গেঞ্জী ও ন্যাড়া করা মাথায় ক্যাপ পরিহিত অবস্থায়। ওই অবস্থায় উদ্ধারের ৩ দিন পর কথাবার্তা বলতে শুরু করে মেয়েটি। এরপর ২৫ জুন তার বাবা বাদী হয়ে লম্পট শাহ আলম ও তার ৫ আত্মীয়কে আসামী করে শ্রীবরদী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ভিকটিমের পরিবারের পাশে দাড়ায় মহিলা পরিষদ। এরপর ঘটনাটি বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত হলে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। কিন্তু পুলিশ প্রথমদিকে ব্যাপক তৎপর হয়ে দফায় দফায় লম্পট শাহ আলমের আত্মীয়-স্বজনকে গ্রেফতার এবং সর্বশেষ ওই বছরের ৯ জুলাই শাহ আলমকে গ্রেফতার করে গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে উপস্থাপনসহ তাকে দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলে জানালেও পরবর্তীতে ওই বছরের ১৫ অক্টোবর আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট (তথ্যগত ভুল) দাখিল করে। এরপর মহিলা পরিষদের সহায়তায় ২৫ অক্টোবর বাদীপক্ষ পুলিশের দায়ের করা ওই চূড়ান্ত রিপোর্টের বিরুদ্ধে নারাজী দাখিল করলে ২০১২ সালের ২৯ এপ্রিল সংবাদদাতা বাদী ও ভিকটিমের জবানবন্দি গ্রহণ করে নারাজী মঞ্জুর করেন এবং আসামী শাহ আলমের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আমলে নেন। এ পর্যায়ে ভিকটিমের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হলে তাকে রাখা হয় রাজধানী ঢাকায় মহিলা পরিষদের শেল্টারহোমে। ব্যবস্থা করা হয় তার পড়াশোনার। এরই ফাঁকে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে যায় লম্পট শাহ আলম। এরপর ২০১৪ সালের ২০ জুলাই ওই মামলায় আসামী শাহ আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন এবং অভিযোগ গঠনের দীর্ঘ ২ বছর পর ২৮ আগস্ট শুরু হয় বিচার। এরপর দীর্ঘ সময়ে বাদী, ভিকটিম ও চিকিৎসকসহ ৮জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
এদিকে ওই মামলায় সংবাদদাতা বাদীপক্ষে মহিলা পরিষদের নিযুক্ত সিনিয়র আইনজীবী প্রদীপ দে কৃষ্ণ বলেন, হতদরিদ্র হিন্দু পরিবারের সেই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর মাথা ন্যাড়া করার চাঞ্চল্যকর মামলাটিরও অপমৃত্যু হয়েছিল। পরবর্তীতে নারাজীর প্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল তা গ্রহণ করায় বাদীপক্ষের ন্যায় বিচার পাওয়ার পথ সুগম হয়। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে জেলা মহিলা পরিষদের সভানেত্রী জয়শ্রী দাস লক্ষ্মী ও সাধারণ সম্পাদক লুৎফুন্নাহার বলেন, অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের পরও মেয়েটি থেমে থাকেনি। মহিলা পরিষদের সেফ হোমে থেকেই সে এবার এইচএসসি পাস করেছে। আত্মপ্রত্যয়ী ওই মেয়েটি তার ঘটনায় ন্যায় বিচার পাওয়ায় এখন সে মানুষের মতো মানুষ হওয়ার স্বপ্ন দেখছে।

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

Shamol Bangla Ads
error: কপি হবে না!