স্বপন কুমার দে, হাতীবান্ধা ( লালমনিরহাট) : লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বাল্য বিয়ের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে, তিস্তা নদীর ভাঙনে ভিটে হারা , দূর্গম চরের বাসিন্দা সাবিনা দারিদ্রকে জয় করে এস এস সি তে সাফল্য এনে দিয়েছে।
হাতীবান্ধা উপজেলার পাটিকাপাড়া ইউনিয়নের তিস্তা নদীর মধ্য চর পশ্চিম হলদীবাড়ী চর তার বাড়ী। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় তার বাবা তাকে বাল্য বিয়ের ব্যবস্থা করে ছিল । সেই খবর গোপনে ইউ পি চেয়ারম্যান ও এন জি ও এক কর্মীর কাছে সাবিনা খবর দিলে বিয়ে বন্ধ হয়ে যায় । শুরু হয় লেখা পড়ার নতুন জীবন , আবার তাকে চর থেকে তিস্তা মূল নদী নৌকায় , দুটি ছড়া নদী কখনো হাটু পানি গড়িযে বা বালুচরে হেটে পারুলীযা উচ্চ বিদ্যালয়ে যেতে হয়। এর মধ্যে নদীর ভাঙন ভিটে হারা হতে হয়।এভাবেই গত পরীক্ষায় এস এস সি তে ৪.৫৬ পেয়ে পরিবারের সবাইকে হতবাক করে দিয়েছে। এ প্রতিনিধি সাংবাদিকদের দল নিয়ে তিস্তা নদীর চর এলাকার মানুষের জীবন- –জীবিকার ওপর খবরের সন্ধানে গেলে দুপুরে পশ্চিম হলদীবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালযের পাশে পুকুরের পাড়ে প্রায় ২০ জন শিশুকে বন্যা থেকে সুরক্ষার কৌশল , সাঁতার শেখাচ্ছে এক সুঠাম দেহী , সদাহাস্যময়ী মেয়ে , তার নাম জানলাম সাবিনা ইয়াসমীন । এই সেই সাবিনা এখন হাতীবান্ধা আলিমুদ্দিন ডিগ্রী কলেজের মানবিক বিভাগের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী । তার সাথে আলাপ করতেই এ সব তথ্য জানা হলো । পারুলীয়া উচ্চ বিদ্যালযের প্রধানশিক্ষক অনিল চন্দ্র রায় এ প্রতিনিধিকে জানায় , সাবিনা পড়াশোনায় ভাল , বন্যায় সময় নিয়মিত ক্লাস করতে পারতো না , করতে পারলে এস এস সি তে রেজাল্ট আরো ভালো হতো । পাশেই তিস্তা নদীর তীরবর্তী হাটে সাবিনার বাবা সেকেন্দার আলীর সাথে কথা হলে জানান , তিন সন্তানের বাবা তিনি , বড় মেয়ে সাবিনা , মধ্যম মেয়ে সুমী ও আড়াই বছরের ছেলে আলআমিন । সাবিনাকে বাল্যবিয়ে দিচ্ছিলেন কেন ? বলতেই চোখে জল এসে বলেন বড় ভূল করতে যাচ্ছিলাম। নদী ভাঙনে সব কিছু শেষ হয়ে গেছে। এখন কলেজে কি ভাবে পড়াব এসব চিন্তায় দিশেহারা হয়ে যাই। সাবিনার ইচ্ছা সে লেখাপড়া চালিয়ে যাবে । স্বপ্ন তার অনেক ! সে কি পারবে তার লক্ষ্যে পৌছতে ?