চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলার মত বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অবহেলিত তৃণমূল পর্যায়ের কঠোর পরিশ্রমী মেধাবী অস্বচ্ছল দু:স্থ সাংবাদিকদের জন্য বর্তমান সরকারের যে উন্নয়নের ধারা তা অক্ষুন্ন রাখতে তাদের প্রতি সরকারের উচিৎ আরো একধাপ এগিয়ে যাওয়া এবং তাদের খোঁজ-খবর নেয়ার। রাজধানী, বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের সাংবাদিকদের কিছুটা হলেও সরকারের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকেন। কিন্তু তৃণমূল পর্যায়ের অর্থাৎ উপজেলা ভিত্তিক প্রেসক্লাবের অন্তর্ভূক্ত বা এক কথায় প্রকৃত সাংবাদিকতা পেশাটাকে অবলম্বন করে যারা জীবন জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন তাদের প্রতি সরকারের সুদৃষ্টি দেয়া একান্তই আবশ্যক হয়ে উঠেছে বলে পরিলক্ষিত হয়েছে।

তৃণমূল পর্যায়ের সাংবাদিকদের কোনপ্রকার অবিভাবক নেই বললেই চলে। কারণ হিসেবে উপজেলা বা জেলা পর্যায়ে সাংবাদিকদের নিয়ে যে প্রতিষ্ঠানটির সৃষ্টি হয়ে থাকে সেটি হলো ‘প্রেসক্লাব’ ‘সাংবাদিক ইউনিয়ন’ নতুবা সাংবাদিক ফোরাম বা ইউনিটি। বিভিন্ন এলাকায় নানান ধরনের নামে সাংবাদিক মহল ঐ প্রতিষ্ঠানে উঠাবসা করে এবং তাদের নিজ দায়িত্বে বিধি নিয়মানুযায়ী তথ্য-উপাত্য সংগ্রহ করে খবর যে যার পত্রিকায় প্রকাশ করে থাকেন। দেখা গেছে, বিভিন্ন জনের নানা মতামত নিয়ে চলতে গিয়ে তারা একই উপজেলায় বা জেলাতে ২/৩টি প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়ে তারা যে যার পত্রিকায় লেখালেখি বা খবর বার্তা পৌঁছে থাকেন। এতে দেখা গেছে সাংবাদিক তাদের ন্যায়-অন্যায়ের কারণে হোক আর দলীয মতামতের ভিত্তিতে হোক তাদের মাঝে মিল না থাকায় ২/৩টি করে প্রেসক্লাব সৃষ্টি হয়ে থাকে। আর এর মূল সমস্যার কারণ হিসেবে চলে আসছে নিজ স্বার্থসিদ্ধির জন্য আলাদা আলাদা প্রেসক্লাব বা সাংবাদিক ক্লাব গঠন করা। আসলে আমরা সাংবাদিক মহল আমাদের চলতে হবে সেই ভাবে যার তুলনা নেই। সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ লিখেছেন, “খবর কেবল দিতে পারি চেয়োনা অধিক, একটি খবর জেনে রাখ আমি সাংবাদিক। রাষ্ট্রনীতির কাটি জাবর নেই আমার ঘরের খবর, গুলির মুখে ঝড়ের বুকে আমি যে যাত্রিক, আমি সাংবাদিক”। কথাগুলি আমরা সাংবাদিক মহল গভীরভাবে একটু অনুধাবন করে দেখি সব কিছু পরিস্কার হয়ে যাবে চোখের সামনে। মানুষ মরণশীল। তবে কেনইবা এত হিংসা-প্রতিহিংসা আর ঘৃনা। আসুন না আমরা সাংবাদিকরা আর দশটা ভালো মানুষের মত যে যার পত্রিকায় দেশকে দেশের মানুষকে ভালবাসতে নুতন করে শপথ নেই। আপনার আমার চিন্তা-চেতনাকে পরিবর্তন করতে নিজের ইচ্ছাটাই যথেষ্ট নয় ? কবি বলেছেন ইচ্ছা থাকলেই উপাই হবে। আসুন আমরা বিন্দু বিন্দু ফোটা নিয়ে সিন্দু গড়ে তুলি। এই হোক আমাদের আগামী প্রজন্মের কাছে নুতন চিন্তা-চেতনা আর শপথ।
আমরা প্রকৃত সাংবাদিকরা যে কষ্টের মাধ্যমে বা যে নাজেহাল-হালাক্কান সহ্য করে সংবাদ সংগ্রহ করে সংবাদ লিখতে বসি বেকায়দায় পড়ি সে মূহুর্তে! তৃণমূল পর্যায়ের অনেকে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিলেও তাদের সংবাদ সংগ্রহ ও প্রেরণের সামগ্রী যথেষ্ট নয়। আর তথ্য-উপাত্য সংগ্রহ করে লিখতে বসলেই সভাবতই বেকায়দায় পড়তে হয় যে বিষয়টি নিয়ে সেটি হলো “একটি কম্পিউটার সেট”। একটি কম্পিউটার তার ঘরে বা হাতের নাগালে না থাকায় সময়মত নির্র্দিষ্ট সময়ে সংবাদ প্রেরণ করতে পারে না। বলা হয়ে থাকে সাংবাদিকরা জাতীর বিবেক। আর বিবেকই যখন নানা কারণে অকারণে অসুস্থ্য বা নানা সমস্যায় জর্জরিত থাকে তাহলে খুবই কষ্ট লাগে। বিবেক অসুস্থ্য বা সমস্যায় জর্জরিত বলতে সাংবাদিকদের সংবাদ সংগ্রহ হতে শুরু করে খবর পত্রিকা অফিসে পৌঁছানো পর্যন্ত প্রেরণেন সামগ্রীর কথা বলতে চাইছি।
বর্তমান সরকার সারা বাংলাদেশ ব্যাপি কমিউনিটি ক্লিনিক গুলিতে যে হারে স্বাস্থ্য কর্মীদের ল্যাপটপ কম্পিউটার, টেবলয়েড পিসি ছাড়াও ইন্টারনেট ব্যবহারের সকল সামগ্রী প্রদাণ করে দেশকে আরো একধাপ এগিয়ে নিতে কুণ্ঠাবোধ করছে না এবং ২০২১ ভিশনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের নীতি-আদর্শ প্রতিফলন ঘটেছে বলে প্রমাণিত। বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী জিয়াউর বাসেত বলেন, “এর পূর্বে বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিক গুলিতে সকল সময় গরু-ছাগল চড়ানোর ভুমিতে পরিণত হয়েছিলো। এখন সেগুলি বর্তমান সরকার দরিদ্র মানুষের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসা সেবা প্রত্যন্ত অঞ্চলের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিয়েছে”। কমিউনিটি ক্লিনিক গুলিতে রীতিমত একজন স্বাস্থ্যকর্মী সঠিক চিকিৎসা সহ ডেলিভারীর মত জটিল সমস্যাকে হেল্থ প্রোভাইডারগণ আমলে নিয়ে সমাধান করে তারা ভালো সেবার কারণে পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে বলে প্রমাণ রয়েছে। তাহলে দেশব্যাপি সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সরকারের বন্ধ চোখকে খুলে দিতে “একটি কম্পিউটার সেট” পারে তৃণমূল পর্যায়ের সাংবাদিকদের আরো একধাপ এগিয়ে নিয়ে একযোগে মিলেমিশে ঐক্যমতের ভিত্তিতে উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দিতে। তাই বিভিন্ন দল-মত অবলম্বন না করে আমরা তৃণমূল পর্যায়ের সাংবাদিকদের তাদের লিখুনীর মাত্রাকে আরো একধাপ এগিয়ে নিতে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত গতিতে চলতে থাকুক এবং সকল সাংবাদিকদের লেখার ক্ষুরের ধার শানিত হবে। তাই বর্তমান সরকারের সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আকুল মিনতি আমাদের কথায় ও কাজে সকল সময় সারা দিয়ে এসেছেন আর এখনো তা অব্যাহত রাখবেন বলে বিশ্বাস করি।
লেখক ঃ সাংবাদিক, ভোলাহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
