শেরপুরে ট্রাকচালক-শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা কর্তৃক চাঁদা দাবি ও হত্যার হুমকি প্রদানসহ ব্যবসার সুনাম ক্ষুণ্ন করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক ব্যবসায়ী। ৮ মে বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের নির্ঝর কমিউনিটি সেন্টারের হলরুমে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী মো. মোফাজ্জল হোসেন মিন্টু। তিনি জেলা শহরের খরমপুরস্থ নতুন বাজারের মেসার্স মিন্টু সন্সের স্বত্বাধিকারী।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মো. মোফাজ্জল হোসেন মিন্টু জানান, আমি প্রায় ৪০ বছর যাবত অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করে আসছি। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন কামাল ভেজিটেবল অয়েল মিল থেকে আমার নিজস্ব ট্রাকে করে ৭৫ ড্রাম ভোজ্যতেল নিয়ে শেরপুরে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। যার রেজি: নং- ঢাকা মেট্রো-ট-২০-৪৯৫১। সেসময় গাড়ির পরিচালনার দায়িত্বে ছিল ড্রাইভার আব্দুস সামাদ। ট্রাকে থাকা ভোজ্যতেলের মূল্য প্রায় ৪৮ লক্ষ টাকা। তেল শেরপুরে নিয়ে আসার সময় পথিমধ্যে ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার বৈলর এসে ট্রাকটি ছিনতাই হয় বলে দায়িত্বরত ট্রাক ড্রাইভার আব্দুস সামাদ আমাকে না জানিয়ে শেরপুরের অন্য এক ব্যবসায়ীকে জানায়। পরবর্তীতে আমি আমার অন্য স্টাফদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারি। ওই ঘটনায় ময়মনসিংহের ভালুকা মডেল থানায় ট্রাকচালক আব্দুস সামাদ, হেলপার ইউনুস আলী এবং অপর এক ড্রাইভার বাবুল মিয়াকে আসামি করে একটি অভিযোগ দিলে পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে দুদিন পর ট্রাক ড্রাইভার আব্দুস সামাদ ও হেলপার ইউনুস আলীকে গ্রেফতার করে।
সেইসাথে মানিকগঞ্জ জেলার আরিচা ফেরিঘাট এলাকা থেকে ট্রাকটি পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। তবে উদ্ধারকৃত ট্রাক থেকে কোন তেলের ড্রাম পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে তেল উদ্ধারের জন্য আমি পুনরায় ভালুকা থানা ও ডিবি পুলিশের শরণাপন্ন হই। তবে এখন পর্যন্ত হারিয়ে যাওয়া আমার কোন মালামাল উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

ব্যবসায়ী মোফাজ্জল হোসেন মিন্টু আরও বলেন, মামলা দায়েরের পর শেরপুরে ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের কথিত ফ্যাসিস্ট দোসর নেতা নাড়ু বাবু (৬০), হোসেন মিয়া (৫০), জামান মিয়া (৫০), মোকা মিয়া (৬০) ও ফারুক মিয়া (৫০) আমাকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য নানাভাবে হত্যার হুমকি এবং চাঁদা দাবি করে আসছিল। আমি এতে রাজি না হওয়ায় সম্প্রীতি তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করেছে। এছাড়া বৃহস্পতিবার সকালে আমার ক্রয়কৃত একটি ট্রাক (রেজিঃ নং ঢাকা মেট্রো ট-২০-৫০১২) শেরপুর শহরের গৌরীপুরস্থ নতুন বাস টার্মিনালে মেরামত কাজে নিয়ে গেলে কতিপয় শ্রমিক নেতারা বাঁধা দেয় এবং ট্রাকটি আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এসব হুমকির বিষয়ে আমি শেরপুর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি। কারণ আমি এবং আমার পরিবার বর্তমান সময়ে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এসময় তিনি ৪৮ লক্ষ টাকার মালামাল উদ্ধারে সাংবাদিক ও প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
তবে অভিযোগের বিষয়ে জেলা ট্রাক চালক-শ্রমিক ইউনিয়নের ফারুক আহমেদ বলেন, তাকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য কোন চাপ প্রয়োগের প্রশ্নই আসে না। বরং আমরা চাই উনার মালামাল উদ্ধার হোক। আমরা শুধু তাকে চালকটার জামিনের ব্যবস্থা করার কথা বলেছি।
