এম লুৎফর রহমান নরসিংদী প্রতিনিধি : নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ এনে নরসিংদী জেলা প্রশাসক ওবায়দুল আজমের অপসারনের দাবীতে শহর জুড়ে পোষ্টারিং করা হয়েছে ।২৬ জানুয়ারী সোমবার ভোরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রধান ফটক সহ জেলা শহরের সরকারী বেসরকারী অফিস,বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং প্রধান প্রধান সড়কের গুরুত্বপূর্ন স্থাপনায় নরসিংদীর সর্বস্তরের জনগনের ব্যানারে এসব পোষ্টার সাটানো হয়। জেলা প্রসাশকের বিরুদ্ধে পোষ্টারিংকে কেন্দ্র করে শহর জুড়ে ব্যাপক আলোচনার ঝড় উঠেছে। সকাল থেকেই উৎসুক জনতা এসব পোষ্টার দেখতে স্থাপনাগুলোর সামনে ভীড় জামায়। পোষ্টারে ওবায়দুল আজমের বিরুদ্ধে সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতি, ঘুষ ও নারী কেলেঙ্কারী সহ অর্থের বিনিময়ে সরকারী খাস জয়গা শিল্পপতিদের নিকট ছাড় দেয়ার অভিযোগ তোলা হয়। জেলা প্রশাসকের নানা অন্যায় অনিয়ম এর প্রতিকার চেয়ে দুর্নীতিবাজ ডিসি’র শাস্তি সহ দ্রুত অপসারনের দাবী জানানো হয়।
এদিকে সর্বশেষ সদ্য সমাপ্ত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলা প্রসাশক ওবায়দুল আজমের বিরুদ্ধে নৌকার বিপক্ষে কাজ করা সহ নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ এনে সরকার দলীয় সদর আসনের এমপি নজরুল ইসলাম হিরু ও শিবপুর আসনের সাবেক এমপি জহিরুল হক ভ‚ইয়া মোহন প্রধান নির্বাচন কমিশনার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে সদর আসনের এমপি পুনরায় দুর্নীতির ফিরিস্থি তুলে আজমের অপসারন চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট অভিযোগ দাখিল করেন । কিন্তু এত কিছুর পরও জেলা প্রশাসনের পদে বহাল তবিয়তে রয়েছেন আজম।
জেলা প্রশাসন ও জেলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, জনপ্রিয় মেয়র লোকমান হত্যাকান্ডকে ঘিরে সৃষ্ট তালমাতাল আওয়ামী লীগের রাজনীতির সুযোগে সাবেক মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদের ছত্রছায়ায় অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেন জেলা প্রশাসক ওবায়দুল আজম। এ কারণে ক্ষমতাসীন দলের হওয়া স্বত্বেও কোণঠাসা হয়ে পড়েন জেলার ৪টি উপজেলার সাংসদ, মেয়র ও আওয়ামী লীগের একাংশের নেতারা। ডানা বাঁধে ক্ষোভের। কোন্দল ঘনিভ‚ত হয় স্থানীয় আওয়ামীলীগে । ফলে তাঁরা সকলে জেলা প্রশাসনের কার্যক্রম থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
অন্যদিকে জেলার ইতিহাসে কোন জেলা প্রসাসকের বিরুদ্ধে খোলামেলা ভাবে এমন অভিযোগ তোলা হয়নি। অভিযোগকে কেন্দ্র করে সাধারন মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আবার কেউ কেউ ডিসির বিরুদ্ধে বেফাস মন্তব্য করতে দেখা যায়। বিষয়টি জেলা প্রশাসনের দৃর্ষিগোচর হলে জেলা নাজির শাহরিয়ার আহাম্মেদ এর নির্দেশে শহর থেকে পোষ্টার তুেল ফেলেন তৃতীয় চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টেক্সটাইল ব্যাবসায়ী বলেন, জেলা প্রশাসকের ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে তঠস্থ জেলার ট্রেক্সটাইল কারখানা সহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান। রোজা,ঈদ,বিজয় দিবষ,জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ব্যাবসায়ীদের জিম্মি করে ব্যাপক হারে চাঁদাবাজি করে আসছে। জেলা প্রশাসনের (এল আর ফান্ড ) তহবিলে চাহিদা মাফিক চাঁদা না দিলে ভ্রাম্যমান আদালতের মধ্যমে হয়রানীন অভিযোগ তোলেন। একই সাথে জেল জরিমানা করা হয়। বিষয়টি জেলা চেম্ববার অব কমার্স ইন্ডস্ট্রিজ এর এক পরিচালকও স্বীকার করেছে।
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে নরসিংদীর পৌর মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টা দু;খজনক। নরসিংদীর ইতিহাসে এর আগে এমনটা হয়েছে কিনা তা আমার জানা নাই। আমরা আশা করব কেন এই ঘটনাটি ঘটেছে তা তদন্তের মাধ্যমে একটি সুরাহা দিবে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ।
জেলা প্রসাশক ওবায়দুল আজম বলেন, আমি কেমন লোক নরসিংদী বাসী অবগত আছেন। কেউ যদি ব্যাক্তি স্বার্থে কাউকে হেয় করার জন্য মিথ্য অভিযোগ তোলে পোষ্টারিং করে তা দু:খ:জনক। আমরা খুজে বের করারর চেষ্টা করছি কি কারনে কারা এ কাজটি করেছে।
