সাইদুজ্জামান সাগর, রাণীনগর (নওগাঁ) : ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে ব্যাপকহারে মরে যাচ্ছে আমন ধানের শীষ । ঔষধ দিয়েও কাজ না হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। ধানের জমি একটু দূর থেকে দেখলে যে কারো মনে হতে পারে জমির ধান পেকে গেছে। আসলে কাছে গেলে এর বাস্তব চিত্র চোখে পড়ছে ভিন্নরকম। কতগুলো জমির অর্ধেক ধানের শীষ মরে গেছে বলেও দাবি করলেন কৃষকরা।
উপজেলার কালীগ্রামে আাদর্শ কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান,তিনি এবার প্রায় ৫ বিঘা জমিতে চিনিআতপ ধানের চাষ করেছেন,ধান বের হবার পর থেকেই ব্যাপকহারে শীষ মরে যাচ্ছে। কয়েক বার ঔষধ প্রয়োগ করেও ভাল কোন ফল পাওয়া যাচ্ছেনা। সিম্বা গ্রামের আলাউদ্দীন ফকির জানান, তিনি এবার প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে চিনিআতপ ধানের আবাদ করেছেন ধান বের হবার পর শীষ মরে যাচ্ছে,কোন কিটনাশক ঔষধ দিয়েও কাজ হচ্ছে না। করজগ্রামের কাজী আনিছুর প্রায় ৯বিঘা জমিতে চিনিআতপ চাষ করেছেন কয়েকবার ঔষধ দিয়ে কোন লাভ হয়নি বলে জানান তিনি। মালশন গ্রামের ওয়াজকরুনি জানান, তিনি প্রায় ২৫ বিঘা জমিতে চিনি আপত ধান চাষ করেছেন,ধান বের হবার পর থেকেই শীষ মরে যাচ্ছে ৩/৪ বার ঔষধ দিয়েও কোন লাভ হয়নি। জমির প্রায় অর্ধেক ধানের শীষ মরে গেছে। কোন কূল-কিনারা করতে পারছেননা। আবার ২ হাজার ১ শত ৮০ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছে বিআর ৪৯ জাতের ধান । এ ধানে দেখা দিয়েছে লক্ষীরগু নামক রোগ। ফলে চিনিআতপ আর বিআর ৪৯ ধান চাষ এবার কৃষেেকর জন্য বিরাট ক্ষতির কারন হয়ে দাড়িয়েছে। বার বার কিটনাশক ঔষধ প্রয়োগ করেও কোনপ্রতিকার না হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পরেছেন কৃষকরা।
কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলায় এবার প্রায় ১৮ হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ করা হয়েছে । এর মধ্যে চিনি আতপ ধান রয়েছে ৬ হাজার ৪ শত ১৫ হেক্টর জমিতে। বাকি জমিতে বিভিন্ন রকম ধানের আবাদ করেছেন কৃষকরা।
এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অহেদুর রহমান জানান, চিনিআতপ ধান ব্লাস্ট নামক রোগে আক্রান্ত হয়েছে। আগে থেকে কৃষকরা পদক্ষেপ নিলে এতটা ক্ষতি হতো না। তাছাড়া চিনিআতপ ধান চাষে এবার আবহাওয়া তেমন একটা অনুকুলে না থাকায় এ রোগের বিস্তারটা বেশি লাভ করেছে।
