শেরপুরের শ্রীবরদীতে খাদ্য অধিদপ্তরের সীলযুক্ত ৩৮০ বস্তা সরকারি চাল জব্দ করেছে প্রশাসন। ১১ অক্টোবর শনিবার রাতে উপজেলার পৌর শহরের সাতানী মথুরাদী রুহুল রাইস মিলের গোডাউন থেকে চালগুলো জব্দ করা হয়। পরে রাতেই চাল ভিতরে রেখে গোডাউনটি সিলগালা করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. হাসিব-উল-আহসান। অসহায়দের জন্য বিতরণকৃত সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর বিপুল পরিমাণ চাল জব্দের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য বিরাজ করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে শ্রীবরদী উপজেলার মথুরাদি এলাকায় উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের পাশে রুহুল রাইস মিলে একটি ট্রলি থেকে অবৈধভাবে সরকারি চাল সংরক্ষণের সময় স্থানীয় গ্রামবাসী পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে খবর দেয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাবের আহমেদের নির্দেশনায় শ্রীবরদী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. হাসিব-উল-হাসান পুলিশসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ৩৮০ বস্তা চাল জব্দ করেন এবং রুহুল রাইস মিলের গোডাউনটি সিলগালা করে দেন। উদ্ধারকৃত চালগুলো শ্রীবরদী পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. শাহজাহান কবিরের জিম্মায় রাখা হয়।
ট্রলি চালক ও গোডাউন মালিকের (ভাড়া নেওয়া) দাবি, চালগুলো মানিক মিয়ার। রুহুল রাইস মিলটি স্থানীয় ব্যবসায়ী আবু সাইদ, আবু তালেব ভাড়া নিয়ে পরিচালনা করেন। ঘটনার সময় তারা কেউ উপস্থিত ছিলেন না। এ ব্যাপারে আবু সাইদের পিতা টুনু মিয়া বলেন, আমার ছেলে সাথে কথা হয়েছে, সে জানিয়েছে চালগুলোর মালিক মানিক মিয়া। সে একদিনের কথা বলে চালগুলো রেখেছে। আবু তালেব বলেন, মানিক এসে বললো আমার মিল নিয়ে ঝামেলা, তাই কিছু চাল এক রাতের জন্য তোমার গোডাউনে রাখতে হবে। পরে আমি নিয়ে যাবো। কিন্তু রাতে পুলিশ আসার পর জানতে পারলাম এগুলো সরকারি চাল। ট্রলিচালক সোহাগ বলেন, চালগুলো মানিক মিয়ার। তবে কোথা থেকে চালগুলো আনা হয়েছে সে প্রশ্নের কোন উত্তর দেননি।

এদিকে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে অসাধু চাল ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় ও সচেতন মহল। তবে অভিযুক্ত জিয়াউর রহমান মানিক বলেন, চালগুলো আমার না। আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
শ্রীবরদী পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শাহজাহান কবির বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারি রুহুল রাইস মিলে অবৈধভাবে সরকারি চাল গুদামজাত করা হচ্ছে। পরে গুদামে এসে জিজ্ঞাসা করলে শ্রমিকরা জানান, চালগুলো জিয়াউর রহমান মানিকের নির্দেশে গুদামজাত করা হচ্ছে। পরে লোকজনের উপস্থিতিতে প্রশাসনের লোকজন এসে চালগুলো জব্দ করে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা সুচিত্রা রানী পন্ডিত বলেন, সর্বশেষ গত সেপ্টেম্বর মাসে ডিলারদের কাছে চাল বিতরণ করেছি। এ মাসে কোন চাল বিতরণ করা হয়নি।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. হাসিব-উল-আহসান বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে খাদ্য অধিদপ্তরের সীলযুক্ত শ্রীবরদী এল.এস.ডি লেখা ৩৮০ বস্তা চাল জব্দ করি। পরে গোডাউনটি সিলগালা করে দেই। চালগুলো স্থানীয় ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শাহজাহান কবিরের জিম্মায় রাখা হয়েছে।

