নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় এর সাংঘর্ষিক বিষয়সমূহ পর্যালোচনার জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে। ৪ মে রবিবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রওশন আলী ওই রিট আবেদন দাখিল করেন।

তিনি জানান, ‘উইমেন রিফর্ম কমিশন রিপোর্ট, ২০২৫’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন সম্প্রতি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, যার কয়েকটি অধ্যায় ইসলামী শরীয়তের বিধান, সংবিধান এবং দেশের ধর্মপ্রাণ জনগণের ধর্মীয় অনুভূতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
রিপোর্টটি মোট ৩১৮ পৃষ্ঠার এবং এর বিভিন্ন সুপারিশ সম্প্রতি জনমনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। রিটে বলা হয়েছে, প্রতিবেদনটির ৩, ৪, ৬, ১০, ১১ এবং ১২ নম্বর অধ্যায়ে যে সুপারিশগুলো করা হয়েছে, সেগুলো ইসলামী মূল্যবোধ ও সাংবিধানিক রীতিনীতির পরিপন্থী। বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রিপোর্টের ১১ নম্বর অধ্যায়ে নারী ও পুরুষের জন্য সমান উত্তরাধিকারের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা কোরআনের সুরা নিসার ১১ নম্বর আয়াতের বিরুদ্ধে যায়। এছাড়া, রিপোর্টে বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করার যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তা ইসলামী শরীয়তে অনুমোদিত এবং সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিপন্থি।

রিটে আরও উল্লেখ করা হয় যে, “My Body, My Choice” স্লোগানকে অন্ধভাবে সমর্থন করে শরীয়তের মূলনীতিকে উপেক্ষা করা হয়েছে। একই সঙ্গে, যৌনকর্মকে বৈধ পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাব এবং লিঙ্গ পরিচয় ও ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ক ভাষা ইসলামী আদর্শ ও সংবিধানের ২(ক) ও ২৬ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
এই রিটে নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ধর্ম মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয় এবং উইমেন রিফর্ম কমিশনের চেয়ারম্যানকে বিবাদী করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিচারপতি ফাতেমা নজিব এবং বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চে চলতি সপ্তাহেই শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
