উত্তর আমেরিকার দেশ কানাডা এবং মেক্সিকো থেকে পণ্য আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে এশিয়ার পরাশক্তি চীনের পণ্যে বাড়তি ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন সদ্য ক্ষমতায় বসা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই শুল্ক আগামী মঙ্গলবার থেকেই কার্যকর হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই নির্দেশের কারণে বিশ্বে নতুন করে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। ফলে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি হ্রাসের পাশাপাশি মূল্যস্ফীতিও বৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, ট্রাম্প মেক্সিকো ও কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা সব ধরনের পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে পৃথক দুটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। একইসঙ্গে চীন যতক্ষণ না ‘ফেন্টানিল’ মাদকের পাচার বন্ধ করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তার ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে আরেকটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন তিনি। ফ্লোরিডা থেকে ইতোমধ্যে ৩টি পৃথক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

মার্কিন আদমশুমারি ব্যুরোর তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালে কানাডা থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আমদানির প্রায় এক চতুর্থাংশই ছিল অপরিশোধিত তেলের আমদানি। যা আর্থিক মূলে প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলার।
এর আগে ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, আমাদের সীমান্ত দিয়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অভিবাসী ও ফেন্টানিল প্রবেশ করছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর। একইসঙ্গে আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতিও রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানের জন্যই আমি এই শুল্ক বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, তিনি চীনের ওপরও নতুন শুল্ক বসানোর পরিকল্পনা করছেন, যা আগে ১০ শতাংশ হারের কথা বলা হলেও আরও বাড়তে পারে। অভিযোগ করে তিনি বলেন, চীন যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানিল সরবরাহ করছে, যার ফলে হাজার হাজার মার্কিন নাগরিক মারা যাচ্ছে।
এর আগে ২০১৮ সাল থেকে চীনের আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছিল, যার একটি বড় কারণ ছিল ট্রাম্প প্রশাসনের ধারাবাহিক শুল্ক বৃদ্ধির নীতি। ট্রাম্পের ঘোষণার পর পরই কানাডা ও মেক্সিকোর কাছ থেকে পাল্টা প্রতিক্রিয়ার ইঙ্গিত আসে।
যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা পণ্য ও সেবার ৭৫ শতাংশই আসে কানাডা থেকে। ফলে ট্রাম্পের ঘোষিত শুল্ক আরোপের কারণে দেশটির অর্থনীতি মারাত্মক ব্যাহত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
