ads

মঙ্গলবার , ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২৮শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

বায়ুদূষণ মোকাবিলা জরুরি : ড. বিভূতি ভূষণ মিত্র

শ্যামলবাংলা ডেস্ক
ডিসেম্বর ৩১, ২০২৪ ৮:২১ অপরাহ্ণ

সম্প্রতি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকার বায়ুমান ঝুঁকিপূর্ণ। এই অবস্থায় দূষিত বাতাসের কারণে মানুষকে অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের না হওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে বাইরে বের হলে মাস্ক পরার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া বায়ুদূষণ মোকাবিলায় প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে শিল্পকারখানার ও ইটভাটার মালিকদের কিছু পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেমন কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী দেওয়া, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণস্থলে যাতে ধুলা না ওড়ে সে জন্য দিনে অন্তত দুইবার পানি ছিটানোর কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া পুরোনো যানবাহন ও ধোঁয়া উদ্‌গিরণকারী মোটরযান রাস্তায় বের না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Shamol Bangla Ads

১২ ডিসেম্বর সকালে ঢাকার বায়ুর কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ছিল-২০২। এই মান খুব অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বের চতুর্থ দূষিত শহরের তালিকায় নাম ওঠে ঢাকার। প্রথম স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর। সেখানকার স্কোর ২৭৭। দ্বিতীয় স্থানে আছে ভারতের দিল্লি। সেখানকার স্কোর ২৫১। তৃতীয় অবস্থানে আছে নেপালের কাঠমুন্ডু। সেখানকার স্কোর ২০৭।

বায়ুদূষণের অন্যতম প্রধান উপাদান হলো, বাতাসে পিএম বা অতিক্ষুদ্র কণার উপস্থিতি। কোনো স্থানের বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণার পরিমাণ শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে সেই বাতাসকে ভালো, ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে মধ্যম আর ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে থাকলে বিপৎসীমার মধ্যে আছে বলে ধরা হয়। ১৫১ থেকে ২০০-এর মধ্যে থাকলে অস্বাস্থ্যকর আর ২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে হলে খুবই অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বায়ুমান ৩০১ থেকে ৫০০-এর মধ্যে হলে তা বিপজ্জনক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

Shamol Bangla Ads

বাংলাদেশে বায়ুদূষণের বেশ কিছু কারণ রয়েছে। তার মধ্যে বিশেষ কারণগুলো হলো নির্মাণকাজ, ইটভাটা ও শিল্পকারখানা, যানবাহন এবং বর্জ্য পোড়ানো থেকে বায়ুদূষণ বেশি হয়ে থাকে। রাস্তাঘাট ও ভবন নির্মাণের সময় ধুলাবালু বাতাসে মিশে বাতাস দূষিত করে। কোনো ভবন সঠিক নিয়মে নির্মাণ করা না হলে, সেখান থেকে দূষণ হয়। ইটভাটা থেকেও প্রচুর ছাই তৈরি হয়ে বাতাসকে দূষিত করে। এ ছাড়া ইটভাটা থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনো-অক্সাইড, সালফার অক্সাইড বাতাসে মিশে বাতাসকে দূষিত করে। ফিটনেসবিহীন যানবাহন থেকে নির্গত ধোঁয়ার কারণে বাতাস দূষিত হয়। তাছাড়া বর্জ্য পোড়ানোর মাধ্যমেও বাতাস দূষিত হয়ে থাকে।

২০২১ সালের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর কমপক্ষে ৬ দশমিক ৮ বছর করে আয়ু কমে যাচ্ছে। অন্য একটি তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বায়ুদূষণের মাত্রা বেশি থাকে শীতকালে এবং অস্বাস্থ্যকর হলেও বর্ষাকালে দূষণ একটু কম থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, প্রতিবছর বায়ুদূষণের কারণে বিশ্বে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ মারা যায়। বায়ুদূষণের কারণে মূলত স্ট্রোক, হৃদরোগ, ফুসফুসের ক্যানসার এবং শ্বাসযন্ত্রের নানাবিধ সংক্রমণ হয়ে থাকে। শুধু ঢাকা নয়, ঢাকার নিকটবর্তী গাজীপুর দেশের সবচেয়ে দূষিত জেলা। এখানকার মানুষের গড় আয়ু ৮ দশমিক ৩ বছর করে কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশে বায়ুদূষণে প্রতিবছরে মারা যায় ৮০ হাজার মানুষ।

বায়ুদূষণের কারণে জিডিপির ৪ ভাগেরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বাংলাদেশে নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত দূষণের মাত্রা বেশি থাকে। এটি সারা বছরের প্রায় ৬৫ শতাংশ। বিশ্বব্যাংকের আরও একটি তথ্য মতে, বাংলাদেশে ২০১৯ সালে বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ৭৮ থেকে ৮৮ হাজার মানুষ মারা গেছে।

স্টেট অব গ্লোবাল এয়ার কোয়ালিট ফান্ডিং ২০২৩-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বায়ুর গুণগত মান উন্নয়নের তহবিল প্রাপ্তিতে তৃতীয় ছিল বাংলাদেশ। প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বায়ুর মান উন্নয়নে বাংলাদেশ ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তা পেয়েছে। এত আর্থিক সহায়তা পাওয়ার পরেও কিন্তু বাংলাদেশ বায়ুদূষণ মোকাবিলায় তেমন কোনো অগ্রগতি দেখাতে পারেনি।

এই অবস্থায় সরকারের বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। সম্প্রতি পরিবেশ উপদেষ্টা বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে একটি টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। তিনি জানান, বায়ুদূষণের উৎস চিহ্নিত করে তা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আমরা কি আশা করতে পারি, অন্তর্বর্তী সরকারের এই উদ্যোগ বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে? নাকি আমরা আগের অবস্থায় জীবন-যাপন করতে বাধ্য হব? আশা যেন নিরাশায় পরিণত না হয়, সেটাই সবার চাওয়া।

লেখক : প্রাবন্ধিক-গবেষক, শেরপুর।

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

Shamol Bangla Ads
error: কপি হবে না!