শেরপুরের নকলায় পরিত্যক্ত একটি ডোবা থেকে আইয়ুব আলী (৬৩) নামে এক দর্জির গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। ১৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার গৌড়দ্বার ইউনিয়নের রুনীগাঁও মধ্যপাড়া গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। আইয়ুব আলী স্থানীয় ফছির উদ্দিন মেম্বারের ছেলে এবং ৪ সন্তানের জনক। সে দীর্ঘদিন ধরে নকলা পৌরশহরে একটি ভাড়ার দোকানে দর্জির কাজ করত।
এদিকে নিহতের মুখমন্ডল ও গলাতে একাধিক ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে। ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ রাতেই আইয়ুব আলীর ভাই ছমেদ আলীর ছেলে মুকুল মিয়া (৪৫), তার ছেলে মহসিন হাসান (২৩) ও জিহান হাসান (২০) কে আটক করেছে। এছাড়া ১৫ নভেম্বর শুক্রবার সকালে আটক করা হয় স্থানীয় রামলাল রবিদাস ওরফে আবুয়া রবিদাসের ছেলে সেতু রবিদাসকে (২৩)। সেতু আইয়ুব আলীর প্রতিবেশি হলেও বেশকিছুদিন ধরে সে পরিবার পরিজন নিয়ে নকলা পৌরসভার বাদাগৈড় মহল্লায় বসবাস করে।
আইয়ুব আলীর ছেলে কলেজ শিক্ষার্থী রাজন আহমেদ (১৯) ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আইয়ুব আলী ও ছমেদ আলীর সহোদর বোন নুরজাহান বেগমের বিয়ে হয়েছিল উরফা ইউনিয়নের লয়খা গ্রামের মির্জা কাসেমের সাথে। দীর্ঘদিন ধরে পরিবারটি ঢাকায় বসবাস করা অবস্থায় কিছুদিন আগে বার্ধক্যজনিত রোগে মারা যান নুর জাহান। পরবর্তী শ্বশুরবাড়িতে নিজ নামীয় ও নুরজাহানের রেখে যাওয়া জমিজমা বিক্রির উদ্যোগ নেন মির্জা কাসেম ও তাঁর সন্তানেরা। জমি ক্রয় করা নিয়ে বিরোধ তৈরি হয় আইয়ুব আলী ও ছমেদ আলীর পরিবারের মধ্যে। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে আইয়ুব আলী দর্জির কাজ শেষ করে নকলা পৌরশহর থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। কিন্তু গভীর রাত অবধি আইয়ুর আলী বাড়িতে না ফেরায় তাঁর খুঁজে বের হন পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসি। পরবর্তীতে অনেক খুঁজাখুঁজির পর বাড়ির কাছাকাছি একটি পরিত্যক্ত ডোবায় আইয়ুব আলীর লাশ দেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান জানান, খবর পেয়ে রাতেই আইয়ুব আলীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ওই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আইয়ুব আলীর ৩ ভাতিজা ও তাঁর এক ঘনিষ্ঠ সহচরকে আটক করা হয়েছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মিজানুর রহমান, সহকারি পুলিশ সুপার (নালিতাবাড়ী সার্কেল) দিদারুল ইসলাম এবং নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তারা অবিলম্বে ঘটনার সাথে জড়িত ব্যাক্তিদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার কথা বলেছেন।