শেরপুরে সরকারি ভিক্টোরিয়া স্কুলের জায়গায় নতুন ভবন নির্মাণের নামে খেলার মাঠ বন্ধ করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়ে উত্তেজনা বিরাজ করলে জেলা প্রশাসক, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সুশীল সমাজ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ৬ নভেম্বর বুধবার দুপুরে বিদ্যালয় মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, মাঠে নতুন ভবন নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়ে অনেক আগেই জেলা প্রশাসক ও শিক্ষা অফিসারকে অভিযোগ করা হয়েছে কিন্তু সেসময় ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর কর্মকর্তারা তাদের কথা শুনেননি। এদিকে আজ ৬ নভেম্বর বুধবার সকালে জেলা শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সেই মাঠেই ভবন নির্মাণের কাজ শুরুর জন্য পরিদর্শনে আসেন। আমরা আমাদের বিদ্যালয়ের মাঠ বন্ধ করে ভবন নির্মাণ করতে দিব না। আমাদের পরিত্যক্ত দুটি ভবন আছে, সেখানে নতুন ভবন নির্মাণের দাবিও আমরা জানিয়ে আসছি। কিন্তু হাসিনার দোসররা এখনো আমাদের কথা না শুনে বৈশম্যমূলক আচরণ করছে, শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের লোকজন ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের যোগসাজশে এমন কাজ করছে। এ ঘটনার আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাই। প্রয়োজনে আমাদের ক্রীড়া উপদেষ্টা নাহিদের কাছে যাবো।
এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে জেলাপ্রশাসক মাহমুদুর রহমান তরফদার, জেলা বিএনপির আহবায়ক হযরত আলী, শেরপুর মডেল গার্লস কলের প্রিন্সিপাল মামুনুর রশীদ পলাশ, শেরপুর প্রেসক্লাবের কার্যকরী সভাপতি রফিক মজিদ, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হাসান বাদলসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক বলেন, আমরা বিদ্যালয়ের মাঠে ভবন নির্মাণের জন্য নিষেধ করেছি। এতে প্রকৌশলী অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা আমাদের মামলার হুমকি দেয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আনিসা বেগম বেলী বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠে ভবন নির্মাণ করা হলে বাচ্চাদের চলাচল ও খেলাধুলা বিঘ্নিত হবে। মাঠ বন্ধ হয়ে যাবে। এদিকে শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের প্রধান কর্মকর্তা জয়িতা আধিকারী বলেন, আমি ফ্যাসিবাদের দোসর নয়, বাচ্চারা হয়তো ব্যপারটি বুঝতে পারেনি। আর মামলার হুমকির বিষয়টি আমি জানি না। যদি স্কুল কতৃপক্ষ না চায় তাহলে আমরা জোর করে ভবন নির্মাণ করবো না। বিষয়টি উর্ধতন কতৃপক্ষের কাছে অবহিত করবো।
জেলা বিএনপির আহবায়ক হযরত আলী বলেন, ভবন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য নির্মাণ করা হবে কিন্তু বিদ্যালয়ের মাঠে ভবন নির্মাণ করা ঠিক হবে না। কারণ মাঠে ভবন নির্মাণ করা হলে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা কোথায় করবে। আমি শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে সহমত প্রকাশ করছি। ভবনটি পরিত্যক্ত ভবনে নির্মাণের জন্য আমিও দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান জানায়, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং বিষয়টি অবগত রয়েছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে