শুক্রবার , ১ নভেম্বর ২০২৪ | ২৪শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে মিছিল থেকে জাপার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা

শ্যামলবাংলা ডেস্ক
নভেম্বর ১, ২০২৪ ১:৪৭ অপরাহ্ণ

রাজধানীর বিজয়নগরে জাতীয় পার্টির (জাপা) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক ও জনতার ব্যানারে একটি মিছিল থেকে এ হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ জাপার। তবে অপর পক্ষ বলছে, দলীয় কার্যালয় থেকে আগে ছাত্রদের ওপর হামলা চালানো হয়। জাপার সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের টানাপোড়েনের মধ্যেই এ ঘটনা ঘটল। রাতে বিজয়নগরে গিয়ে দেখা যায়, কার্যালয়ের সামনে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।
‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক ও জনতার’ ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে মশাল মিছিল কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিলেন গণঅধিকার পরিষদের ছাত্র সংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। মিছিলটি শাহবাগ হয়ে বিজয়নগরে যায়।
সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক সারজিস আলম এবং হাসনাত আবদুল্লাহকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে দলটির স্থানীয় নেতারা। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।

Shamol Bangla Ads

ছাত্র অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক হাসিব মল্লিক বলেন, ২ নভেম্বর জাপা সমাবেশের ডাক দিয়েছে। বাংলার মাটিতে যেন তারা সমাবেশ সফল করতে না পারে, সেজন্যই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সন্ধ্যা ৬টার দিকে টিএসসি থেকে মশাল মিছিল নিয়ে নাইটিঙ্গেল মোড়ের উদ্দেশে যায় ছাত্র-জনতা। মিছিলটি জাপা অফিসের সামনে পৌঁছালে অফিসের ওপর থেকে ইটপাটকেল ছোড়া হয় ছাত্র-জনতার ওপর। এর পর দু’পক্ষ সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে।

গণঅধিকার পরিষদের নেতা হাসান আল মামুন বলেন, জাপার কেন্দ্রীয় দপ্তরে আগে থেকেই যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীদের অবস্থান ছিল। মিছিলটি সেখানে পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় জাপা নেতাকর্মীরা। পরে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।
জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু ব‌লে‌ন, শনিবার কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে সমাবেশের পূর্ব ঘো‌ষিত কর্মসূ‌চি র‌য়ে‌ছে। এর প্রস্তু‌তির জন‌্য নেতাকর্মীরা কার্যাল‌য়ের সাম‌নে ছি‌লেন। কিছু উচ্ছৃঙ্খল লোক সন্ধ‌্যায় হামলার চেষ্টা ক‌রে। কর্মী‌দের প্রতি‌রো‌ধে হামলকারীরা পা‌লি‌য়ে যায়। প‌রে এসে কার্যাল‌য়ে আগুন দি‌য়ে‌ছে।

Shamol Bangla Ads

ছাত্রনেতারা অভি‌যোগ ক‌রে‌ছেন, তা‌দের ওপর প্রথ‌মে অস্ত্র নি‌য়ে হামলা ক‌রে জাপা নেতাকর্মীরা। তবে চুন্নু বলেন, ‘আমাদের কী পাগ‌লে কাম‌ড়াইছে যে এই সম‌য়ে ছাত্রদের ওপর হামলা করব। একটা ছুতা দি‌য়ে আমা‌দের ওপর হামলা করল আর কি।’ চুন্নু ব‌লেন, ফায়ার সার্ভিসকে আগুন নেভাতে দেওয়া হয়নি। রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে এ রকম হামলা হ‌লে দেশে কীসের গণতন্ত্র চল‌ছে?
জুলাই গণহত্যা ও আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার অভিযোগে জি এম কা‌দেরসহ জাপার ৩৮ নেতাকর্মীর বিরু‌দ্ধে মামলা হয়েছে। এতে বরাবর সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সখ্য রেখে চলা দল‌টি চা‌পে প‌ড়ে। পাল্টা হিসে‌বে প্রতিবাদ কর্মসূ‌চি ঘোষণা করেছে জাপা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জাপা কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের পর পৌনে ৮টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট সেখানে পৌঁছায়। তবে ছাত্র-জনতার বাধার মুখে তারা আগুন নেভানোর কাজ শুরু করতে পারেনি। তখন ছাত্ররা স্লোগান দিতে থাকেন– ‘স্বৈরাচারের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’; ‘ছাত্রলীগের আস্তানা, এই বাংলায় হবে না’ ইত্যাদি। অবশ্য কিছুক্ষণ পরই পুলিশের সহায়তায় আগুন নেভানোর কার্যক্রম শুরু করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এরপর পাঁচ মিনিটের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে আগুন পুরোপুরি নিভে যায়।

এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ সন্ধ্যায় ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘জাতীয় বেইমান এই জাতীয় পার্টি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিজয়নগরে আমাদের ভাইদের পিটিয়েছে, অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। এবার এই জাতীয় বেইমানদের উৎখাত নিশ্চিত।’ এর কিছুক্ষণ পর তিনি আরেক পোস্টে জানান, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে রাত সাড়ে ৮টায় মিছিল নিয়ে তারা বিজয় নগরে যাবেন। ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সারজিস আলমও ফেসবুক পোস্টে মিছিল নিয়ে বিজয় নগর যাওয়ার কথা জানান।’

রাত ৯টার দিকে রমনা বিভাগের এডিসি জুয়েল রানা বলেন, ছাত্র-জনতা এসে জাপা অফিসে আগুন দিয়েছে। প্রথমে তারা শাহবাগে জড়ো হয়। এরপর সেখান থেকে বিজয় নগরে আসে।

নব্বই‌য়ের অভ্যুত্থা‌নে ক্ষমতাচ‌্যুত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ প্রতিষ্ঠিত জাপা ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগকে সরকার গঠনে সমর্থন করেছিল। তিন বছর পর জোট করে বিএনপির সঙ্গে; বেরিয়ে যায় এক বছরের মধ্যেই। ২০০৬ সালে যোগ দেয় আওয়ামী লীগের মহাজোটে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন জোট ২৯ আসন ছাড়ে এরশাদের জাপাকে। ২০০৯ সালে গঠিত হাসিনা সরকারে মন্ত্রী ছিলেন জি এম কাদের। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির বিএনপিবিহীন নির্বাচন এরশাদ বর্জনের ঘোষণা দিলেও রওশন এরশাদের নেতৃত্বে একাংশ অংশ নেয়। দলটি সেই বিতর্কিত নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ২৩টিসহ মোট ৩৪ আসন নিয়ে প্রধান বিরোধী দল হয়। আবার জাপার তিন এমপি হাসিনা সরকারের মন্ত্রী হন। এতে গৃহপালিত বিরোধী দলের তকমা পায় জাপা।

২০১৮ সালে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে জাপাকে ২৭ আসন ছাড়ে আওয়ামী লীগ। রাতের ভোটখ্যাত সেই নির্বাচনে ২২ আসন পেয়ে ফের প্রধান বিরোধী দল হয় জাপা। দলটির এমপিরা সংসদে শেখ হাসিনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ থাকতেন। জাপার এমপি রওশন আরা মান্নান তো শেখ হাসিনাকে ১০ বছর বিনা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী পদে রাখার প্রস্তাবও করেছিলেন। ২০১৯ সালে জি এম কাদের জাপার নেতৃত্বে আসার পর দলটি লাগাতার সরকারের সমালোচনা করে। কিন্তু গত বছরের আগস্টে ভারত থেকে ফেরার পর অনেকটা চুপ হয়ে যান। ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ২৬ আসনে ছাড় পায়। নির্বাচনের প্রচারে জাপার প্রার্থীরা পোস্টারে শেখ হাসিনার ছবি দিয়ে ভোট চেয়েছিলেন। দ্বাদশ সংসদে ১১ আসন পেয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে বিরোধী দল হয় জি এম কাদেরের জাপা।

তবে জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের শুরু থেকেই জি এম কাদের বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে পক্ষে সরব ছিলেন। ৫ আগ‌স্টের পর ছাত্র নেতৃত্ব‌ জাপা‌কে স্বৈরাচা‌রের দোসর আখ‌্যা দি‌য়ে রাজনী‌তি থে‌কে নি‌ষি‌দ্ধের দা‌বি কর‌ছে।

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

error: কপি হবে না!