বছরের পর বছর ধরে বন্য হাতির আক্রমণ–আতঙ্কে আছে ভারত সীমান্তঘেঁষা শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ের মানুষ। এবার বন্য হাতির তাণ্ডব ঠেকাতে এ উপজেলার কাংশা ও নলকুড়া ইউনিয়নের ৪৫টি স্বেচ্ছাসেবী দলের মাঝে দুইটি করে সার্চ লাইট ও বিকট শব্দের দুইটি হুইসেল বাঁশি বিতরণ করেছে বিএনপি। ২৯ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার নওকুচি এলাকায় উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে ওইসব সামগ্রী তুলে দেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মো. মাহমুদুল হক রুবেল।

ওইসময় তিনি বলেন, হাতির অত্যাচার এখন প্রাকৃতিক দুর্যোগে পরিণত হয়েছে। ধান ও ফলের মৌসুমে খাদ্যের সন্ধানে প্রায় প্রতিদিনই হাতির দল পাহাড় থেকে লোকালয়ে নেমে আসে। হাতির দল পাহাড়ের ঢালে আবাদ করা ধানখেতে হানা দিয়ে ধান খেয়ে ও পায়ে মাড়িয়ে সাবাড় করে। মাঝেমধ্যে মানুষও মেরে ফেলে। মানুষ এখন বন্য হাতির আক্রমণ থেকে বাঁচতে চায়। সুষ্ঠ নির্বাচনের মাধ্যমে আগামীতে বিএনপি সরকার গঠন করলে হাতির আক্রমণ প্রতিরোধে ও হাতি-মানুষের সহাবস্থানে যুগোপযোগী স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করে বাস্তবায়ন করার প্রতিশ্রুতি দেন বিএনপির এ নেতা।
উপজেলা বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, গারো পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকায় খাদ্যের সন্ধানে সমতলে নেমে আসতে শুরু করেছে বন্য হাতির পাল। শাবকসহ অর্ধশতাধিক হাতির পালটি ক্ষুধার তাড়নায় দিশাহারা। তারা টিলায় থাকা গাছের ছালবাকল খাচ্ছে। লোকালয়েও আসছে। হাতির তাণ্ডবে মানুষের ঘর-বাড়ির ক্ষতির পাশাপাশি পাকা-কাঁচা ধান, শাকসবজির ফসল খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করে বন্য হাতির দল। তাই জানমাল ও ফসল রক্ষায় স্থানীয়রা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। ফসলের জমিতে হাতি প্রতিরোধে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন তারা। এমন সংবাদ জানতে পেরে

বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মো. মাহমুদুল হক রুবেলের নির্দেশনায় নলকুড়া ও কাংশা ইউনিয়নের স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী ও দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে বন্য হাতির আক্রমণ ও আতঙ্ক প্রতিরোধে ১০ সদস্য বিশিষ্ট ৪৫টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এসব কমিটির স্বেচ্ছাসেবকদের মাঝে সার্চ লাইট ও বিকট শব্দের হুইসেল বাঁশি বিতরণ করার পাশাপাশি মশাল জ্বালানোর জন্য কেরোসিন তেলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একই সঙ্গে একটি করে জরুরি সেবা কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
বন্য হাতির তাণ্ডব ঠেকাতে এসব সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কাংশা ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপির সভাপতি মো. আতাউর রহমান। এতে বক্তব্য দেন শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. কাকন রেজা, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. শাহজাহান আকন্দ, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আব্দুল মান্নান, নলকুড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি’র সভাপতি মো. রুকুনুজ্জামান, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. মাসুম বিল্লাহ প্রমুখ।
ওইসময় রাংটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আব্দুল করিমসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
