শেরপুরে চাকরিতে পুনর্বহাল এবং বিগত দিনের বকেয়া বেতনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন রমজান আলী নামে জেলা পরিষদের ভুক্তভোগী এক নিরাপত্তা প্রহরী। ১৫ অক্টোবর বুধবার দুপুরে শহরের নির্ঝর কাবাবঘর ও রেস্তোরাঁ হলরুমে ওই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
ওইসময় ভুক্তভোগী শেরপুর জেলা পরিষদের ডাকবাংলোর নিরাপত্তা প্রহরী রমজান আলী লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তিনি তার লিখিত বক্তব্যে জানান, ২০০৪ সালের ২৬ এপ্রিল তাকে শেরপুর জেলা পরিষদ এর নালিতাবাড়ী উপজেলার ডাকবাংলাতে নিরাপত্তা প্রহরী পদে (অস্থায়ী) চাকুরি নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে স্থানীয় একটি কুচক্র মহল বিগত ২০১৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর একটি মিথ্যে ও হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে তাকে ২২ দিন জেল খাটায়। ওই ২২ দিন তার স্ত্রী সকল কাজকর্ম বা ডাকবাংলার রক্ষণাবেক্ষণ কাজ চালিয়ে যান। রমজান আলী জেল থেকে ফিরে এসে পুনরায় কাজে যোগদান করলেও তার বেতন ভাতাদি বকেয়া রাখা হয়। বিষয়টি নিয়ে তৎকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা
সাইয়েদ এ.জেড মোরশেদ আলী তার বেতন ভাতাদি প্রদানের বিষয়ে কয়েকদিন সময় নেন। এরপর তিনি চলে গেলে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন নাহার শাম্মী ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর কোনরকম কারণ দর্শাও নোটিশ না দিয়েই হয়রানিমূলকভাবে রমজানকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে। এরপর রমজান হাইকোর্টে রিট পিটেশন করলে আদালত তার বকেয়া বেতন ভাতা প্রদান এবং চাকুরী স্থায়ীকরণের বিষয়ে নির্দেশনা দেন। পরে বর্তমান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন নাহার শাম্মী তাকে পুনরায় চাকুরীতে পুনর্বহাল করে অন্যত্র বদলি করেন। কিন্তু তার কোন বকেয়া বেতন ভাতা প্রদান করা হচ্ছে না। এ বিষয়ে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন নাহার শাম্মীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি রমজানের কাছে ৫ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেন। কিন্তু ওই টাকা দিতে না পারায় তাকে নানা ভাবে হয়রানি করে আসছে। সেই সাথে কাগজে-কলমে যোগদান দেখালেও বাস্তবে রমজানকে কাজে যোগদান করতে দেওয়া হচ্ছে না। একই সাথে বকেয়া বেতন ভাতাও দেওয়া হচ্ছে না।
সংবাদ সম্মেলনে রমজান আলীর সাথে তার স্ত্রী ও তিন কন্যা সন্তান উপস্থিত ছিলেন। তার কন্যা সন্তানও দাবি করেন, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন নাহার শাম্মী তার বাবাকে তার সামনে নানাভাবে অপমান করে কাজে যোগদান না করিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছেন। তারা তার বাবার চাকুরি স্থায়ীকরণ ও বকেয়া বেতন ভাতা প্রদানের দাবি জানান।
তবে অভিযোগের বিষয়ে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জবুন নাহার শাম্মী জানান, আমাদের জেলা পরিষদের নালিতাবাড়ী উপজেলার ডাক বাংলোর স্টাফ রমজান আলী যে অভিযোগগুলো করেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। কারণ তার নিয়োগটা হয়েছিল সম্পূর্ণ অস্থায়ী এবং “নো ওয়ার্ক নো পে” এর ভিত্তিতে। এছাড়া তার বেশ কিছু স্পেসিফিক অভিযোগ থাকার কারণে বা কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার কারণে বরখাস্ত করা হয়। এরপর হাইকোর্টের একটি রায়ের কারণে তাকে পুনরায় যোগদান করানো হয়। কিন্তু এরপরও তিনি আড়াই মাস অনুপস্থিত থাকার কারণটি আমরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় প্রেরণ করেছি সেখানে যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে সে হিসেবে তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।