বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া মিরপুর ১০ মেট্রোরেল স্টেশন চালু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সকালে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান আনুষ্ঠানিকভাবে স্টেশন পুনরায় চালু করার কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
এ সময় উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানান, এটির সংস্কারে সময় লেগেছে ২ মাস ১৭ দিন। খরচ হয়েছে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। যেহেতু অন্যান্য স্টেশনগুলো থেকে অনেক যন্ত্রাংশ এনে এখানে সংযোজন করা হয়েছে, তাই সেসব যন্ত্রাংশ আমদানিসহ আমাদের দুই স্টেশনে মোট খরচ হবে ১৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। সেখানে আরও কিছু বেশি যন্ত্রাংশও থাকবে। এছাড়া গত ২০ সেপ্টেম্বর ২২ লাখ টাকার প্রাথমিক ব্যয়ে কাজিপাড়া স্টেশনটি চালু করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৮ জুলাই মিরপুর-১০ নম্বর মেট্রো স্টেশনের নিচে পুলিশ বক্সে ভাঙচুর করে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। ফলে সেদিন বিকেলে অনির্দিষ্টকালের জন্য মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। এর পরদিন মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার পর ক্ষয়-ক্ষতি নিরূপণে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তৎকালীন কর্তৃপক্ষ।
২৭ জুলাই সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশন এক বছরেও যন্ত্রপাতি এনে সচল করা সম্ভব হবে না। মেরামতে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকার মতো খরচ হবে।’
তবে গত ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর দৃশ্যপট পাল্টে যায়। ৯ সেপ্টেম্বর ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিকের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। এ পদে নিয়োগ পান প্রতিষ্ঠানটির অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রউফ। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর ডিএমটিসিএলের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই দুটি স্টেশন মেরামতে এতো বিপুল অর্থের প্রয়োজন পড়বে না। পরে গত ২০ সেপ্টেম্বর ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে মেট্রোরেলের কাজীপাড়া স্টেশন চালু হয়। ক্ষতিগ্রস্ত মিরপুর-১০ মেট্রোরেল স্টেশনও দ্রুত চালু করা হবে বলে জানায় সংস্থাটি।
ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলছেন, কোনো সরঞ্জাম আমদানি না করে দেশীয় সম্পদের ব্যবহার করেই স্টেশন সচল করা হয়েছে। এ ছাড়া যাত্রীচাপ তুলনামূলক কম থাকা তিনটি স্টেশন থেকে কিছু যন্ত্রাংশ খুলে লাগানো হয়েছে মিরপুর ১০ স্টেশনে। বাকি যন্ত্রাংশ আমদানি করতে হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ সম্পন্নে মাস তিনেক সময় লাগবে।