কবি সংঘের শোক প্রকাশ
‘শঙ্খনদীর নীলপদ্ম’র কবি মার্জেনা চৌধুরী আর নেই। তিনি ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকেলে রাজধানী ঢাকার বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন (ইন্নালিল্লাহি…..রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৪৯ বছর। তিনি স্বামী, ২ মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মার্জেনা শেরপুরের নকলা উপজেলার মধ্যনকলা (ডাকাতিয়াকান্দা) গ্রামের মৃত হুরমুজ আলীর ৮ সন্তানের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ সন্তান ছিলেন। তিনি কবি সংঘের প্রয়াত প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তালাত মাহমুদের শ্যালিকা ছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে নকলার গ্রামের বাড়িতে নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

জানা যায়, মার্জেনা চৌধুরী নকলা উপজেলার নিজ বাড়ির অদূরে ডাকাতিয়াকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে নকলা পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে (পূর্বনাম নকলা গার্লস স্কুল) এ ভর্তি হন। সেখান থেকে এসএসসি পাসের পর নকলা হাজী জালমাহমুদ কলেজ (বর্তমানে সরকারি) থেকে এইচএসসি ও স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। শিক্ষার্থী থাকা অবস্থাতেই তিনি লেখালেখি শুরু করেন। তৎকালীন জনপ্রিয় পত্রিকা ‘সাপ্তাহিক শেরপুর’ ও ‘সাপ্তাহিক মদিনা’ পত্রিকায় তার অসংখ্য লেখা প্রকাশ হয়েছে। তার প্রথম কবিতা ‘একুশ আমার’ যা নব্বই দশকের সব শ্রেণির পাঠকের মনে স্থান করে নিয়েছিল। এরপর তার লেখাগুলোকে বই আকারে প্রকাশের লক্ষ্যে শুরু করেন কবিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখি। তার লেখা গ্রন্থের মধ্যে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস প্রাচীন ও মধ্যযুগ, কবি কায়কোবাদ, শহীদের কারবালা (কাব্যগ্রন্থ), কয়েকটি তারা (কাব্যগ্রন্থ) এসব ছিল উল্লেখযোগ্য। শৈশবকালের জীবন কাটানো নিজ গ্রামের বৈচিত্রকে কেন্দ্র করে লেখা তার সর্বশেষ কাব্যগ্রন্থ ‘শঙ্খ নদীর নীল পদ্ম’।
১৯৯৫ সালের ১২ জানুয়ারি ঢাকার ধানমন্ডি এলাকাস্থ এক সম্ভান্ত চৌধুরী পরিবারের সন্তান বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)-এর ইংরেজী খবর পাঠক মো. শামস চৌধুরী সাদী-এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন।

এদিকে বিশিষ্ট কবি মার্জেনা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন কবি সংঘ বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধার ও সাধারণ সম্পাদক ড. আবদুল আলীম তালুকদার। তারা তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করে বলেন, কবি মার্জেনা চৌধুরী ছিলেন প্রেম, প্রকৃতি ও নিসর্গের কবি। তার মৃত্যুতে সাহিত্যাঙ্গন একজন অন্যতম কবিকে হারালো। এছাড়া জেলা গাংচিল সাহিত্য সাংস্কৃতিক পরিষদের সভাপতি আব্দুর রফিক মজিদ ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয় কবি ও লেখকগণও শোক প্রকাশ করেছেন।
