শেরপুরে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, ছাত্রলীগ ও পুলিশের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ১৭ জুলাই বুধবার দুপুর তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত শহরের নিউমার্কেট মোড়, থানা মোড় ও চকবাজারে ওইসব সংঘর্ষ ঘটে। ওইসব ঘটনায় পুলিশ, সাংবাদিক ও কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন পুলিশ সদস্য, দৈনিক গণমুক্তির জেলা প্রতিনিধি জাহিদ হাসান খোকন, ছাত্রলীগ নেতা তাশদীদুর রহমান, মাসুদ রানা ও জসিম, শিক্ষার্থী জান্নাতুল মিম, সুজন, রিয়া, তালহাজ, শরিফসহ বেশ কয়েকজন কোটাবিরোধী শিক্ষার্থী।

এদিকে ঘটনার বিষয়ে শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আকরামুল হোসেন পিপিএম জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আন্দোলনকারীদের হামলায় আমাদের কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজনের অবস্থা খুবই গুরুতর। ওই ঘটনায় থানায় নিয়মিত মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
জানা যায়, কোটাবিরোধী সাধারণ শিক্ষার্থীরা দুপুর তিনটায় শেরপুর সরকারি কলেজে অবস্থান নেয়। সেখান থেকে মিছিল শুরু করে শহরের বিভিন্ন স্থানে প্রদক্ষিণের সময় ছাত্রলীগের বাঁধার মুখে পড়ে। পরে কোটাবিরোধীরা শহরের থানামোড়ে, ছাত্রলীগ নিউমার্কেট মোড়ে এবং পুলিশ তাদের মাঝামাঝি অবস্থান নেয়। এসময় আকস্মিক কোটাবিরোধী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এসময় ইট পাটকেল নিক্ষেপকালে এক সাংবাদিক, কয়েকজন পুলিশসহ দুই গ্রুপের অন্তত ১৫ জন আহত হয়। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে শহরের সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়।

পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল ছুড়ে। এতে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও একটু পর ফের কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা থানামোড়ে অবস্থান নেয়। সেখানে ডিবি পুলিশের ব্যবহৃত তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে এবং রাস্তায় আগুন দেয় শিক্ষার্থীরা। পরে ফের শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে পুলিশ। ওইসময় দুই পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়। এভাবে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত হলেও শহরজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) সার্কেল মো. সাইদুর রহমান জানান, বর্তমানে শহরের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আন্দোলনকারীদের হামলায় আমাদের কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
