ads

শনিবার , ৪ মে ২০২৪ | ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

‘কষ্টের ধান আত্তির পেটে যায়, বাধ্য হইয়াই আধাপাহা ধান কাটি’

অভিজিৎ সাহা, নালিতাবাড়ী
মে ৪, ২০২৪ ২:২৩ পূর্বাহ্ণ

‘এক বছরের পুলাডারে রাইখা স্বামী মইরা গেছে প্রায় সতেরো বছর আগে। স্বামীর রাইখা যাওয়া জমিতে আবাদ কইরাই সংসার চালাই, পুলাডারেও পড়াইতাছি। পুলা এইবার ইন্টার পরীক্ষা দিবো। কিন্তু আত্তির (হাতির) জ্বালায় তো ধান না পাকতেই কাইটা আনা লাগতাছে। কষ্টের এই ধান আত্তির পেটে যায়। তাই বাধ্য হইয়াই দুইডা কামলা লইয়া আমরা মা-পুলা আধাপাহা ধানই কাটতাছি।’ আক্ষেপ করে কথা গুলো বলছিলেন শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার ভারত সীমান্তঘেঁষা নাকুগাঁও গ্রামের কৃষাণী জাহানারা বেগম (৪৮)।

Shamol Bangla Ads

এই আক্ষেপ শুধু জাহানারার একার নয়। বন্যহাতির আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষায় আধা পাকা ধান কাটতে বাধ্য হচ্ছেন উপজেলার সীমান্তবতী নাকুগাঁও, পানিহাটা, বুরুঙ্গা, কালাপানি এলাকাসহ সীমান্তবর্তী এলাকার দুই শতাধিক কৃষক। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে হাতির দলকে প্রতিরোধ করতে তাঁরা ফসল রক্ষায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।

বন বিভাগ, কয়েকজন কৃষক-কৃষানি ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার নয়াবিল ইউনিয়নে সীমান্তবর্তী নাকুগাঁও, বুরুঙ্গা, কালাপানি ও পানিহাটা গ্রামের ভারতের সীমান্ত ঘেঁষা ২৫০ একর জমিতে দুই শতাধিক কৃষক বোরো ধান আবাদ করেছেন। ওই এলাকায় ধান পাকতে আরও এক থেকে দুই সপ্তাহ সময় লাগবে। কিন্তু বাতকুচি, মৌচাক, চৌকিদারটিলা, ডালুকোনা, নাকুগাঁও ও পানিহাটা সীমান্তবতী পাহাড়ি জঙ্গলে দুই সপ্তাহ ধরে শতাধিক বন্য হাতির দল তিনটি ভাগে বিভক্ত হয়ে অবস্থান করছে।

Shamol Bangla Ads

গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার রাতে পাহাড় থেকে নাকুগাঁও, বুরুঙ্গা, কালাপানি এলাকায় হাতির পাল ধানখেতে নেমে আসে। এসময় এলাকাবাসী মশাল জ্বালিয়ে ঢাকঢোল পিটিয়ে হাতির দলকে প্রতিরোধ করেন। পরে হাতির পালটি আবার মৌচাক ও চৌকিদার টিলার জঙ্গলে চলে যায়।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফসল রক্ষায় স্থানীয় কৃষক-কৃষানীরা নাকুগাঁও, বুরুঙ্গা, কালাপানি, বাতকুচি, ও পানিহাটা এলাকায় তাঁদের জমি থেকে পরিবারের লোকজন ও শ্রমিক দিয়ে আধা পাকা ধান কেটে নিয়ে আসছেন।

বৃহস্পতিবার বিকেলে নাকুগাঁও, বুরুঙ্গা, কালাপানি, বাতকুচি ও পানিহাটা সীমান্তবতী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, হাতির ভয়ে স্থানীয় কৃষক-কৃষানি তাদের খেতের আধা-পাকা বোরো ধান কেটে নিয়ে আসছেন। কেউ মাথায় করে সেই ধান খেতের পাশে রাস্তায় আবার কেও সীমান্ত সড়কে নিয়ে ফেলছেন ধান। আবার কেউ সেই ধান সড়কেই মেশিনের মাধ্যমে মাড়াই করে ধান স্তুপ করে রাখছেন।

বুরুঙ্গা গ্রামের কৃষক মুক্তার আলী বলেন, ‘আমি ৬০ শতক জমিতে বোরো ধান করেছি। ফসল পাকতে ও কাটতে আরও এক সপ্তাহ সময় দরকার। কিন্তু হাতির আক্রমণের ভয়ে নিরুপায় হয়ে আধা পাকা ফসল কাটতে বাধ্য হচ্ছি। এই ফসল পাহারা দিতে গিয়া গত এক মাসে দুই কৃষকের মৃত্যু হইছে। ফসল নিয়ে এলাকার কৃষকরা দুশ্চিন্তায় রয়েছে।’

কালাপানি গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, কালাপানি পাহাড়ের ঢালে ৭০ শতক জমিতে ধান চাষ করছি। ফলনও ভালো অইছে, কিন্তু একসপ্তাহ ধরে প্রতি রাতে আত্তি অত্যাচার করে। সবাই রাত জাইগা খেত পাহারা দেই। তাই নিরুপায় অইয়া আধা পাহা ধান কাইটা ফালাইছি। দুশ্চিন্তাটা কিছুডা কমছে।

ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলা ইকোপার্কের রেঞ্জ কমকতা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, হাতির দলটি তিনটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পাহাড়ি জঙ্গলে অবস্থান করছে। প্রতি রাতে ধান খেতে হাতির দল লোকালয়ে হানা দিচ্ছে। তাই ফসল রক্ষায় স্থানীয় অনেক কৃষক তাঁদের খেত থেকে আধা পাকা ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। হাতি প্রতিরোধে এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সদস্যরা কাজ করছেন।এখন পযন্ত হআতি যাদের ফসল নষ্ট করেছে তাদেরকে বন বিভাগের কাছে ক্ষতিপূরণ পেতে আবেদন করতে বলা হয়েছে।

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

Shamol Bangla Ads
error: কপি হবে না!