জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ এখনো কাটেনি। এরই মধ্যে তোড়জোর শুরু হয়েছে আসন্ন শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের। তফসিল ঘোষণা না হলেও আগাম মাঠে গণসংযোগ, সভা সমাবেশ করছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।

এবার দলীয় প্রতীক থাকবে না- এমন সিদ্ধান্তে বাড়ছে প্রার্থীদের সংখ্যা। কেউবা প্রার্থিতা ঘোষণা দিয়েই নেমেছেন নির্বাচনী মাঠে। কেউ আবার অংক কষছেন অন্যভাবে। আঞ্চলিকতার সমর্থন পেতে ইউনিয়ন থেকে একক প্রার্থী হতে দফায় দফায় করছেন সভা সমাবেশ। নিজের সমর্থন বাড়াতে যাচ্ছেন ভোটারের দ্বারে দ্বারে। জানান দিচ্ছেন নিজের পরিচিতি আর অবস্থান। কেউ আবার পোস্টার আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেই সীমাবদ্ধ। মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে চেয়ারম্যান পদে ডজনখানেক প্রার্থীর নাম। তবে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর দু’জন প্রার্থীর নাম শোনা গেলেও নেই মাঠে তাদের কোনো তৎপরতা। সম্প্রতি উপজেলার সম্ভাব্য প্রার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজনের সাথে কথা বলে ওঠে আসে এমন তথ্য।
এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেরই রয়েছেন ১১ জন। তারা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান সুজা, সহ-সভাপতি লাবিনা আক্তার লিমা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছালাহ উদ্দিন ছালেম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. তারিকুল ইসলাম ভাসানী, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. মেরাজ উদ্দিন চৌধুরী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান রাজা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক নেতা খন্দকার মো. ফারুক আহমেদ, উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক মো. জাহিদুল ইসলাম জুয়েল, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জুয়েল আকন্দ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব মো. আমিরুল ইসলাম। তাদের মধ্যে গত নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. জাহিদুল ইসলাম জুয়েল প্রথম থেকেই রয়েছেন নির্বাচনের মাঠে। নতুন করে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন মো. মাহবুবুর রহমান সুজা, ছালাহ উদ্দিন ছালেম, অ্যাডভোকেট মো. তারিকুল ইসলাম ভাসানীসহ অন্যরা।

অন্যদিকে মাঠ পর্যায়ে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের ছড়াছড়ি অবস্থায় সরাসরি তৎপর না থাকলেও নানা সমীকরণে শেষটায় প্রার্থী হতে পারেন গত নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জেলা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর ও শ্রীবরদী আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুজ্জামান বাদল, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন দুলাল এবং শ্রীবরদী সদর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. আবু তাহের। তবে তারা জানান, দলের সীদ্ধান্ত পেলে তারা প্রার্থী হবেন।
এদিকে ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা আরও দীর্ঘ। তাদের মধ্যে কেউ শুভেচ্ছা পোস্টার বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জানান দিচ্ছেন প্রার্থিতা।
ভোটের মাঠে উপজেলা চেয়ারম্যান পদ নিয়ে কথা হয় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সমর্থকসহ অনেকের সাথে। তারা জানান, দলীয় প্রতীক না থাকলেও দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সমর্থন পেতে প্রার্থীরা লবিং করছেন। এতে গণসংযোগ ও সভা সমাবেশে সিনিয়র নেতাকর্মীদের উপস্থিতি নিয়েও প্রার্থীদের মধ্যে চলছে টানা পোড়েন। ফলে কতিপয় প্রার্থী ভুগছেন সীদ্ধান্তহীনতায়। অনেকে বলছেন, এবারের নির্বাচনে অনেকটাই প্রভাব ফেলতে পারে ভৌগলিক অবস্থান। এতে উঠতে পারে আঞ্চলিকতার টান। কেউ আবার বলছেন, এখন যে বেশি মাঠ দখল করতে পারবে তার পক্ষে উঠতে পারে গণজোয়ার। এসব তর্ক-বিতর্ক আর আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠছে চায়ের স্টলসহ আড্ডার স্থানগুলোতে। বইছে নির্বাচনী হাওয়া।
