এবার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন শেরপুরের ৩ কৃতি সন্তান মো. শহিদুল্লাহ বিপিএম, ফাতিহা ইয়াসমিন ডলি ও মোহাম্মদ খোরশেদ আলম পিপিএম-সেবা। ৬ নভেম্বর সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মো. মাহাবুবর রহমান শেখ সাক্ষরিত পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি জানানো হয়। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকে তাদের স্ব-স্ব এলাকাসহ খোদ শেরপুর জেলার বিভিন্ন মহলে আনন্দ বইছে। বিভিন্ন মহল থেকে তাদের অভিননন্দন জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেওয়া হচ্ছে।

বর্তমানে মো. শহিদুল্লাহ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি), ফাতিহা ইয়াসমিন ডলি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ পুলিশ সুপার হিসেবে ও মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সাইপ্রাসে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে পুলিশ সুপার পদমর্যাদায় কর্মরত রয়েছেন।
শ্যামলবাংলা২৪ডটকমের প্রাপ্ত তথ্যমতে, শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলায় জন্মগ্রহণকারী ২৪তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের মেধাবী কর্মকর্তা মো. শহিদুল্লাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোক প্রশাসন বিভাগে পড়াশোনা করেছেন। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম (সিটি) ইনভেস্টিগেশন বিভাগের ডিসি, ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগ এবং উত্তরা বিভাগে ডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া রাজশাহী জেলায় অত্যন্ত দক্ষতা ও সাফল্যের সঙ্গে পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার আগে তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি ডিবি (দক্ষিণ), এডিশনাল এসপি হিসেবে চট্টগ্রাম ও বান্দরবান এবং এসি ও এডিসি হিসেবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। চাকরি জীবনে ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)-সেবা’ ও ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)-সেবা’ পেয়েছেন।

আর ফাতিহা ইয়াসমিন ডলি শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার কাকরকান্দি ইউনিয়নের বরুয়াজানি গ্রামের ঐতিহ্যবাহী সম্ভ্রান্ত পরিবারের সদস্য এবং এলাকার ধনাঢ্য ও সমাজসেবী আলহাজ্ব মরহুম আবুল মুনসুর তালুকদার ও আলহাজ্ব ছাহেরা খাতুনের ৩ ছেলে ও ৪ মেয়ের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ। বিশিষ্ট চলচ্চিত্র অভিনেতা ও কাকরকান্দি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল্লাহ তালুকদার মুকুল ছিলেন তার মেজোভাই। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা শেষ করে ২৪তম বিসিএস-এ পুলিশে যোগ দেন। তার স্বামী রফিকুল ইসলাম একজন প্রকৗশলী। পারিবারিক জীবনে তাদের ২ ছেলে সন্তান রয়েছে। ডলি ২০১৭ সালের ১৪ ডিসেম্বর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থেকে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সুপার হন। পরে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার পদ থেকে ঝালকাঠীর পুলিশ সুপার হিসেবে যোগ দেন। তিনি বাংলাদেশ উইমেন পুলিশ অ্যাওয়ার্ড ২০১৮-তে জাতিসংঘ মিশনে বিশেষ অবদান রাখায় ‘পিস কিপিং মিশন’ ক্যাটাগরিতে অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন।
এছাড়া নালিতাবাড়ী উপজেলার বাঘবেড় ইউনিয়নের দক্ষিণ রাণীগাঁও এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসমত আলী ও খোদেজা বেগম দম্পতির ৪ সন্তানের মধ্যে মোহাম্মদ খোরশেদ আলম জ্যেষ্ঠ। তিনি ১৯৯২ সালে নালিতাবাড়ীর তারাগহ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ১৯৯৪ সালে জামালপুরের আশেক মাহমুদ কলেজ থেকে এইচএসসি, ১৯৯৮ সালে ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজ থেকে স্নাতক ও ২০০১ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে মাস্টার্স পাস করেন। তিনি ২৪তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে যোগদান করেন। প্রথমে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে রাজশাহী র্যাবে, পরে একই পদে নওগাঁ জেলা পুলিশে কর্মরত ছিলেন। এরপর তিনি পুলিশ হেডকোয়ার্টারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর ঢাকা উত্তরের পুলিশ সুপার হিসেবে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন এবং সেখান থেকেই জাতিসংঘের মিশনে যান।
পদোন্নতি পাওয়ার পর শ্যামলবাংলা২৪ডটমকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তারা সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। পাশাপাশি পদোন্নতি প্রক্রিয়ায় সার্বিকভাবে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
