রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং-উনের মধ্যকার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সামরিক অস্ত্র চুক্তির সম্ভাবনার পাশাপাশি উত্তর কোরিয়ার স্যাটেলাইট কর্মসূচিতে সহযোগিতা নিয়ে দুই নেতার আলোচনায়।

বিবিসির প্রতিবেদনে এসেছে, গত বুধবার রুশ মহাকাশযান উৎক্ষেপণ কেন্দ্র ভস্তোচনি কসমোড্রোমে এই দুই বৈঠক হয় পুতিন ও কিমের। এর আগে ট্রেনে করে সেখানে যান কিম জং-উন। বৈঠক শেষে পুতিন বলেন, সামরিক সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে তাদের। পিয়ংইয়ংয়ের স্যাটেলাইট কর্মসূচিতে রাশিয়ার সহায়তার ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি।
দুই দিনের ট্রেন ভ্রমণ শেষে রাশিয়ার পূর্ব প্রান্তে গিয়ে পৌঁছায় কিম জং-উনকে বহনকারী বিশেষ ট্রেন। ভ্লাদিমির পুতিন তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। তারপর ভস্তোচনি কসমোড্রোম মহাকাশযান উৎক্ষেপণ কেন্দ্রটি ঘুরে দেখান কিমকে। রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার স্যাটেলাইট কর্মসূচিতে রাশিয়া সহায়তা করবে কিনা জানতে চাইলে পুতিন বলেন, ‘এ কারণেই আমরা ভস্তোচনি কসমোড্রোমে এসেছি।’

রাশিয়া সফরে কিম বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা পরিদর্শন করেছেন। সে সঙ্গে রাশিয়ান একাডেমি অব সায়েন্স, ভ্লাদিভস্তকে ফার ইস্টার্ন ফেডারেল ইউনিভার্সিটি এবং সামুদ্রিক জীববিদ্যার একটি ল্যাবরেটরিও পরিদর্শন করেছেন কিম জং-উন।
ভ্লাদিভস্তক পরিদর্শন প্রসঙ্গে রুশ সংবাদমাধ্যমের কাছে পুতিন বলেন, ‘এখানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কিছু সামরিক সরঞ্জাম আছে। এগুলো বেশি কিছু নয়। রুশ প্যাসিফিক নৌবহরের সক্ষমতারই সামান্য প্রদর্শনী এটি।’ অস্ত্র চুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে কিনা বৈঠকের আগে তা নিয়ে ছিল জল্পনাকল্পনা। তখন পুতিন বলেছিলেন, সব বিষয়েই আলোচনা হবে। আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধ।
কিম জং-উন বলেন, পশ্চিমা আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষায় পবিত্র লড়াইয়ে নেমেছে রাশিয়া। প্রেসিডেন্ট পুতিন ও রুশ নেতৃত্বের প্রতি আমরা সব সময় সমর্থন দিয়ে যাবো। সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমরা একসঙ্গে লড়ব।
রাশিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধিসহ সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ও গুরুত্ব পায় পুতিন ও কিমের আলোচনায়। সেখানে কিমকে ‘বিশ্বস্ত বন্ধু’ হিসেবে আখ্যা দেন পুতিন। উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচিতে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও দেশটির সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা জোরদারের কথা ভাবছে রাশিয়া।
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, উত্তর কোরিয়া থেকে রাশিয়ায় অস্ত্র হস্তান্তর করা হবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গৃহিত প্রস্তাবের লঙ্ঘন। তবে পুতিন বলেছেন, আইনি উপায়ে সম্ভব বিষয়গুলো নিয়েই আলোচনা হয়েছে।
এর আগে, রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়া একটি সম্ভাব্য অস্ত্র চুক্তির দিকে সক্রিয়ভাবে অগ্রসর হচ্ছে বলে সতর্ক করেছিল মার্কিন কর্মকর্তারা। তাদের সতর্কবার্তায় বলা হয়, পিয়ংইয়ং মস্কোর কাছে অস্ত্র সরবরাহ করতে পারে যা ব্যবহৃত হবে ইউক্রেন যুদ্ধে।